পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ বাকে এমন অপরূপভাবে ব্যঙ্গ করেছেন যে গোড়া হিস্থও নিৰ্ব্বিবাদে তা উপভোগ করে। র্তার ব্যঙ্গচিত্রের মধ্যে দেখা যায়, আঘাত করার চেষ্টা প্রধান প্রেরণা নয়,— রগনাভূতিই শিল্পীকে মূলত আকৃষ্ট করেছে। আঘাত তিনি দিয়েছেন কিন্তু সে আঘাত এত রসাত্মক যে তা কোনদিন কটু কটাক্ষে আমাদের জর্জরিত করে না। তার রচনায় স্থল অবশু আছে। খামানন্দ বাটপারিয়ার প্রতারণায় উন্মত্ত তিনকড়ি যখন চীৎকার করে ওঠে, “চোর-চোরচোর, আমি এখনই বিলেতে কোল্ডহ্যাম সাহেবকে চিঠি লিখছি”—এখানে বড়সাহেবের ওপর একান্ত নির্ভরশীল ডেপুটি-মনোবৃত্তির অবুদ্ধি নিয়ে পরশুরাম তীক্ষ্ণ তীব্র ব্যঙ্গ করেছেন। কিন্তু তার মধুর তীব্রতা আমাদের এমন মত্ত করে রাখে ষে স্থলের তীক্ষতা পীড়ন করতে পারে না। পরশুরাম-সাহিত্যে এই ঔদার্ষ্যের প্রধান কারণ, লেখকের শিল্পীজনোচিত নির্ব্যক্তিত্ব। সাহিত্য-জগতে ছু-রকমের শিল্পী আছেন। ষাকে রূপ দিতে চাই, তা শুধু রূপায়িত করাই, কেবল ছবি অঁাকাই এক দলের প্রধান লক্ষ্য। আপন আপন স্বটির মধ্যে এর নিজের ব্যক্তিত্বকে প্রস্ফুট হতে দেন না । নিজেকে তারা গোপন রাখেন । তাদের লেখা পড়তে পড়তে আমুদের চিত্তে এ বোধ জাগে না যে লেখক তার নিজস্ব-দৃষ্টি-দিয়ে-দেখা জগৎ এবং জীবনকে আমাদের সামনে চিত্রিত করে তুলেছেন। আর এক দল সাহিত্যিক আছেন, তাদের স্বষ্টির মধ্যে নিজেদের ব্যক্তিত্ব, নিজেদের মত ও আদর্শ, আমুরাগ ও বিতৃষ্ণ সুস্পষ্ট হয়ে খাকে স্বাক্টর মধ্যে র্তারা নিজেদেরকে প্রচ্ছন্ন রাখতে পারেন না। পরশুরাম প্রখম দলের শিল্পী। তার স্বাক্টর মধ্যে ব্যক্তি পরশুরামকে খুঁজে পাওয়া দুরূহ। শ্রেষ্ঠ ইংরেজ বাদশিল্পী পোপ-ড্রাইডেনও অনেক সময় ব্যঙ্গচিত্র একেছেন সমাজের ছবুদ্ধিকে সংঘত করার উদ্দেণ্ডে। তাদের মনের ভিতরে ব্যক্তি অনেক সময়ে শিল্পীর আসন টেনে নিয়েছিলেন। লোকরহস্তে শিল্পী বঙ্কিমচক্সের তুলির রেখায় মাঝে মাঝে সমাজ-সংস্কারক বঙ্কিমচন্দ্রের মূৰ্ত্তি প্রকাশিত ইয়ে পড়েছে। পরশুরাম স্বদক্ষ শিল্পী । মাস্থ্য-হিসাবে ইত তিনি সমাজের অনেক সমস্তার মীমাংস-প্ৰয়ালী। কিন্তু তার লেখার মধ্যে সে পরিচয় কোথাও নেই। বাংলা-সাহিত্যে পরশুরাম 8S\లి শুামানদের উপর তার কি পরিমাণ বিরাগ, বংশলোচনের উপর তার গ্রীতি আছে বা নেই, কবিরাজী শাস্ত্রকে পুরোপুরি অবজ্ঞা করেন কি না–এসব প্রশ্নের উত্তর মেলে না। তার ব্যক্তিগত মতামত সহজে জানা যায় না, তাই র্তার বাজের কটাক্ষে জালা নেই। হাস্তরসের রূপ বিভিন্ন। তাদের জাতিও এক নয়— আকারও এক নয়। রঙ্গের (fun) মধ্যে আছে শুধু ফাক অট্টহাসি । ಕಿಗಿ নিছক জৈব প্রাণের হাস্তপ্রবণতা ( animal spirit ) থেকে । তার প্রকাশ সশস্ত্ৰ উচ্চ হাসিতে। তা পাঠককে গুৰু হাসায়—ভাবায় না। তার স্মৃষ্টির মাল-মশলা জীবনের বাইরের বিকৃতি বা ঘটনা-সমাবেশের অসঙ্গতি । ‘হিউমার’ ও ‘উইট’ রঙ্গের চেয়ে গভীরতর স্তরের হাস্যরস । তাদের প্রকৃতি লঘু নয়-সুহ্ম সঙ্কেতময়তায় ভরপুর। তারা আমাদের কল্পনায় সাড়া জাগায়, মস্তিষ্ককে ক’রে তোলে চঞ্চল। শুধু ক্ষণিকের আমোদ দেওয়া তাদের ধৰ্ম্ম নয়। গানের শেষে স্বরের রেশের মত আমাদের মনের কোণে তারা ঘুরে ফিরে বেড়ায়। হিউমার ও উইটের মধ্যেও আছে আকার এবং প্রকার দু-দিকেই পার্থক্য। উইটের স্বষ্টি এবং উপভোগের মধ্যে খাৰে মস্তিষ্কের প্রাধান্ত । হাসির সঙ্গে যেখানে মেশে অমুকম্পা সেখানেই হিউমারের উৎস। তা শুধু হাসায় না-সময়ে সময়ে কাদায়ও। কামহাসির অপূৰ্ব্ব সম্মিলনে হিউমারের স্বই। উইট এবং হিউমার মামুষের সূক্ষ্ম ও জটিল মনের চিহ্ন। সভ্যতার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে আমরা যতই জীবনের সূক্ষ্মতর রাজ্যের সন্ধান পেয়েছি, আমাদের আদিম রঙ্গানুভূতি তত্তই উইট এবং হিউমারে বিকশিত হয়েছে। পরশুরাম-সাহিত্যের প্রধান উপাদান উইট। তার লেখার মধ্যে নিছক রঙ্গ খুব কম। ফাকা হাসি তিনি হাসতে পারেন নি। তার প্রত্যেক कब्रिरङ्गब्र, थरडाक छिब्रठेिब्र छिडtब्र यांtछ् *उँौब्र चरर्षब्र সঙ্কেত। কিন্তু তার তুলির স্বল্প এবং তীক্ষ স্পর্শ সক্ষেতের আবছায়াকে কোথাও অর্থের চাকচিক্যে সৌন্দ্বধাহীন ক’রে তোলে নি। তা প্রথম বর্ষার ঘন কালো মেঘের মত পুরোপুরি সঙ্কেতময়—শুধু মাঝে মাঝে বিদ্যুৎঝলকের তীব্ৰতা আমাদের জানিয়ে দেয় তার অর্থের গুরুত্ব ।