পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●ግo ●थषांनी ఫిలి83 সকলেই বীয়ার খায় না দেখলাম। গান-বাজনা ও নান দেশের জাতীয় সঙ্গীতে শেষে আসর খুব জমে উঠল। জাপানীদের মধ্যে বড় ছোটর ভেদ খুব বেশী নেই। আজকের যে উৎসবে কাপ্তেন ও প্রথম শ্রেণীর যাত্রীরা যোগ দিয়েছিলেন, সেই উৎসবেই হাসির গান ও অভিনয় শোনাল জাহাজে যে মেখর ঝাড়ুদারের কাজ করে সে। জাহাজের নাপিতও ইভনিং ড্রেস পরে জাপানী ভাষায় গান ইত্যাদি শুনিয়ে গেল । মালয় রিকৃশ নাচগানের পরদিনই জাহাজ শীতের রাজ্যে এসে পড়ল । মনে হ’ল প্রথম দিনেই একটু ঠাণ্ড লেগে গিয়েছিল। খানিক ডেকে বসে সমুঞ্জের হাওয়ায় সদিটা কেটে গেল। তবু একবার ভাক্তার দেখাতে গেলাম। শীতের দেশে যাচ্ছি কি জানি কি হয় ! যে-দেশের শীত সে-দেশের ডাক্তারের উপদেশ নিয়ে রাখা ভাল। ডাক্তার দেখে বললেন, “কোথাও সর্দি বসে নি।” বললাম, “আমার একটু বেশী ঠাণ্ডা-লাগা ধাত, শীত কতটা বাড়বে জানি না, কি রকম সাবধান হওয়া উচিত যদি ব'লে দেন ভাল হয়।” যতই যা বলি না কেন তিনি কেবল ব্যারমিটারটা দেখিয়ে দেন ষে ঠাও বেড়ে গিয়েছে। আবার বললাম, “জাপান অচেনা দেশ, সেখানে হঠাৎ ঠাণ্ড লেগে যেন বিপদে না পড়ি এমন একটা ওষুধ-বিষুধ কিছু ব'লে দিন।" ভদ্রলোক কেন ধে এতক্ষণ শুধু ব্যারমিটার দেখাচ্ছিলেন তা এর পর বোঝা গেল। তার আদত অভাব ভাষার । একে ইংরেজী সামান্ত জানেন, তাতে উচ্চারণ এমন ষে কেউ বুঝতে পারবে না। স্বতরাং তিনি কাগজ এনে লিখতে আরম্ভ করলেন, “Japan very kind people. No anxious. Some wise people. Some no wise.” Coto's colo Giotta পথে পড়ে বেধোরে মারা যাবার ভয় নেই । তিনি উত্তর শুনেও ভাল বুঝতে পারেন না, লিখে দিতে হয়। কাগজে লিখে যখন সব বোঝাতে পারেন না, তখন তিনি ডাক্তারী ছবির বই দেখিয়ে বোঝান। ছবি দেখিয়ে ব'লে দিলেন কোনখানে সন্ধি আছে এবং কোথায় নেই। অধিকাংশ শিক্ষিত জাপানীরই বিদেশী ভাষাজ্ঞান এই রকম। অথচ এতে তাদের উন্নতির পথে কোন বাধা এসেছে ব’লে ত দেখা ষায় না। আমাদের দেশের শিক্ষিত লোকেরা ইংরেজী শিক্ষাকে এত উচ্চ স্থান দিয়েও প্রকৃত উন্নতির পথে এদের সঙ্গে তাল রাখতে পারছেন কোথায় ? জাহাজে মাঝে মাঝে ঝগড়াঝাটির পালাও বেশ চলত। নাচগানের পরদিন দেখলাম আমাদের টেবিলের জনকয়েক একেবারে তোলো হাড়ির মত মুখ ক’রে খাওয়া সেরেই উঠে চলে যাচ্ছেন। নাচের দিনের সে স্কুরি ভাব এবং অষ্টান্ত দিনের গল্প-গুজব হাসি-তামাশা কোথায় উড়ে গেছে। পরে এক জনের কথায় বোঝা গেল মস্ত একটা ঝগড়া হয়ে গেছে। ছুই দল দুই দলকে জাত তুলে গালাগালি করেছেন। এক জন মহিলা শীঘ্র নেমে যাবেন, তিনি অন্ত জনের কাছে বিদায় নিতে গিয়ে বলেছিলেন, “যদি অজ্ঞাতে কোন অপরাধ করে থাকি, ক্ষমা ক'রে ।” অন্তটি বললেন, “তোমাদের জাতির ধরণ-ধারণ আমি পছন্দ করি না ।” মহিলা চটে বললেন, “তোমাদের জাতের ভদ্রতাও ষে আমি খুব পছন্দ করি তা নয়, তবে ওটা বলা শিষ্টাচারসঙ্গত মনে করি না।” ইতিপূৰ্ব্বে এই দুই পক্ষে মহা বন্ধুত্ব ছিল। কিন্তু এক পক্ষের স্বামী অন্ত জনের সঙ্গে বেশী ভাব করবার সম্ভাবনা দেখানোতেই বোধ হয় কলহের স্বই। স্বামী-স্ত্রীও দিন-দুই পরস্পরের দিকে তাকাতেন না, থালার দিকে তাকিয়ে প্রাণপণে একমনে খেয়ে যেতেন । ঠাণ্ড ক্রমেই বাড়তে লাগল। যাত্রীজের আর ডেকে বেড়াবার কি চেম্বারে পিঠ দিয়ে সমূদ্রের নাচ দেখবার উৎসাহ নেই। ভেক খালিই পড়ে থাকে। ডেক-গলক