পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কীৰ্ত্তিক চীন ও জণপণন উষ্ঠত হইয়া হঠাৎ সরিয়া যাওয়ায় জাপান বুঝিতে পারে রুশদের মধ্যে লড়িবার উদ্যম বা প্রবৃত্তি নাই । মৃতরাং এই ঘটনার কয়েক দিন পরে পিইপিং ( পুরনো পিকিং ) শহরের মার্কে পোলো ব্রিজের নিকট কুচকাওয়াজে রত জাপানী সেনাদলের সঙ্গে ২৯-সংখ্যক চীনা সেনাবাহিনীর যখন সংঘর্ষ হয় তখন জাপান দাবী করিয়৷ বসে যে, চীনা সৈন্যদলকে সরাইয়া দেওয়া হউক এবং এই ব্যাপারের জন্য চীন-রাষ্ট্র জবাবদিহি করুক । বাকবিতণ্ড ক্রমে বিরোধে পরিণত হইয়া এখন রীতিমত যুদ্ধে দাড়াইয়াছে । বলা বাহুল্য, জাতিসঙ্ঘ বা বৈদেশিক শক্তিপুঞ্জ বাক্যজাল বিস্তার ভিন্ন অন্য কোন প্রতিবিধান করিতে অসমর্থ। চীন-রাষ্ট্রে সৈন্ত আছে এবং বহুদিনের অপমানে ও অত্যাচারে পীড়িত চীনবাসীর যুদ্ধের উত্তেজনাও আছে, কিন্তু সেনানায়কদিগের মধ্যে একতা নাই, সৈন্যদের যথেষ্ট শিক্ষা বা যুদ্ধোপকরণ নাই, সুতরাং এই যুদ্ধের ফলাফল স্বনিশ্চিত । বিজয়লক্ষ্মী চিরদিনই ষেদিকে অস্ত্রসজ্জা অধিক সেইদিকেই প্রসন্ন মুখ দেখান, ধৰ্ম্মধৰ্ম্মের কোনও প্রশ্ন সেখানে নাই ! এখন চীনের উপায় কি ? বহুদিন যাবৎ চীনের শ্রেষ্ঠ মনধিগণ এক কথায় বলিতেছেন যে চীনের এখন জীবন-মরণ পণ কবিয়া যুদ্ধ করা প্রয়োজন । কেননা, সাম্রাজ্যবাদের পথে ক্ষণিক বাধা দেওয়ায় কোনই ফল হয় না । কিন্তু এরূপ iদ্ধ করিতে হইলে প্রথমে দেশে গৃহবিবাদ শাস্ত করা প্রয়োজন এবং দেশে ক্ষাত্রধৰ্ম্মের পুনরুত্থান হওয়া দরকার । ীৈন দেশে এখন বলশেভিক মত, রাষ্ট্রবাদ, মাৎস্যন্তায়ী "মরপতিদের শাসন এ-সব ত চলিয়াছেই । আবার কিছু দিন যাবৎ এক দল চীন-সনাতনী “মৃতন জীবন" নামে প্রাচীন কালের যত অন্ধ ধৰ্ম্মমত প্রচারে ব্যস্ত হইয়াছেন। ন্তিষ যখন যুদ্ধবিগ্রহে বা জীবন-সংগ্রামে ভয় পায়, খন তাহার মন কাপুরুষের মত বলে “এ-সমস্ত পূরণ *র, এ-কার্ধ্য সমাধান করা, আমার ক্ষমতার অতীত”, খনই তাহার মনের মধ্যে দৈবশক্তির প্রতিও প্রাচীন কালের ত বুজরুকির প্রতি শ্রদ্ধার সঞ্চার হয়। তখনই সে আপ্তবাক্য, পূজাপাঠ, তুকতাক ইত্যাদিতে মন দিয়া শক্র পিইপিঙে চীনা সৈন্ত পক্ষের জয়ের পথ পরিস্কার করে । চীন দেশের শিক্ষিত সম্প্রদায়ের একটি প্রধান অংশের মধ্যে এখন এই “ নুতন জীবনের নামে কনফুসিয়সেব ও লাওসের বাণীর প্রচার চলিয়াছে। ইহা সব দিক দিয়াই ক্ষত্রমত ও পৌরুষবাদের প্রতিকুল, সুতরাং ইহাতে ধে দেশের সংগ্রাম-শক্তি ক্ষীণ হইয়া লোপ পাইবে ইহা নিশ্চয় । , শ্ৰীযুক্ত স্বঙ্গ চিং লিং ( স্থন য়াট সেন-পত্নী ) একটি মুচিস্তিত প্রবন্ধে সম্প্রতি বলিয়াছেন চীন দেশের এখন সৰ্ব্বাপেক্ষা দারুণ সমস্তা এই সকল মতবাদের খণ্ডন, ও বলশেভিক ও রাষ্ট্রবাদের বিবাদভঞ্জন । প্রথমটি না হইলে চীনদেশবাসী ক্রমেই অদৃষ্টবাদী হইয়া নিজাব হইয়া পড়িবে এবং দ্বিতীয়টি না হইলে যাহা কিছু পৌরুষের ভাব দেশে আছে তাহার শক্তি অস্তবিপ্লবেই ক্ষয় হইয়া যাইবে । তবে জাপান জানে যে এই দুই সমস্তাই তাহার সহায়, স্বতরাং ইহার সমাধান সে করিতে দিবে কি না সন্দেহ । চীনবাসীরা অনেক দেরিতে বুঝিয়াছে যে, যে-সকল প্রাচীন মতবাদ বা প্রাচীন ধৰ্ম্ম ও সামাজিক প্রথা বিদেশীয়েরা উচ্চকণ্ঠে প্রশংসা করে সে-সকলই বিদেশীয়দের অভীষ্ট-সিদ্ধির সহায়ক । এবং “সনাতন”-ধৰ্ম্মের নামে যাহারা দেশ ও সমাজুকে শাসন করিতে চায় তাহারাই বিদেশী শত্রুর প্রধান বন্ধু। ক, চ,