পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՅՊՅ প্রবাসী S\లిgs কোনও দিন ত দুপুরে ঘুমোস না, ভাবলাম শরীর হয়ত ভাল নেই। তা ছু-দিন বাদে ত বোর্ভিঙে গিয়ে উঠবি, তখন খুব ঠেসে পড়িস।” মৃণাল বলিল, “ৰাব ত দু-দিন পরে, কিন্তু কার সঙ্গে যাব তা কিছু মামাবাবু ঠিক করলেন একলা ত আর তোমরা আমায় যেতে দেবে না ? যদিও তাও আমি পারি, ক’ ঘণ্টারই বা পথ ?” মামীম ডালে কাঠি দিতে দিতে বলিলেন, “তা আর পার না, তোমরা না পার কি ? খালি সব চেয়ে সোজা জিনিষগুলোই তোমাদের গলায় বেধে যায়। স্বাক্ গে, একলা তোমায় যেতে হবে না, অনেক লোক শনিবারে গা থেকে যাচ্ছে । সকলেরই ইস্কুল-কলেজ ঐ সময়েই খুলবে ত। সেই সঙ্গে যাবি এখন । কিছু খেতে দেব তোকে । সেই কোনকালে খেয়েছিল।” মৃণাল বলিল, “না এখন আর আমি কিছু খাব না, কেমন যেন মাথাটা ভার ক’রে রয়েছে।” মামীম বলিলেন, "ভিজে চুলে গুলি যেমন। ঐ এক কাড়ি চুল শুকোবে কখন ? একটু চা করে খান, মাখাটা হাঙ্কা লাগবে ।” মৃণাল চায়ের মোটেই পক্ষপাতী নয়। কিন্তু আজ শরীরটা সত্যই ম্যাজ ম্যাজ করিতেছিল, হয়ত চা খাইলে কিছু উপকার হইতে পারে। বলিল, “আচ্ছা দাও একটু গরম জল ক’রে, চা-ই থাই এক পেয়ালা ।” এ বাড়ীতে চা হওয়াও এক মহাপর্ব। চায়ের সাজসরঞ্জাম কিছুই নাই। পাথরের একটি চুম্বকী ঘটতে গরম জলে চা ভিজাইয়া মৃণাল বাট চাপা দিয়া রাখিল । চিনি, টিনি ও খোকার মাথার টনক অমনি কেমন করিয়া নড়িয়া উঠিল, তিনটি মূৰ্ত্তিই অবিলম্বে রান্নাঘরের দরজায় আসিয়া উপস্থিত। অগত্যা সকলকেই চা দিতে হইল। কেহ বা পাথর বাটি, কেহ বা পানের ডিবার খোল কেহ বা গেলাস লইয়া বসিয়া গেল। চা মৃণালের ভাগ্যে অল্পই জুটল। ছেলেমেয়েদের পেটেও ষে বেশী গেল তাহ নয়, মেঝের উপরেই ঢেউ খেলিতে লাগিল বেশীর ভাগ । সবাইকে নড় ধরিয়া ঘর হইতে বাহির করিয়া দিয়া গৃহিণী বক্‌বক্‌ করিতে করিতে ঘর পরিষ্কার কারতে লাগিলেন । ১২ মৃণাল প্ল্যাটফর্মে ট্রেনের অপেক্ষায় দাড়াইয়া আছে। ট্রেনে একটা ওয়েটিং-রুম আছে অবগু, কিন্তু সেখানে বসিতে মৃণালের ভাল লাগে না, তাহার উপর আজ সে ঘরখানিও স্ত্রীলোক ও বালকবালিকায় ভরিয়| উঠিয়াছে। পল্পীগ্রামটিকে মৃণাল যতই ভালবাম্বক পল্লীবাসিনীদের সঙ্গ সব সময় ভালবাসিত না । তাহার এক কথা বই কথা জানে না, আর সেই কথাটি শুনিতেই এখন মৃণালের সবচেয়ে আপত্তি। বিবাহের নামে এখন তাহার গায়ে জর আসে। বিবাহ ব্যাপারটার প্রতিই যে তাহার কোনও বিতৃষ্ণ ছিল তাহা নয় ; থাকিবার কথাও নয়। স্বাভাবিক মনোবৃত্তি লইয়াই সে জন্মিয়াছিল, স্বাভাবিক ভাবেই বাড়িয়া উঠিয়াছে। সুতরাং বিবাহের কথা, প্রেমের কথা সে ভাবিয়াছে বই কি ? খুবই ভাবিয়াছে। তাহার তরুণ জীবনে অধীশ্বর-রূপে যে মানুষটি দেখা দিবে তাহার মূৰ্ত্তি স্বপ্নে জাগরণে কত রকম করিয়া দেখিয়াছে, কল্পনায় কত ভাবে তাহাকে বরণ করিয়াছে। কিন্তু এখন এসব কথা ভাবিতে গেলেই তাহার হৃৎকম্প উপস্থিত হয়। পঞ্চাননের বৃহৎ চক্রাকার মুখ, আর খোচা খোচা চুল যেন তাহার চোখের সম্মুখে জগৎ-সংসারকে আড়াল করিয়া দাড়ায় । এই বিবাহটা দিবার জন্ত মল্পিক-মহাশয় ধেন আদাজল খাইয়া লাগিয়া গিয়াছেন। কত কথা হইতেছে তাহার ঠিকানা নাই, দর কষাকষির বিরাম নাই। ব্যাপারটা এমন কুৎসিত যে ভাবিতেই মৃণালের বুকের ভিতরটা cफांtछ फूःt१ अशैव्र श्ब्रां ऊंtठं । আজ লোক চলিয়াছে বিস্তর, বেশীর ভাগই কলিকাতার যাত্রী। ট্রেনে জায়গা পাইবে কি না, সেও এক ভাবন । সারাপথ হয়ত দাড়াইয়াই যাইতে হইবে। দাড়াইতেও আপত্তি নাই, কিন্তু পুরুষদের গাড়ীতে যাইতে হইলেই সৰ্ব্বনাশ, কারণ দেখা যাইতেছে যে স্বয়ং পঞ্চাননও চলিয়াছে এই ট্রেনে। কাজেই মৃণালের মনে ভারের উপর আরও ভার চাপিয়া উঠিয়াছে। মল্পিক-মহাশয় একবার ভাষ্ঠীর কাছে আসিয়া বলিলেন, “এই রোঙ্গে কত আর দাড়াবি ? ঘরে বসবি চল না ? আজ আবার ট্রেন কিছু লেট হয়েছে গুনেছি।”