পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অগ্রহণয়ণ ছেড়েছি আমি, কিন্তু মাজ আমি তোমার কাছে এই ব্ৰত করবার ভিক্ষে চাচ্ছি।” কহিলাম, "ভিক্ষে চাইবার ত কোন প্রয়োজন নেই শৈল। তোমার শরীর কোন দিনই বিশেষ ভাল নয়, আমি দেখেছি এই সব উপোস অনিয়ম তোমার সহ হয় না, তাই ত বারণ করি।" শৈলজা কহিল, "এ খুব সোজা ব্রত । চার দিন এক বেলা উপোস। সে আমি খুব সহ করতে পারব।” তাহার চিস্তাক্লিষ্ট মান মুখের দিকে চাহিয়া মনে হইল— সে যেন একটি স্রোতের ফুল। বিভিন্ন স্রোতধারার সম্মুখে পড়িয়া কোন দিকে যাইবে ভাবিয়া পাইতেছে না। মনে মনে কহিলাম, তাহার সকল চিন্তা-ভাবনা, সকল সুখ-দুঃখ এবং সকল দুৰ্ব্বলতা লইয়া, সকল স্রোতধারাকে উপেক্ষা কfরয়, একবার পূর্ণবিশ্বাসে সে কি আমার পানে ছুটিয়া জাসিতে পারে না । মুখে কিছু কহিলাম না, কেবল মাথা নাড়িয়া জানাইলাম আমার আর কোন আপত্তি নাই। জগতে জন্ম যেমন স্বাভাবিক, মৃত্যুও তেমনই নিশ্চিত। নশ্বর জীব মানুষের পক্ষে মৃত্যুর স্তায় স্থনিশ্চিত বস্তু পৃথিবীতে আর কি থাকিতে পারে। কিন্তু এ-তত্ত্ব শৈলজাকে বুঝাইয়া লাভ নাই। মনে হয় যেন চোখের সম্মুখে মৃত্যুকে দেখিয়াও সে চোখ বুজিয়া অস্বীকার করিতে চেষ্টা করে। সেই যে বেহুলা লখীন্দরের প্রাণ কাড়িয়া আনিয়াছিলেন, সাবিত্রীর সত্যবান বাচিয়া উঠিয়াছিলেন, সেইটাই তাহার কাছে বড় কথা । কিন্তু তাহার পর কত লখীন্দর বাসরশয্যায় চিরনিদ্রা গিয়াছে, কত সত্যবানকে বুকে করিয়া সাবিত্রী চোখের জলে ভাসিয়াছে, সে-কথা খুব ভাল করিয়া জানিয়া-গুনিয়াও সত্য বলিয়া স্বীকার করিতে চাহে না শৈলজা। छात्र श्रेड गोब्रानि आब्र अम्न ३ छानिाच्ह्ह। গংগা যেন বসন্তে বর্ষার আবির্ভাব। বিষয় বাদল-সন্ধ্য। 6মধের অন্তরালে সূৰ্য্য অন্তু গিয়াছে কি যায় নাই, তইও বুঝা যাইতেছে না। পাশের * ঝোপটা হইতে বিবিপোকার একঘেয়ে শৰ, বারিপতনের পরে cস্রাতের ফুল స్చిరిథ সহিত মিশিয়া একটা অদ্ভূত স্বরের স্বাক্ট করিয়াছে। মুক্ত বাতায়নপথে বাহিরের পানে চাহিয়া সহসা মনে হইল, এ যেন সেই ঠাকুরমার মুখে গল্প শুনিবার সন্ধ্যা, সেই অবাস্তবকে বাস্তব বলিয়া দৃঢ় প্রতীতি জন্মাইবার সদ্ধা । কবে কোন বেঙ্গম-বেঙ্গমী বৃক্ষশাখায় বসিয়া রাজপুত্রের ভবিষ্যৎ বাৰ্ত্ত কহিয়াছিল, কোন পাতালপুরী হইতে রাজকন্ত। গভীর রজনীতে সরোবরে স্বান করিতে উঠিয়াছিলেন, কোন ঘুমন্ত রাজপুরীর অস্তঃপুরিকার ঘুম ভাঙাইবার জন্ত সোনার কাঠি রূপার কাঠির প্রয়োজন হইয়াছিল,—মনে হইল বোধ হয় এমনই সন্ধ্যায় সেই রহস্যময় রূপকথাগুলির স্বষ্টি হইয়াছিল। তিন দিন হইতে শৈলজার উপবাস চলিতেছে । অনভ্যাসে কষ্ট ষে তাহার খুবই হইতেছে, মুখ দেখিয়া তাহা স্পষ্টই বুঝা যায়। ভৃত্যকে কি-একটা আদেশ দিয়া সে আমার কক্ষে ঢুকিল । কহিলাম, “কাজ শেষ হ’ল ?” "র্হ্য", বলিয়া শৈলজ নিকটে বসিল । একবার মনে মনে গুছাইয়া লইয়া কহিলাম, "একটা গল্প শুনবে " ` “বল”—বলিয়া শৈলজা তাহার শাড়ীর অঞ্চলটা বেশ করিয়া অঙ্গে জড়াইয়া আঁটপাট হইয়া বসিল । কহিলাম, “আমার স্বন্দর-ঠাকুরদাকে তোমার মনে পড়ে ?” শৈলজা কহিল, “সম্পর্কে তিনি আমার শ্বশুর ছিলেন। মাথায় কাপড় ছাড়া কোন দিন ত যাই নি তার কাছে। তবে ঠাকুমাকে মনে আছে বইকি। তারই ত ইচ্ছামৃত্যু হয়েছিল । মৃত্যুশয্যায় ঠাকুরদা—এদিকে স্বস্থ সবল ঠাকুমার সেই যে ফিট হ’ল আর ভাঙল না । দু-দিন পরে ঠাকুরদার श्रृङ्का इज ।” কহিলাম, “তুমি জান দেখছি তাদের অনেক কথা। ঠাকুরদার চেহারাটা এখনও আমার চোখে ভাসে। দীর্ঘ স্বগঠিত দেহ। কপালের রঙের সঙ্গে মাখার সাদা চুলের রং একেবারে মিশে গেছে এক হয়ে । দীর্ঘ দুই চোখে অনাবিল শান্তি। সমস্ত মুখে মেহমিং হাসির রেখা। কি সাহস ছিল তার। ভয় কাকে বলে জানতেন না। আর ঠাকুমা ছিলেন যেমন দুৰ্ব্বৰ, তেমনই ভীতু। কারও কোন