পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\రిషి ఆ আমার এক বন্ধু মিঃ অ্যাডামসন, এখানকার ডি. সি. হয়ে এসেছেন। আগে আকিয়াবে ছিলেন, সেখানকার কমিশনার-সাহেবের ছেলে । বাল্যকাল বর্শা দেশেই কেটেছে, কাজেই তোমার মাতৃভাষায় বিশেষ অভিজ্ঞ, জার ইনি আমার সিষ্টার-ইন-ল, মিস্:--” মা-মিয়া-সোয়ে বাধা দিয়া বলিল, “মিস্ নয়, মা-মিয়াসোয়ে p. মিঃ সান-পো-লিন হাসিয়া বলিলেন, “ক্ষমা কর ভাই, তোমার ঐ লম্বাচওড়া নামটি আমি মনে রাখতে পারি না । তোমার দিদির মতন তুমিও একটা ছোটখাট নাম,--ধেমন ডেইজি বা ‘ফ্লোরা-গোছের একটা কিছু বেছে নাও না । আমার বন্ধু মিঃ অ্যাডামসনও নিশ্চয় তা হ’লে খুনী হবেন।” মিঃ অ্যাডামসন বলিলেন, “ন, ন, ওসব নাম বড় কমন্‌ হয়ে গেছে। আপনার নামের মাঝখানটা বাদ দিয়ে শুধু "মা-সোম্বে' বললে কেমন হয় ?” মা-মিয়া-সোয়ে বলিল, “আপনাদের কারও নামটাই ত বড় ছোট দেখছি না, আমি-বেচারীর নাম নিয়ে এত কাট কাটি কেন,* বলিয়া সে চলিতে আরম্ভ করিল। যুবক দুইটি বলিল, “আমরা সঙ্গে গেলে বোধ হয় আপত্তি নেই আপনার ?” মা-মিয়া-সোয়ে বলিল, “ধন্যবাদ, আমি এ পথে প্রতিদিনই চলি, এক যেতে ভয় করি না, আপনারা কেন কষ্ট করবেন ?” তাহার মনে মনে ভয় হইল, একে ত রাত হইয়া গিয়াছে, তাহার উপর গ্রামের পথে দুইটি যুবকের সহিত চলাতে নানা কথার স্বষ্টি হইতে পারে। তাহার মা হয়ত এই সাহেবটিকে দেখিয়া চটিয়াই যাইবেন । যুবক দুইটিও তাহার সঙ্কোচের কারণ বুঝিতে পারিয়া বিদায় লইয়া চলিয়া গেল। ছুই-চার পা গিয়া সাহেবটি ফিরিয়া বলিল, “ম-সোধে, আশা করি কাল আরার নদীর ধারে দেখা হবে ।” মিঃ অ্যাডামসন শিশুকালে পিতামাতার সহিত বৰ্ম্ম৷ দেশে আসেন। আকিয়াৰে দুই-তিন বৎসর মাত্র স্থানীয় ইউরোপীয়ান স্থলে লেখাপড়া করেন। হাই স্থলে পাস করিবার অনেক আগেই স্বদেশে প্রেরিত হন। অবশিষ্ট প্রবাসী SNరీశ్రళ শিক্ষা বিলাতেই হয় । অল্পবয়সে পিতার সহিত বৰ্ম্ম৷ দেশের নানা স্থানে ঘুরিয়া বেড়াইয়াছিলেন, সেই জন্য বর্শ্ব দেশের প্রতি র্তাহার একটা আকর্ষণ জরিয়াছিল। পিতাও দীর্ঘকাল এদেশে চাকরি করিয়া অবসর গ্রহণ করিবার পূর্বমুহূর্তে পুত্রকে আপন পদে প্রতিষ্ঠিত করিয়া যাইবার জন্ত যথেষ্ট প্রাস পাইয়াছিলেন। মিঃ অ্যাডামসন সিভিল সাভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়াই ডেপুটি কমিশনারের পদে নিযুক্ত হইয়া এদেশে আসেন । বিভাগীয় কমিশনার অবসর গ্রহণ করিলেই সেই পদে উন্নীত হইবেন এইরূপ বন্দোবস্ত ছিল । অনেক বৎসর পরে পুনরায় পূৰ্ব্বপরিচিত স্থানে ফিরিয়া মিঃ অ্যাডামসনের মন খুলীই হইয়াছিল, কিন্তু এ হেন বৈচিত্র্যহীন নির্জন স্থানে অকস্মাৎ নিজেকে বড়ই একাকী বোধ হইতে লাগিল। স্থানীয় ক্লাব-হাউসে মিঃ সান-পোলিনের সঙ্গ পাইয়া যেন বাচিয়া গেলেন। গল্ফ খেলিবার মাঠে, বিলিয়ার্ড টেবিলে, টেনিস-লনে, সৰ্ব্বত্রই এই কেরিন যুবকটি র্তাহার নিত্য সঙ্গী হইয় পড়িল । সান-পে-লিন জাতেই কেরিন ছিলেন, আচরণে, পোষাকে, কথা-বাৰ্ত্তায়, চালচলনে, আহারে-বিহারে সাহেবীর ত্রুটি কোথাও ছিল না। মঙ্গোলীয় ছাচের মুখখানার গড়নই শুধু তাহার সাহেব হওয়ার বিরোধী ছিল, তাই পিতৃমাতৃদত্ত নামটাও আর পরিবর্তন করেন নাই। কিন্তু তাহাতে র্তাহার কিছু ক্ষতি হয় নাই। আমেরিকান মিশনর সাহেবদের প্রশংসাপত্রের জোরে সিভিল সার্ভিসের উচ্চপদ লাভের এবং ইউরোপীয়ান ক্লাবের সভ্য হইবার স্বধোগ হারান নাই । অ্যাডামসন সাহেৰ সান-পে-লিনকে খুব পছন্দ করিতেন। ছেলেটির সরল, অমায়িক, আমোদপ্রিয় স্বভাব তাহাকে মুখ করিয়াছিল। বিশেষভাবে মিসেস সান-পো-লিনের স্বমিষ্ট জাতিখ্যে জল্পকালের মধ্যেই এই পরিবারটিকে তাহার আপন গৃহের সমতুল্য করিয়াছিল। মিসেস সান-পে-লিন তাহাকে ভ্রাতৃজ্ঞানে ‘রবার্ট বলিয়া ডাকিতেন, অ্যাডামসনও ‘মেবেল বলিয়া ভাকিবার অধিকার পাইয়াছিলেন। মেবেলের মনে মনে একটি হুদুর আশা মাৰে মাঝে