পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

નાન “ষাহ। পণই তাহণ চাই না” 8の、? যুগ্যতা হ’ল না—এদিকে পুরুষমাছুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পাস করেছেন। জারে বাপু সেই ত স্থ-দিন বাজে বিয়ে হবে জার রান্নাঘরে বসে হাড়ি ঠেলতে হবে—এ মেডেল নিয়ে কি তখন ধুয়ে থাবে ?” ইন্দু মুখখানা রাগে লাল করিয়া বলিল, “পিসীমা কেবল ঐ বিয়ে আর ইাড়ি ঠেল—এই দুটি কথা শিখে রেখেছ— সব তাতে তুমি সেই কথা টানবে। কি তোমাদের হাড়িঠেলার ভয় দেখাও ? কতকগুলো আনাজ কুটে খানিকটা হলুদ গোলা জলে ফুটিয়ে দিলেই ত তরকারি হয়ে যায়— এতে এত শেখবার কি আছে ? ও কে না পারে ? রমা দিদের বামুনটী ত এত বোকা যে একটা জন্তু বললেই হয়—ত সে অবধি যখন রণধতে পারে তখন রাস্নায় এত বাহাদুরীট যে কি আছে তা ত বুঝি নে। কিন্তু আমুকৃ না আমনি বোকা একটা লোক পাস ক’রে একটা মেডেল— এ বিদ্যে শিখতে তার জন্ম কেটে যাবে না ?” মেয়ের সদ্যপ্রাপ্ত মেডেল দেখিতে ভবানীবাবুও অন্দরমহলে আসিয়া দাড়াইয়াছিলেন । তিনি কন্যাকে কাছে টানিয়া লইয়া হাসিন্ধা বলিলেন, “তা ইন্দু ত ঠিকই বলেছে । দিদির কি না এই রান্নাঘরেই জন্ম কেটে গেল, তাই দিদি আর অন্য দিকটা দেখতেই পাচ্ছেন না । মেয়েদেরও কিছু কিছু লেখাপড়া শেখাটা দরকার বইকি— কেবল রান্নাঘরে থাকাটাই কি ভাল । তুমি কিছু ভেবে না দিদি-যখন ইড়ি ঠেলবার সময় আসবে ইন্দু তখন চালিয়ে নেবেই কোনও রকমে, এমন কিছু আটকাবে বলে ত আমার মনে হয় না—আর যদি একটু-আধটু জাটকায়ও ত তাতে একেবারে সর্বনাশ হয়ে যাবে না ।” পিসীমা রাগে জলিয়া উঠিলেন। “বকিস নে, বকিস নে ভবানী-তোর কথা শুনলে আমার হাড় অবধি জলে যায়। আহা কি কথার ছিরি । রান্নাবান্না ভারি ফেলনা জিনিষ, না ? মেম্নেমামুষের সংসারই হ’ল সব—রান্নাবান্না শিখবে, ধরের কাজকৰ্ম্ম শিখবে, সেই হ’ল মেয়েদের আসল শিক্ষা। তী না, সংসারের কিছু জানলাম না, পায়ের ওপর প। দিয়ে প সে কেবল বই পড়তে লাগলাম—ত হ’লেই সংসারে একেবারে লক্ষ্মীই উথলে উঠবে আর কি ! যা করছ এখন কর-মেয়ের বিয়ে দিয়ে তখন সব বুঝবে ঠেলা ! এই ত তোমার হরিপদ বাবুর ছোট ছেলের বেী হয়েছে পাস করা— fক কাজে লাগছে এখন তার ও ছাইপাশের বিদ্যে ! সেই -ইলেকে দুধ খাওয়ান আর বাটনা-বাটাই করতে হচ্ছে না থগুরবাড়ী এসে ? ননদিনীর রাগ দেখিয়া ইন্দুর জননী মেডেলখানি হাতে পইয়াই রান্নাঘরে ঢুকিয়া পড়িয়াছিলেন-মেন্ধবোঁদির কাছে 6মডেল দেখাইতে পাঠাইবার সাহস তাহার অন্তহিত ইইয়াছিল। ইন্দুর পিসীমা ইন্দুর পিত্তা অপেক্ষাও পাচ-সাত বৎসরের বন্ধোজ্যেষ্ঠা—তাহাকে সকলেই ভয় করিয়া চলে, কেবল ইন্দু ছাড়া। পিসীমার মুখের উপর কথা কহিবার সাহস এ-বাড়ীতে ঐ ইন্দু ছাড়া আর কাহারও নাই। ইন্দুর মায়ের বিশ্বাস বেশী লেখাপড়া শিখিয়া তাহার কঙ্কার গুরুজনদের প্রতি সম্মানজ্ঞানটা কfময় ধাইতেছে—এজন্ত তিনি প্রায়ই স্বামীকে অমুযোগ ও ইন্দুকে ভৎসনা করেন— কিন্তু ইন্দুকে পারিয়া উঠেন না। ভবানীবাবু আবার হাসিয়া দিদির বাক্যের কিছু মুছ প্রতিবাদ বোধ করি করিতে যাইতেছিলেন—ইন্দু বাধা দিয়া বলিল, “শ্বশুরবাড়ী ত আমার হয় নি—হবে কি না তারও ঠিক নেই—যদি হয় ত ধখন হবে তখন আমি ছেলেকে দুধ ও খাওয়াব, বাটনাও বাটতে পারব, তোমায় ভাবতে হবে না পিসীমা । ও:—বাটনাবাট আবার একটা কাজ যে ঘট! ক’রে তা শিখতে হবে । যার দুটো হাত আছে সে-ই ত বাটনা বাটতে পারে । কি ষে তোমরা ভাব ! তোমরা কেবল ছোট কাজটাকে মিথ্যে বড় ক’রে তোল— বড় কাজটা বোঝ না কিনা তাই।” রাগের মুখে শেষ কথাটা বলিয়া ফেলিয়া অপ্রতিভ হইয়া ইন্দু থামিয়া গেল। কথাটা পিসীমাকে বলা ঠিক হয় নাই—মায়ের কাছে বকুনি খাইয়। মরিতে হইবে । কথাটা মনে করিতে করিতেই ইন্দু যা ভয় করিয়াছিল তাঁহাই হইল। পিসীমার নিরামিষ রন্ধন-গৃহের পাশে আমিষ রান্নাঘরে মা ছিলেন—শুনিতে পাইয়া ডাকিলেন, “ইন্দু।” পিসীমা ইন্দুর কথার ঠিক উত্তর দিলেন না, বকিতে লাগিলেন। “ধিঙ্গী একেবারে । লজ্জা নেই, সরম নেই, বড়দের সমীহ নেই—ঘরের কাজকর্মে মন নেই—ও কি ছাই শিক্ষা হচ্ছে ? বিয়ে হ’লে বুড়ো শাশুড়ী হয়ত ফু-বেল হেঁসেলে খেটে মরবে, আর বিদুষী বে। চেয়ারে বসে পাসের পড়া পড়বেন । কালে কালে এ সব হ’ল কি ! আর এ পোড়া সংসারে কি সবই উণ্টো ? ছেলে পারলে না একটা পাস করতে, আর মেয়ে চলল কলেজে ।” জননীর আহবানে ইন্দু একবার পিতার মুখের দিকে করুণ নম্বনে তাকাইল, তার পর ভয়ে ভয়ে রান্নাঘরের দরজায় গিয়া দাড়াইয়ু বলিল, “কি মা ?” মা অত্যস্ত বিরক্ত মুখে বলিল, “পাস করে একেবারে সাপের পাচ-প। দেখেছ, না ? বিদ্যে হচ্ছে, না ছাই হচ্ছে ! ঠাকুরঝি কি সাধে বকেন । পিসীমার মুখে মুখে কথা বলিস, এত সাহস তোর ? আমি মরি ভয়ে ভয়ে এখনও তোর পিসীমার কথার জবাব দিতে, আর তুই একেবারে সমান সমান জবাব করিস তোদের ইস্থলে বুঝি আজকাল এই সব সহবৎ শেখায় ?” ইন্দু মেডেলখানি লইয়া উৎসাহদীপ্ত মুখে ৰাষ্ট্ৰী চুকিয়াছিল—এখন মায়ের ভৎসনায় মুখখানি মান করিয়া