পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কচুরিপানার শিকড়ে কানকে আটকাইয় কইমাছ বুলিয়া আছে

এই সমস্ত ঘাসপাত জলের উপরে বেশ উচু ঠষ্টয়াই বাড়িয়া থাকে । এই জলজ উদ্ভিদগুলি নানা জাতীয় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কীট-পতঙ্গের আশ্রয়স্থল । জল ইষ্টতে দেড় ফুট দুই ফুট, এমন কি সময় সময় আরও বেশী উচুতে এই সমস্ত ঘাসের শীর্ষের উপর পোক-মাকড় আসিয়া বসিলে কইমাছ জলের নীচে হইতে দেখিতে পাইয়। ছুটিয়া কাছে মাসে এবং তীরন্দাজ মাছের মত চতুর্দিক ঘুরিয়া ফিরিয়া লক্ষ্য করিতে থাকে, ঠিক কোন দিক ইষ্টতে আক্রমণের স্ববিধ হইবে । মাছরাঙা পার্থীরা যেমন জলের মধ্যে কোন শিকার দেখিতে পাইলেষ্ট খুব উচুতে উড়িয়া গিয়া এক স্থানে অনেকক্ষণ স্থিরভাবে উড়িতে উড়িতে ঝুপ করিয়া হঠাৎ খাড়াভাবে শিকারের উপর পড়ে, কষ্টমাছের শিকার-কৌশলও কতকটা সেইরূপ । লেজ ও পা-খান অতি সুকৌশলে আস্তে আস্তে নাড়িয়া একই স্থানে স্থির ভাবে থাকিয়া তীক্ষ দৃষ্টিতে লক্ষ্য স্থির করিতে থাকে এবং হঠাৎ লম্ফ প্রদান করিয়া শিকার আক্রমণ করে। শিকার ছোট হইলে জলে ডুবিয়া তৎক্ষণাং গিলিয়া ফেলে নচেং মুখে কবিয়া কোন নির্জন স্থানে ছুটিয়া পলায়, কারণ অস্কান্ত স্বজাতীয়ের দেখিতে পাইলে তৎক্ষণাৎ দলে দলে ছুটিয়া আসিয় তাহার কষ্টলব্ধ শিকার কাড়িয়া খাইবে । তীরন্দাজ মাছের মতই ইতাদের জলের উপর শিকার ধরিবার অব্যথর্ণ সন্ধান পরিলক্ষিত হয় । সাধারণতঃ ছোট বড় অনেক জাতের মুছেই বড়শির আঘাতে একবার ঘায়েল হইয়া পলাইয়া গেলেও পরক্ষণেই আবার সেই ৰভৃশি গিলিয়াই ধরা পড়ে, ইহা হয়ত অনেকেই লক্ষ্য জলজ ঘাসের উপর মাছি বসিতে দেখিয় কর্তমাছ জলের নীচে হইতে লক্ষ্যস্থির করিতেছে করিয়াছেন । কিন্তু কৃত্রিম স্বচ্ছ জলাধারে বহুকাল কইমাছ প্রতিপালন করিয়া দেখিয়াছি কোন কারণে একবার ঘা থাইলে পুনরায় সহজে সেই কাজে অগ্রসর হয় না । ইহাদের স্মৃতিশক্তি অন্যান্য মাছ অপেক্ষ একটু প্রখর বলিয়াই মনে হয় । একটি দৃষ্টাস্ত হইতেই ইহাদের স্মৃতিশক্তির তীক্ষত উপলব্ধি হইবে । কতকগুলি মাছকে অনেক দিন অনাছারে রাখিয় একদিন একটি জীবস্তু বোলতা জলের মধ্যে ফেলিয়া দিলাম । বোলতার ডান ভিজিয়া যা ওয়াতে সে উড়িয়া পলাইতে পারিতেছিল না । ইতিমধ্যে চার-পাচটা কষ্টমাছ শিকার ধরিবার জন্য ছুটিয়৷ আসিল । একটা মাছ বোলতাটাকে পিঠের দিকে কামড়াইয়া ধরিয়া ছুটিয়া পলাইল, আর সকলেই ইহাকে পিছু তাড়া করিতে লাগিল । বোলতাটা মাছের মুখে একই ভাবে থাকিয়া ছটফট করিতেছিল এবং হুল ফুটাইবার ব্যথ* চেষ্টারও ত্রুটি ছিল না। অনেকক্ষণ ছুটাছুটির পর কষ্টমাছটা এক নিৰ্জ্জন কোণে গিয়া পোকাটাকে গিলিবার চেষ্টা করিতে লাগিল ; কিন্তু একবারে গিলিতে ন পারিয়া ঘুরাষ্টয়া ফিরাইয়া গিলিবার চেষ্টা করিতেই কোন এক অবস্থায় সুবিধা পাইয়া বোলতা তাহার মুখের মধ্যে স্থল ফুটাইয়। দিল । তার কি যন্ত্রণ ! পোকাটাকে ছাড়িয়া দিয়া মাছটা যেন বিদ্যুংবেগে ছিটকাইয়। পিছু হুটিয়া গেল । কতক্ষণ এদিক-ওদিক ছুটাছুটি করিয়া অবশেষে জলের নীচে এক স্থানে চুপ করিয়া রহিল । এদিকে বোলতাট ভাসিয়া উঠিতেই আর একটা মাছ ছুটিয়া আসিয়া সেটাকে মুখে করিয়া পলাইল, কিন্তু বোলতার ছলের ঘায়ে সেও তাহাকে