পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফাস্তুন কোন সস্তান হইলেই মনে ভয় হয়—ভগবান যদি ইহাকেও কাড়িয়া লন। তাই তাহাকে ভাকিয় প্রার্থনা জানান হয়, তুমিই ইহাকে রক্ষা কর । প্রতিবার সস্তানের নামোচ্চারণ-প্রসঙ্গে ভগবানের চরণে এই প্রার্থনাই পেীfছতে ५ोUक । মৃতবৎসার মনে হয় ;–মায়ের স্নেহ ন পাইয়াই তাহার স্নেহের দুলাল, র্তাহার আদরের দুহিত অভিমানে কোল খালি করিয়া গিয়াছে। এবার আর তাহাকে ছাড়া হইবে না। তাই আবার ভূমিষ্ঠ হইবার সঙ্গে সঙ্গেই থাক বলিয়া অভ্যর্থনা করেন। দুর্তাগিনী রমণীর কোন পাপের ফলেই হয়ত তাহার পুত্ৰশোক। এ হয়ত র্তাহার পূর্বকৃত দুষ্কমেরই ফল। এরূপ চিস্তাণ্ড মধ্যে মধ্যে জননীর মনকে প্রপীড়িত করে । তাহারই ফলে ‘এককড়ি’, ‘দুকড়ি’ ‘তিনকড়ি প্রভূতি নামের উৎপত্তি। ষে-ব্যক্তি ব্যাঙ্কের টাকা ভাঙে আইনে তাহারই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হইতে পারে, কিন্তু সে যদি তাহার ঘরবাড়ী অন্যের নামে বেনামী করিয়া রাখে, তাহা হইলে সরকারের তাহাতে হস্তার্পণ করিবার উপায় থাকে নী। ‘এককড়ি "দুকড়ি’ ‘বেচারাম’ ‘কেনারাম’ প্রভূতি নামের মধ্যে এইরূপ আইন বঁfচাইবার চেষ্ট দেখা যায়। দুর্ভাগিনী জননী ভাবেন—আমার ,সন্তান বলিয়াই ভগবান ইহাকে কাড়িয়া লন, কিন্তু আমি যদি ইহার মাতৃত্বের অধিকার অপরের হস্তে তুলিয়া দিই তাহা হইলে আর তিনি ইহাকে গ্রহণ করিবেন না । তাই ভূমিষ্ঠ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নবজাত শিশুটিকে তিনি ধাত্রীহস্তে তুলিয়া দেন। পরে অবগু এক কড়া কি দুই কড়া কড়ি দিয়া ধাত্রীর নিকট হইতে তাহাকে পুনরায় ক্রয় করিয়া লন। কিন্তু যেহেতু মাতৃত্বের অধিকার একবার ধাত্রীকে দেওয়া হইয়াছে সেই হেতু অমুকের সস্তান বলিয়া বিধাতা তাহাকে আর হরণ করিতে পারেন না। এখন চিত্রগুপ্তের জন্ম-রেজিষ্টারীতে ঐ শিশুর মাতৃনামের স্থানে ধাত্রী-নাম লিখিত হইয়া গিয়াছে। আইন মানিয়া চলিতে হইলে উহার উপর তাহার কোন হাত নাই। তবে বাজার আইন এবং প্রজার আইন সকল সময়ে একরূপ ९६ नीं । & মানুষের মত দেবতারও স্বন্দর জিনিসের প্রতি বড় ԵԵտտֆ\3 নগমরহস্য ૧૦૧ লোভ । আবার স্বাহা কিছু কুৎসিত তাহার প্রতি তেমনই বিদ্বেষ । রসগোল্লা দেখিলে আমাদের জিহ্বা সরস হয় কিন্তু যদি কেহ বলিয়া দেয় উহা অনেক দিনের বাসি, পচিয়া দুৰ্গন্ধ হইয়া গিয়াছে, তাহা হইলে আর সেদিকে মন দিবার প্রয়োজন বোধ করি না। সস্তানের জননী ভাবেন, ভগবানের মনোভাব আমাদেরই মত । তাহারই ফলে ‘ফেলারাম’ ‘গুয়ে’ ‘মেথরা" প্রভৃতি নামের উৎপত্তি । কোন পাঠশালার গুরুমহাশয় একটি পড়ুধার নাম দিয়ছিলেন “নিমাই’ ; নিমাইয়ের এক সহপাঠী গুরুমহাশয়কে এক দিন তাহার কারণ জিজ্ঞাসা করিল। তিনি বলিলেন,— *আরে তা-ও জানিস না, ও যে আমাকে দিন একটি করিয়া নিমের দাতন আনিয়া দেয় ।” নিমাইয়ের সহপাঠী তৎক্ষণাং জিজ্ঞাসা করিল,—“গুরুমহাশয়, আমি যদি প্রত্যহ একটি করিয়া জামের দাতন আনিয়া দিই ?* গুরুমহাশয় আর কোন জবাব দিয়াছিলেন কি না জানি না। কিন্তু একথা সত্য ধে তাহার 'নিমাই’ নামকরণ অসঙ্গত হয় নাই। বস্তুত, 'নিমাই’ শব্দ ‘নিম’ হইতেই আসিয়াছে। মৃত্যুদেবতাও মামুষের মত তিক্ত প্রব্যের কাছে ধেষিবেন না—এইরূপ মনোভাব লইয়াই জননী সস্তানের দীর্ঘ জীবন কামনায় এইরূপ নাম দিয়া থাকেন। সাড়ে চারি শত বৎসর পূর্বে এক দিন শচীমাতাও নবজাত সন্তানের এই নামই দিয়াছিলেন। পল্পীগ্রামে ‘তিতারাম’ নামও শুনিয়াছি । অবস্থাবিশেষে মানুষ আবার সন্তান চায় না। ‘আন্নাকালী’, ‘ক্ষাস্তমণি’ প্রভূতি নামই তাহার প্রমাণ । কৌলীন্য প্রথার দুঃখময় ইতিহাসের সহিত এই নামগুলির কিরূপ ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ তাহা একবার চিন্তা করিয়া দেখুন। তাই বলি কাব্যের নাম নামধারীর পরিচয় । আর জীবন্ত মামুধের নাম তাহার সমাজের প্রতিবিম্ব । আজকাল তরুণ সমাজে নামের মধ্যাংশটি ছাটিয়া ফেলার রেওয়াজ হইয়াছে। শুনিয়াfছ জনৈক স্বনামধঙ্ক প্রবীণ সাহিত্যিকই নাক এইরূপ মধ্যপদলোপী নামের প্রথম প্রবর্তন করেন। শুধু তাহাই নয়, এখন যুক্তাক্ষরবিহীন স্বকোমল সুললিত নামেরও বহুল প্রচলন হইতেছে। ফলে কি হইয়াছে এবং কি হইতে পারে য়ে আলোচনা কচিসংসদেই হইয়া গিয়াছে—এখানে পুনরালোচনা নিরর্থক। কিন্তু