পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(మS প্রবাসী SNS)88 হইবার কথা ছিল। র্তাহার মৃত্যু হওয়ায় সৰ্ব জেমস জীনস্ সভাপতি মনোনীত হন । তিনিও প্রসিদ্ধ বৈজ্ঞানিক । ভারতীয় বিজ্ঞানকংগ্রেসের এই অধিবেশনের সমুদয় কার্ধ্য স্থশূঙ্খলার সহিত নিৰ্বাহিত হইয়াছে। প্রধান সভাপতির, বড়লাটের, ও কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলারের বক্তৃতা ছাড়া শাখাসভাপতিদের এবং অন্য অনেকের এত বক্তৃতা এই উপলক্ষ্যে হইয়াছে, যে, সবগুলির নামও আমরা প্রবাসীতে উল্লেখ করিতে পারিব না । কতকগুলি বক্তৃত আদ্যোপাস্ত এবং কতকগুলি সংক্ষিপ্ত আকারে কোন কোন দৈনিক কাগজে বাহির হইয়াছে । সম্ভবতঃ বিজ্ঞানকংগ্রেসের সম্পাদকের সমুদয় বক্তৃতা পুস্তকের আকারে বাহির করিবেন এবং তাহাতে পঠিত প্রবন্ধগুলিও থাকিবে । এরূপ পুস্তক পড়িলে বিজ্ঞান সম্বন্ধে বহু জ্ঞান লাভ করিতে পারা ধাইবে । বিজ্ঞানকংগ্রেসের সম্পাদক এবং কার্য্যনিৰ্ব্বাহকগণ যেরূপ মৃগৃঙ্খল কাৰ্য্যপটুতা দেখাইয়াছেন, তাহাতে আশা করা যায়, যে, স্বসম্পাদিত এইরূপ এক খানি পুস্তক যথাসময়ে বাহির হইবে। ভারতবর্ষে বিজ্ঞানের চর্চা ভারতবর্ষীয় বিজ্ঞানকংগ্রেসের জুবিলী উপলক্ষ্যে কলিকাতায় অনেক ভারতীয় বৈজ্ঞানিকের সমাবেশ হইয়াছিল। তাহাতে এরূপ ভ্রাস্ত ধারণা জন্মিতে পারে, যে, এদেশে বিজ্ঞানের আশানুরূপ চর্চা এবং আশাকুরূপ বৈজ্ঞানিক গবেষণা হইতেছে । কিন্তু এরূপ ধারণা কাহারও হইলে তাহ অমূলক। স্বৰ্গত আচার্ষ্য জগদীশচন্দ্র বম্বর এবং তঁাহা অপেক্ষ কিঞ্চিং বয়ঃকনিষ্ঠ আচার্ষ্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের দ্বার। আধুনিক ভারতে বৈজ্ঞানিক গবেষণার স্বত্রপাত হইবার পর গত ৪০ বৎসরে এদেশের যে-সকল বৈজ্ঞানিক বিদেশেও খ্যাতি লাভ করিয়াছেন তাহাদের সংখ্য নিতান্তই কম। র্যাহার সেরূপ প্রসিদ্ধিলাভ করেন নাই, র্তাহাদের সংখ্যা গণনা করিলেও মোট ভারতীয় বৈজ্ঞানিকসংখ্যা কমই থাকে । আমাদের এই কথার সভ্যতা উপলব্ধি করিতে হইলে পৃথিবীর লোকসংখ্যা ও ভারতবর্ষের লোকসংখ্যা স্মরণ করিয়া ভারতবর্ষে কত বৈজ্ঞানিক থাকা উচিত অনুমান করিতে হইবে । ১৯৩৩ খ্ৰীষ্টাব্দে অনুমিত হইয়াছিল, যে, সমগ্র পৃথিবীর লোকসংখ্যা ১৯৯,৭০,০০,০০০—প্রায় দুই শত কোটি । ভারতবর্ষের লোকসংখ্যা পত্রিশ কোটি। তাহা হইলে ভারতবর্ষে পৃথিবীর সমুদয় লোকের এক-ষষ্ঠাংশের অধিক ও এক-পঞ্চমাংশের কম লোক বাস করে । স্বতরাং ভারতবর্ষে বিজ্ঞানের চর্চা যথেষ্ট হইতেছে বলিতে হইলে দেখাইতে হুইবে, যে, জগতের বৈজ্ঞানিক দিগের এক-পঞ্চমাংশের কম এবং এক-ষষ্ঠাংশের বেশী ভারতবর্ষের মানুষ । বলা বাহুল্য, তত বৈজ্ঞানিক ভারতবর্ষে নাই। থাকিবে কেমন করিয়া ? এদেশের শিশু হইতে বুড়াবুড়ী পর্ধ্যস্ত সমুদয় নরনারীর মধ্যে শতকরা দশ জন মাত্র লিখনপঠনক্ষম। তাহারাও সবাই বিদ্বান নহে। তাহাদের অধিকাংশ সামান্য লেখাপড় মাত্র জানে ও নাম স্বাক্ষর করিতে পারে। সকল লিখনপঠনক্ষমের কথা দূরে থাক্‌, অধিকাংশ গ্রাডুয়েটও বিজ্ঞানের কিছুই জানেন না । কেননা, ইংরেজী বিদ্যালয়সমূহে বিজ্ঞানকে এ-পর্য্যস্ত অবশুশিক্ষণীয় করা হয় নাই । গত চল্লিশ বৎসরে ভারতবর্ষ বিজ্ঞানে যতটুকু অগ্রসর হইয়াছে তাহ উৎসাহজনক ও আশাপ্রদ । তাহার বেশী কিছু নয়। বিজ্ঞানকংগ্রেসের উদ্যোক্তারা প্রাথমিক হইতে আরম্ভ করিয়া ছোট বড় সমুদয় বিদ্যালয়ে বিজ্ঞানশিক্ষা আবশুিক করিবার চেষ্টা করিলে বিজ্ঞানশিক্ষা, বিজ্ঞানচর্চ ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা বিষয়ে এদেশে কয়েক বৎসরের মধ্যে যুগান্তর উপস্থিত হইতে পারে। ভারতীয় মহিলা বৈজ্ঞানিক বিজ্ঞানকংগ্রেসের অধিবেশনে যে-সকল ভারতীয় মহিলা বৈজ্ঞানিক যোগ দিয়াছিলেন, তাহাজের নাম , দৈনিক কাগজে দেখিয়াছিলাম। র্তাহাদের মধ্যে বাঙালী মহিলার নাম খুব কম। আধুনিক সময়ে বিজ্ঞানচর্চার আরম্ভ বঙ্গে হইয়াছিল। ভারতীয় পুরুষ বৈজ্ঞানিকদিগের মধ্যে বাঙালী বৈজ্ঞানিকদিগের সংখ্যা, বঙ্গের লোকসংখ্যা বিবেচনা করিলে কম নহে। কিন্তু ভারতবর্ষীয় মহিলা বৈজ্ঞানিকদের মধ্যে বাঙালী মহিলা বৈজ্ঞানিক কম। ইহার কারণ কি ? একটা কারণ সম্ভবতঃ এই, যে, বঙ্গে কেবল মেয়েজের জন্ত সামান্য যে কয়টি কলেজ আছে, তাহাতে বিজ্ঞানশিক্ষার ব্যবস্থা সস্তোষজনক নহে, এবং বঙ্গে সকলের চেয়ে ভাল বিজ্ঞানাগরিবিশিষ্ট কলেজ প্রেসিডেন্সী কলেজে ছাত্রীদিগকে ভৰ্ত্তি করা হয় না । ইহাও হইতে পারে ধে বাঙালী মেয়ের অপেক্ষীকুত অধিক ভাবপ্রবণ এবং কাব্য ও ললিতকলা অধিক ভালবাসেন । কারণ বাহাই হউক, বিদ্যার কোন দিকে তাহাদিগকে অন্ত কোন অঞ্চলের মেয়েদের চেয়ে কম অগ্রসর দেখিতে আমাদের ভাল লাগে না । নদীসম্বন্ধীয় বিজ্ঞান বিষয়ে ডাঃ মেঘনাদ সাহার বক্তৃত৷ আমরা যত দূর জানি, আচাৰ্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় মহাশয়ের সপ্ততি বৎসর বয়ঃক্রম পূর্ণ হওয়া উপলক্ষ্যে যে গ্রন্থখানি