পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাভিক কলির মেয়ে $రీ 9 T श्नश्नौ দরজার আড়ালে দাড়াইয়া বাপের বাড়ীর পাঠানে জিনিষপত্রের সদগতি দেখিতে লাগিল, কোনও মন্তব্য করিল ' না। পুরানে চাকর শুাম আসিয়াছিল, তাহার সঙ্গে খানিক কথাবাৰ্ত্ত কহিয়। রান্নাঘরে নিজের কাজে চলিয়া গেল । সুরবালা কুটুম-বাড়ীর লোককে নিয়মমত জলযোগ করাইয়া ও বকশিশ দিয়া বিদায় দিলেন, বলিয়া দিলেন, ভাল দিন দেখিয়া স্বনয়নীকে তিনি যথাসম্ভব শীঘ্ৰ পঠাইয়া দিবেন, বেয়ান যেন লোক পাঠান । মায়ের ব্যবহারে হেমেন্দ্র একটু লজ্জা অমুভব করিল, কিন্তু মুখে কিছু বলিল না, তাহা হইলে ষে স্ত্রীর কাছে থাটো হইতে হয়। মনে মনে স্থির করিল, ঐ রকম ভাল শাড়ী একথান সে কোনও মতে মুনমুনীকে কিনিয়া দিবে—আজ ন পারুক দুদিন বাদে । স্ননয়নীর মা আর তিন-চার দিনের মধ্যেই মেয়েকে লইয়া যাইবার জন্ত লোক পাঠাইলেন । তত্ত্ব আসিবার পর হইতেই স্থনয়নী জিনিষপত্র গুছাইতে আরম্ভ করিয়াছিল। যে-fদন লোক আসিল সেই দিন বিকালের গাড়ীতেই তাহারী বাহির হইয়া পড়িল। যাইবার আগে স্বামীকে প্রণাম করিয়া বলিল, “আসি তবে ।” হেমেন্দ্র বলিল, “ভয়ানক ফুৰ্ত্তি হচ্ছে, না ?” মুনয়নী বলিল, “হবারই কথা, চিরকাল মা-বাপের কোলে ব'সে আছে, জান না ত বছরের পর বছর আত্মীয়স্বজন সবাইকে ছেড়ে থাকতে মামুষের মন কেমন করে ” হেমেন্দ্র বলিল, “এখানকার মাতুযগুলো তাহলে তোমার আত্মীয় বা স্বজন কিছুই নয় ?” স্বনয়নী বলিল, “যাবার মুখে ঝগড়া করে কি হবে ? স্বনয়নী গিয়াই হেমেন্দ্রকে চিঠি লিখিয়াছিল, সে উত্তর দিয়াছে বটে, তবে অতি সংক্ষেপে এবং অনেক দেরি করিয়া। স্থনয়নী অতঃপর আর স্বামীর কাছে চিঠি লেখে নাই, স্বরবালাকে একখানা লিথিয়াছে ও পুটুরাণীকে একখানা । তাহাতে খবর দিয়াছে যে তাহার বাবা খানিকটা ভালই আছেন, আরও আট-দশ দিনে সম্পূর্ণ ভাল হইয় উঠিবার সম্ভাবনা আছে। *. স্বরবালা পনর দিন যাইতে-ন-যাইতেই বধূকে ফিরিবার জন্ম ভাড়া দিতে আরম্ভ করিলেন । কিন্তু আজ দিন ভাল নয়, কাল সঙ্গে যাইরার উপযুক্ত লোক পাওয়া যাইতেছে ন', ইত্যাদি নানা ওজরে সেই কুড়ি-একুশ দিনই হইয়া গেল । তাহার পর মুনয়নী ফিরিয়া আসিল । হেমেন্দ্র বলিল, “রংটি ত গায়ের বেশ পাকা করে এসেছ দেখি ।” স্বনয়নী বলিল, “তা হোক, এখানকার নারকেলছোবড়ার ঘষড়ানিতে দু-দিনেই ঠিক হয়ে যাবে।” হেমেন্দ্র বলিল, “ইস্, বাক্যবাগীশ একেবারে । . ভাগ্যে বাপ মা তোমার নাম স্বভাষিণী রাখেনু নি।” যাহা হউক, অনেক দিন পরে আবার দেখা, ঝগড়াঝাটি, তর্কাতকি করিতে কাহারও ইচ্ছা ছিল না, কথাটা ঐখানেই থামিয়া গেল ; - দিন দুই কাটিয়া গেল। তৃতীয় দিন রাত্রে কাজকৰ্ম্ম সারিয়া শুইতে আসিয়া মুনমুনী বলিল, “দেখ, তোমার কাছে আমার একটা কথা বলবার আছে । হাজার হোক তুমি স্বামী, তোমার কাছে লুকানো ঠিক নয়।” উপক্রমণিকা শুনিয়াই হেমেন্দ্রের চোখ প্রায় কপালে ওসব মীমাংসার দিন ত পড়েই আছে ? ঘাই, আবার : উঠিবার জো হইল। বলিল, “কোথায় আবার কি কাণ্ড ট্রেনের দেরি হয়ে যাবে।" সে বাহির হইয়া চলিয়া গেল । স্বরবালা বলিয়া দিয়াছিলেন, বেয়ান মেয়েকে যেন পনর- . কুড়ি দিনের বেশী না রাখেন। এ-ধারেও তিনি একলা মাহব, তাহার কাজের অস্তুবিধা হয়। পূর্ণিমাও বাপের বাড়ী আসিয়াছে, কাজেই কাজও বাড়িয়াছে। অগত্য মরবালাকে একজন ঠিক রাধুনীও ব্লখিতে হইয়াছে। মিছামিছি টাকা খরচ তাহার ভাল লাগে না, নিতান্ত দায়ে পড়িয়াই করিতে হইল। বাধিয়েছ, তোমার জালায় ত আর পারি না ।” সুনয়নী বলিল, “মা ষে তত্ত্ব করেছিলেন তার টাকা কিন্তু আমি দিয়েছিলাম।” • হেমেন্দ্ৰ ভড়াক করিয়া থাটের উপর উঠিয়া বসিল । বলিল, “কোথায় পেলে তুমি টাকা ।” - স্বনয়নী বলিল, “মামার কড়িহারটা ত পরতাম না, সেইটা বেচে দিয়েছি।" রাগে তখন হেমের্মের দম আটকাইয়া আসিতেছে।