পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ ক্রমে উত্তর দিল, “কষ্ট ?--ই্য, ন, তা কষ্ট ঠিক নয়-মানে--” মানে কি ?—স্বনন্দার ভারি হাসি পাইতেছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ে ষে-ব্যক্তি বি-এ পরীক্ষায় প্রথম হইয়াছে সে যে সামান্ত একটা কথা বলিতে শীতকালে ঘামিয় ওঠে তাহা আগে জানিত না |

  • •••মানে•••সারাদিন•••” শচী আবার খামিল । আর একবার চেষ্টা করিয়া বলিয়া ফেলিল, “এত কষ্ট হবে আমি আগে বুঝতে পারি নি...মানে সারাদিন তোমাকে দেখতে পাচ্ছিলুম না। ওঁরা তোমাকে ঘিরে ছিলেন ।”

স্বনন্দ হাসিয়া মুখ নামাইল। তাহার পর আবার মুখ তুলিয়া কহিল, “আপনি দাড়িয়ে রইলেন কেন, বস্থন না। আচ্ছ, সত্যি যদি আপনার কষ্ট হয়ে থাকে ওঁদের না মানলেও ত পারতেন।” শচীকান্তর লজ্জা অনেকটা কাটিয়াছিল । সে নিকটস্থ চেয়ারটার উপর বসিয়া কহিল, “কিন্তু ওঁরাই ত আমার জীবন-কবিতার ছন্দ মুনন্দা । কবিতা এত অসন্দিগ্ধভাবে আমাদের মনকে অভিভূত করে কেন জান, সে ছন্দের বঁাধনকে স্বীকার করে ব'লে। তোমাকে দেখবার যে ব্যাকুলতা সেটাকে ওরা বিধিনিষেধের ছন্দে বেঁধে কবিতা করে তুলেছেন। এলোমেলো অসম্বন্ধ ভাবে আর ত তা প্রকাশ হৰার উপাষ্ট্র নেই। সারাদিনের পর সন্ধ্যার অন্ধকার যখন অনিমেষ হয়ে উঠবে, তখন তোমায় অামায় cनशीं । ७व्र डिङब्र कर*ांब्रड श्रांरछ, किरू चांद्र किडू কি নেই ?” \ আরও কিছু ছিল নিশ্চয়, স্বনন্দ ক্রমশঃ তাহা তীব্রভাবে আইভব করিতে লাগিল। শচী তিন-চার দিন পরেই পাটনা চলিয়া গিয়াছে। তাহার ল-কলেজ খোলা। কামাই করিবার উপায় নাই। পরম্পরকে একান্ত করিয়া পাইবার কামনা যত দুৰ্ব্বার, বাধাওঁ কি তত্তই অলঙ্ঘনীয়। কাল হইতে, শুভ ফাইডের ছুটি আরম্ভ হইবে, শচীকান্ত লিখিয়াছে রাত্রির ট্রেনে আসিবে। সমস্ত বাড়ীতে একটা সাড় পড়িয়া গিয়াছে। সবারই চেষ্টা একই পথগামী। শচীর মা ব্যস্ত হইয়াছেন, বড় মাছ পাওয়া গেল কি না, গোস্বালাকে বেণী করিয়া মধুচন্দ্রিকণ 3bsS দুধ দিতে বলা হইয়াছে, শচীর জন্য ছান মাখন ক্ষীর সন্দেশ হইবে। বাগানের মালী ব্যস্ত হইয়া কাচি-হাতে পাতবাহারের পাতা সমান করিয়া ছাটিতে লাগিল । মন্ত বড় গোলাপের তোড়া বাধিয়া রামচরণ চাকরের হাতে বড় বাবুর উপরের ঘরে পাঠাইয়া দিল। তিনি ফুল খুব ভালবাসেন, ফুলের ভোড়া পাইলে মালীর উপর হয়ত সভষ্ট থাকিবেন । তেত্তালার ঘর রোজই পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন থাকে, কিন্তু আজ চাকরে বিশেষ করিয়া সকাল হইতে ঝাড়ামোছ স্বরু করিল। আর স্বনন্দ বাঙ্গ খুলিয়া তাহার বহুধত্বে কারুকাৰ্য্যখচিত করিয়া সেলাই করা ফুলকাটা ঝালর-দেওয়া বালিশের ওয়াড়, বিছানার চাদর, শয্যা-আস্তরণ বাহির করিল। এগুলি সে দ্বিপ্রহরের বিরাম অবকাশে কত দিন ধরিয়া একটু একটু করিয়া সেলাই করিয়াছে। ইহারই ভিতর তাহার সেবাকুশল হাত ছখানির সমস্ত অাদর যেন পুঞ্জীভূত হইয়া আছে। সদ্ধাবেলায় ঘরে ঘরে আলো জলিয়া উঠিল, সেই আলোর সঙ্গে স্বনন্দার সমস্ত দেহমন যেন পূজারতির মত কাহার উদ্দেশে জলিয়া আপনাকে সার্থক করিতে চাহিল। তখন নীচে সে পান সাজিয়া একটি রূপার ডিবার খোলে গোলাপজল ছিটাইয়া, রাখিতেছিল। মোটরটা গেটের ভিতর ঢুকিল। একটু জুতার আওয়াজ, হাসি, সেই গলার স্বর•••মাকে প্রণাম করিলেন । র্তাহার সহিত গল্প করিতেছেন। পাশের ঘরে স্বনন্দার হৃৎস্পন্দন দ্রুততর হইয়া উঠিতে লাগিল। খানিকক্ষণ পরে ছোট ননদ তরল আসিয়া হাসি হাসি মুখে ফিস ফিস করিয়া বলিল, “বৌদি ভাই, একবার তেতালায় যাও। জোর তলব এসেছে। দাদ যেমন ক’রে বললেন তাতে আমার হাসি পেল। দেখ যদি যাস, আমি বলে দি কেমন করে। এইবেল বাবা এখনও মক্কেলের কাজ দেখছেন সদরে । মা এইমাত্র রাল্পীঘরে গেলেন। সামনে কেউ নেই, দক্ষিণ দিকের দালানটা ঘুরে ওপাশের ঘরটা দিয়ে সামনেই সিড়ি পড়বে। আচ্ছা, আমি না-হয় বারান্দার আলোটা নিবিয়ে দিচ্ছি।” তরল এই মধুর দৌত্যকার্ধ্যে সহায়তা করিতে গিয়া হাসিন্ধ। ফেলিল শেষ পৰ্যন্ত। স্বনন্দ তাহার হাতের সোনার কঙ্কণ জার জড়োয়ার জামলেট এবং চৌদ্ধ গাছ চুড়ি সাবধানে