পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজপুত্র তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, বীরভূম ঘণ্টা-দুয়েকের মধ্যেই নরেনকে বাইসিক্ল চালনার মোটামুটি কৌশল এবং কসরৎ শিখাইয়া দিয়া বিশ্বনাথ বলিল—এইবার নিজে রোজ অভ্যাস করবি। দু-তিন দিনেই রাস্ত দিয়ে চলতে পারবি । নরেন বলিল—তুমি একবার সেই কসরৎগুলো দেখাও না বিশু-দা । বিশ্বনাথের আপত্তি ছিল না, জীবনে তাহার এদিকে শ্রান্তিও নাই, সে আপনার পুরানো রং-চটা বাইসিক্লখানা লইয়া উঠিয় দাড়াইল । নরেন আপত্তি করিয়া বলিল—ন, ন, বিশুদ, আমার নতুনখানা নাও । বিশু অভ্যাসমত রসিকতা করিয়া বলিল —উীচ্ছা ! *২-কথাটা আসলে আচ্ছ। রসিকতা করিয়া বিশু বলে, স্বাচ্ছা। নরেনের নূতন চকচকে সাইকেলখানা একপাশে সযত্নে রক্ষিত ছিল, বিশু নিজের পুরানো জীর্ণখানাতেই নরেনকে চাপাইয়া তালিম দিতেছিল। বলিয়াছিল—না, নতুন গাড়ী এখন খারাপ হয়ে যাবে। আর জানিস– পুরনো চাল ভাতে বাড়ে। আর উপকারীও খুব, সহজে হজম হয়। বিশ্বনাথের ঐ গাড়ীখানাতেই এ অঞ্চলের সাইকেলআরোহীর অন্তত শতকরা যাট জন আরোহণ-বিদ্য। আয়ত্ত ধরিয়াছে। o 擊 সে বলে—ইনি আমার মান্ধাতা—কীং মান্ধাতার ষাট * fর বছর পরমায়ু। যাক, বিশ্বনাথ নুতন গাড়ীখানা লইয়াই “.৫২ দেখাইতে আরম্ভ করিল। নানা ধরণের কসরৎ, • গড়খানা তাহার স্পর্শগুণে যেন জীবন্ত হইয়া উঠিল। বিশ্বনাথ * ভাবেই নিজেকে বিপন্ন করুক না কেন, লোহার গাড়ীখানা "ীব এবং একান্ত বিশ্বস্ত বাহনের মত তাহাকে পৃষ্ঠে লইয়া “নও তীরবেঁগে, কখনও বা ধীরে ধীরে চলিতেছিল। ] নরেন বিশ্বন্ধবিমুগ্ধ নেত্ৰে দেখিতেছিল। বিশ্বনাথ গাড়ী খানা থামাইয়া নামিয়া বলিল—নে। চল এইবার বাড়ী যাই । , কৃতজ্ঞচিত্তে নরেন বলিল—গাড়ীখানা আপনার কাছেই থাক না বিশু-দা, আপনি এখন চড়ে ঠিক ক’রে দেবেন। বিশু হাসিয়া বলিল-আচ্ছা! তার পর বলিল—ওরে বাপরে! তা হ’লে মান্ধাতা বুড়ো আমার রাগ করবে—আর পিঠেই নেবে না। এতেই হয়ত রাগ ক'রে বসে আছে— তোর গাড়ীটাতে চেপে কসরৎ ' দেখিয়েছি—হয়ত রাগ ক’রে বসে আছে । দেখবি !—বলিয়া সে নিজেরখানাতে চড়িবার উপক্রম করিল। গাড়ীখানা সত্যই নড়ে না, বহুকষ্টে যদি নড়িল তবে বিশ্বনাথ চড়িয়া বসিবামাত্র সেটা উণ্টাইম পড়িল। বিশ্বনাথ উঠিয়া, গায়ের ধূলা ঝাড়িয়া গাড়ীখানাকে তুলিয়া পরম আদর আরম্ভ করিল, বুড়ঢ়া আমার, মান যাও বেটা, রাগ মৎ করো বেটা। এস্ত কাম হাম আর নেহি করেঙ্গে । মান যাওঁ, মান যাও । গাড়ীটার হাণ্ডেলের উপরে গোটাকয়েক চুম্বনও সে ক্টাকিয়া দিল। গ্রামের মধ্যে পৌছিয়া সে নরেনকে বলিল— ফি নিয়ে আসবি বিকেলবেলা । নরেন তাড়াতাড়ি পকেট হইতে দুই বাক্স কাচি সিগারেট বাহির করিয়া দিয়া বলিল—আমি ভুলে গিয়ে" fছলাম বিশু-দা ! বিস্ত বলিল-আচ্ছ ! ও এ ধে ডবল ফি রে! অ্যাচ্ছা, অ্যাচ্ছা ! তা বেশ–দিচ্ছিস তুই —বলিতে বলিতেই সে একটা সিগারেট বাহির করিয়া মুখে গুজিল । নরেনকে বিদায় করিয়া বিশ্বনাথ গাড়ীতে চড়িয়া বসিল । - –এই ষে বাৰু দাদা ! ও বাবু দাদা ! --ত্বীচ্ছী ! কেরে আমার গরীব ভাই, পিছন থেকে টিকৃটিকির মত টক্‌টকৃ.আরম্ভ,করলে মাণিক । অনেক বেলা হ'ল,