পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আগ্রহায়ণ সত্যকে সকল অবস্থায় মেনেছেন, তাতে আপাতত স্ববিধে হোক বা না হোক, তার দৃষ্টান্ত আমাদের কাছে মহৎ দৃষ্টান্ত । পৃথিবীতে স্বাধীনতা এবং স্বাতন্ত্র্যলাভের ইতিহাস রক্তধারায় পৰিল, অপহরণ ও দস্থ্যবৃত্তির দ্বারা কলঙ্কিত। কিন্তু পরম্পরকে হনন ন ক'রে, হত্যাকাণ্ডের আশ্রয় না নিয়েও যে স্বাধীনতা লাভ করা যেতে পারে, তিনি তার পথ দেখিয়েছেন। লোকে অপহরণ করেছে, বিজ্ঞান দমাবৃত্তি করেছে দেশের নামে। দেশের নাম নিয়ে এই যে তাদের গৌরব-এ গর্ব টিকবে না তো ! আমাদের মধ্যে এমন লোক খুব কমই আছেন ধারা হিংস্রতাকে মন থেকে দূর করে দেখতে পারেন । এই হিংসা প্রবৃত্তি স্বীকার না করেও আমরা জয়ী হব-এ কথা আমরা মানি কি ? মহাত্মা যদি বীরপুরুষ হতেন কিংবা লড়াই করতেন তবে আমরা এমনি করে আজ ওঁকে স্মরণ করতুম না । কারণ লড়াই করার মতে বীরপুরুধ এবং বড়ে বড়ো সেনাপতি পৃথিবীতে অনেক জন্মগ্রহণ করেছেন । মামুষের যুদ্ধ ধমধুদ্ধ, নৈতিক যুদ্ধ । ধৰ্মযুদ্ধের ভিতরেও নিষ্ঠুরতা আছে তা গীতা ও মহাভারতে পেয়েছি । তার মধ্যে বাহুবলেরও স্থান আছে কিনা এ নিয়ে শাস্ত্রের তর্ক তুলব না । কিন্তু এই যে একটা অনুশাসন, মরব, তবু মারব না এবং এই করেই জয়ী হব, এ একটা মস্ত বড়ো কথা, একটা বাণী। এটা চাতুৰী কিংবা কার্যোদ্ধারের বৈষয়িক পরামর্শ নয়। ধৰ্মযুদ্ধ বাইরে জেতবার জন্ত নয়, হেরে গিয়েও জয় করবার জন্য। অধম যুদ্ধে মরাট মর, ধমধুদ্ধে মরার পরে ৪ অবশিষ্ট থাকে, হার পেরিয়ে থাকে জিত, মুতু্য পেরিয়ে অমৃত ধিনি এই কথাটা নিজের জীবনে উপলব্ধি করে স্বীকার করেছেন, তার কথা শুনতে আমরা বাধ্য। এর মূলে একটা শিক্ষার ধারা আছে। ইউরোপে আমরা স্বাধীনতার কলুষ ও স্বদেশিকতার বিষাক্ত রূপ দেখতে পাই । অবগু, আরম্ভে তারা অনেক ফল পেয়েছে, অনেক ঐশ্বধ লাভ করেছে। সেই পাশ্চাত্য দেশে খ্ৰীষ্টধমকে শুধু মৌখিক ভাবে গ্রহণ করেছে। খ্ৰীষ্টধমে মানবপ্রেমের বড়ে উদাহরণ আছে, ভগবান মানুষ হয়ে মামুষের দেহে যত ছুঃখ পাপ সব আপন দেহে স্বীকার করে নিয়ে মানুষকে ৰচিয়েছেন, এই ইহলোকেই, পরলোকে নয়। ষে সকলের চেয়ে দরিদ্র, তাকে বস্ত্র দিতে হবে, যে নিরন্থ, তাকে অল্প দিতে হবে, এ-কথা খ্ৰীষ্টধমে যেমন স্বম্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে, **न व्षांद्ध ८कांथांe मञ्च । মহাত্মাজী এমন একজন খ্ৰীষ্টসাধকের সঙ্গে মিলতে মহাত্মা গান্ধী 는 ८°tब्रक्रुिट्लन, बैंद्र fमेघड थ८5छे छ्लि भfनरवद्र मrाया অধিকারকে বাধামুক্ত করা। সৌভাগ্যক্রমে সেই ইউরোপীয় ঋষি টলষ্টয়-এর কাছ থেকে মহাত্মা গান্ধী খ্ৰীষ্টান ধমের অহিংস্রনীতির বাণী যথার্থভাবে লাভ করেছিলেন । আরো সৌভাগ্যের বিষয় এই যে, এ বাণী এমন একজন লোকের, যিনি সংসারের বহু বিচিত্র অভিজ্ঞতার ফলে এই অহিংস্রনীতির তত্ত্ব আপন চরিত্রে উদ্ভাবিত করেছিলেন । মিশনারী অথবা ব্যবসায়ী প্রচারকের কাছে মানবপ্রেমের বাধা বুলি র্তাকে শুনতে হয় নি। খ্ৰীষ্টবাণীর এই একটি বড়ো দান আমাদের পাবার অপেক্ষ ছিল। মধ্যযুগে মুসলমানদের কাছ থেকেও আমরা একটি দান পেয়েছি। দাদু, কবীর, রজব প্রভৃতি সাধুরা প্রচার করে গিয়েছেন যে, যা নিমল, ঘা মুক্ত, যা আত্মার শ্রেষ্ঠ সামগ্ৰী তা রুদ্ধদ্বার মন্দিরে কৃত্রিম অধিকারীবিশেষের জন্তে পাহারা দেওয়া নয়, তা নিবিচারে সর্ব মানবেরই সম্পদ। যুগে যুগে এইরূপই ঘটে। যারা মহাপুরুষ তার সমস্ত পৃথিবীর দানকে আপন মাহাত্ম্য দ্বারাই গ্রহণ করেন এবং গ্রহণ করার দ্বারা তাকে সত্য করে তোলেন। আপন মাহাত্ম্য দ্বারাই পৃথু রাজা পৃথিবীকে দোহন করেছিলেন রত্ব আহরণ করবার জন্তে । ধারা শ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ তারা সকল ধম, ইতিহাস ও নীতি থেকে পৃথিৱীঞ্জ শ্রেষ্ঠ দান গ্রহণ করেন। খ্ৰীষ্টবাণীর শ্রেষ্ঠ নীতি বলে ধে যারা নম্র তারা জয়ী হয়, আর খ্ৰীষ্টানজাতি বলে নিষ্ঠুর ঔদ্ধত্যের স্বারা জয়লাভ করা যায়। এর মধ্যে কে জয়ী হবে ঠিক করে জানা যায় নি, কিন্তু উদাহরণস্বরূপ দেখা যায় যে ঔদ্ধত্যের ফলে ইউরোপে কী মহামারীই না হচ্ছে । মহাত্মা নম্র অহিংস্রনীতি গ্রহণ করেছেন আর চতুর্দিকে তার জয় বিস্তীর্ণ হচ্ছে। তিনি যে নীতি র্তার সমস্ত জীবন দিয়ে প্রমাণ করছেন, সম্পূর্ণ পারি বা না পারি সে নীতি আমাদের স্বীকার করতেই হবে । আমাদের মস্তরে ও আচরণে রিপু ও পাপের সংগ্রাম আছে, তা সত্ত্বেও পুণ্যের তপস্তার দীক্ষা নিতে হবে সত্যব্রত মহাত্মার নিকটে । আজকের দিন স্মরণীয় দিন, কারণ সমস্ত ভারতে রাষ্ট্রীয় মুক্তির দীক্ষা ও সত্যের দীক্ষা এক হয়ে গেছে সর্বসাধারণের কাছে । ১৬ই আশ্বিন, ১৩৪৩ { মহাত্মাঞ্জীর জন্মতিথি উপলক্ষ্যে শাস্তিনিকেতন মন্দিরে অভিভাষণ। প্রক্ষিতীশ রায় ও ঐ প্রভাত গুপ্ত কর্তৃক অম্বলিখিত ও বক্তাকর্তৃক সংশোধিত । ]