পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনুভূতি শ্ৰীবিভূতিভূষণ গুপ্ত মুবিমল লওনের কৃষিশিল্প-পরীক্ষায় স্বর্ণপদক পাইয়াছে । সরকারী অাপিসে ষে সে একটা বড় রকমের সুযোগ পাইবে এ বিষয় কাহারও দ্বিমত ছিল না। বন্ধুমহল একটা ভোজের আশায় উৎফুল্প হইয়া উঠিল। কিন্তু যাহাকে লইয়া এত আলোচনা, এত জল্পনা-কল্পনা, মতভেদ দেখা দিল তাঁহারই তরফ হইতে । সুযোগ তাহার অতি সহজেই মিলিল কিন্তু সেই হযোগ গ্রহণ করিবার অবসর স্থবিমলের श्झेल नl ! তাহার মতে, ধর্থন লাঙ্গল ধরিতে শিখিয়া আসিয়াছে তখন লাঙ্গলই সে ধরিবে । গ্রামে জমির তাহার অভাব নাই । তা ছাড়া বাপের আমলের জমার অঙ্কটাও তাহার নিতাস্ত भग्नः नव । বন্ধুমহল মুখে বাহূব দিল, অন্তরালে কাটিল টিপ্পনী— ‘গেয়ে ভূত কত আর হবে।' শ্বশুরের সহিত ছোটখাট রকমের একটি খণ্ডযুদ্ধ হইয় গেল। ‘এমন মোটা বুদ্ধি গেaোর জানলে কে যেত মেয়ে বিয়ে দিতে'—শ্বগুরের এ কটুক্তি সুবিমল গায়ে মাখিল না, বরং শাস্ত স্থির কণ্ঠে কহিল—আমি কালকেই আমার গ্রামের বাড়ীতে যেতে চাই ; আমার ইচ্ছে তপতীও আমার সঙ্গে যায়। - জলস্ত আগুনে ঘি পড়িল—তা যাবে বই কি. দয়া ক’রে শ্বশুরের মতামতটা ন চাইলেও পারতে ! এ-সব বুড়েহাবড়াদের মতামতের কোন মূল্য আছে নাকি তোমাদের কাছে ! স্ববিমল ব্যাপারটা ইহার অধিক গড়াইতে দেয় নাই, কিন্তু পর দিনই স্ত্রী সহ সে দেশে যাত্রা করিল। গ্রামখানি ছোটও নয় বড়ও নয়, কিন্তু খুব বর্ধিষ্ণু। সে-গ্রামে স্ববিমলদের অবস্থা ভালই। কাজেই শহরের মেয়ে তপতীকে বিশেষ কোন অসুবিধার মধ্যে পড়িতে হইল না। বরং সে যেন একটু অধিক মাত্রায় 5र्षण श्ड्रेष्ठ ऐंटैिग्नाटक । cशाषांक-अब्रिक्कमब्र श्राध्ण সংস্কার করিয়াছে, জুতা বাক্সবন্দী হইয়াছে, ঝকঝকে শাড়ীগুলি অদৃপ্ত হইয়া গিয়াছে। কুবিমল মুগ্ধ চোখে চাহিয়া দেখে, সাধারণ কালপেড়ে শাড়ী পরা তপতীর গৃহিণী-রূপ, অলক্তরঞ্জিত তার দ্বখানি পায়ের চঞ্চল ওঁঠাপড়া। কেমন সহজে সে গ্রাম্য মেয়েদের সহিত মিলিয়া গিয়াছে, যেন জন্মজয়ান্তর ধরিয়া তপতী ইহাদের সাহচৰ্য্য পাইয়া আসিতেছে। বাড়ীর আশেপাশের বনবাটালির ঝাড়, বেতের ঝোপ এবং জংলা গাছগুলি পরিষ্কার করাইয়া দিনকয়েকের মধ্যেই সুবিমল স্থানটিকে মনোরম করিয়া তুলিল । চমৎকার একটি কৃষিক্ষেত্র কৃষ্ট হইয়াছে—ইহার এক-এক অংশে এক-এক প্রকার চাষ স্বরু হইল। * স্ববিমল সামনে থাকিয়া মজুর খাটায় ; নিজ হাতে কোদালি চালায়, বীজ বোনে। মজুরদের উপদেশ দেয়,— হাতে ধরিয়া নূতন প্রণালীতে কাজ শিক্ষা দেয় । বৈকালে ক্লাস্ত দেহে গৃহে ফিরিতেই তপতী পাখা হাতে ছুটিয়া আসে-বসিবার চেয়ার জাগাইয়া দিয়া ক্ষিপ্ৰ হাতে পাখা চালায় । স্ববিমল পরিতৃপ্তির নিঃশ্বাস ফেলিয়া বলে,—ফ্যানের হাওয়ায় কি এত আনন্দ ছিল তপতী । তপতী উচ্ছ্বসিত বেগে হাসিয়া উঠিল । –এ হাসির কথা নয় তপতী, বিকেল বেলার এই বিশ্রামটুকু এই জন্যেই আমার কাছে এত লোভনীয় । কাজ আমার ধাপে ধাপে দ্রুত এগিয়ে চলে এই বিশ্রামমুহূৰ্ত্তগুলির কাছে পৌছে দেবার জন্তে । মুহূর্বের জন্ত থামিয়া স্থবিমল পুনরায় কহিল,—ভাগ্যিস দশচক্র ভূত বনে গৈছি, নইলে তোমার একটা দিক হয়ত আজও আমার কাছে ঢাকা থাকত ।