পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՊՅՅ প্রবাসী ১৩৪৪ তিনি স্বাধীনতাপ্রিয় ছিলেন । এই কারণে সরকারী শিক্ষাবিভাগে ভাল কাজ পাইবার সম্ভাবনা থাকিলেও তাহার চেষ্টা করেন নাই। কোথাও অস্কায় ও অত্যাচার দেখিলে তাহার প্রতিবাদ করিতেন। ষোল বংসর পূৰ্ব্বে, অসহযোগআন্দোলনের গোড়ার দিকে, কলেজ ষ্ট্রীট ও হারিসন রোডের মোড়ে কতকগুল সৈনিককে অকারণ পথিকদিগকে আঘাত করিতে দেখিয়া তিনি তৎক্ষণাৎ তাহার প্রতিবাদ করেন এবং তাহার ফলে নিজেও লাঞ্ছিত হন । ইহা তখনকার গবর্ণর লড রোনাল্ডশের গোচর হওয়ায় গবর্ণর তজ্জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন । মৈত্রেয় মহাশয় রাষ্ট্রনৈতিক আন্দোলনে যোগ দিতেন। “সঞ্জীবনী”র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তিনি ছিলেন । আগেকার আমলের কংগ্রেসে বহুবার প্রতিনিধিরূপে তিনি যোগ দিয়াছিলেন এবং শিক্ষাবিষয়ুক প্রেস্তাবসম্পর্কে প্রায়ই র্তাহাকে বক্তৃতা করিতে হইত। র্তাহার এই সব বকৃত কংগ্রেসের ভাল ভাল বক্তৃতার মধ্যে পরিগণিত হইত। র্তাহার ধৰ্ম্ম ও সাহিত্যবিষয়ক বক্তৃতাগুলি চিন্তার গভীরতা, ভাষার লালিত্য এবং অধ্যয়নের ব্যাপকতার পরিচয় দিত । তিনি ভগবভক্ত সাধুপুরুষ ছিলেন। ব্রহ্মমন্দিরে তাহার উপাসনা ও উপদেশ মৰ্ম্মস্পশী হইত। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী সাহিত্যের অধ্যাপক, পরীক্ষক, এবং সেনেট ও সিণ্ডিকেটের সভ্যরূপে তাহার সহিত তিনি বহু বৎসর যুক্ত ছিলেন ও তাহার সেবা করিয়াfছলেন । এক বার ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের কংগ্রেসে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরূপে বিলাত গিয়াছিলেন । তদ্ভিন্ন তিনি ব্রাহ্মধৰ্ম্ম প্রচারার্থও ইউরোপ ও আমেরিক গিয়াছিলেন । তথায় তাহার বক্তৃতা ও উপদেশ আদৃত হইয়াছিল। তিনি সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের সাপ্তাহিক মুখপত্র ইত্তিস্থান মেসেঞ্জারের দীর্ঘকাল সম্পাদকতা করিয়াছিলেন । র্তাহার অধীনে আমি সম্পাদকতা শিখিয়াছিলাম । তিনি জীবনে অনেক শোক পাইয়াছিলেন। ভদ্ব্যতীত তিনি অপরের শোককে নিজের শোক করিয়া লইতেন। পারিবারিক শোক ব্যতীত ষে ঘটনা তাহাকে সৰ্ব্বাপেক্ষ দুঃখ দিয়াছিল, তাহ সিটি কলেজের ছাত্রদের বহু বৎসর আগেকার সেই জান্দোলন যাহা রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রভাবে প্রবল হইয়া কলেজটিকে প্রায় বিনষ্ট করে । র্তাহার অনেকগুলি ইংরেজী রচনা পুস্তকের আকারে প্রকাশিত হইবার যোগ্য। তিনি সবগুলিকে ভাল করিয়া ঘষিয়া মজিয়া অনবদ্যরূপে প্রকাশ করিতে চাহিয়াছিলেন । কিন্তু তাহা করিয়া যাইতে পারেন নাই । “বিশ্বপরিচয়” শ্রমুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বৈজ্ঞানিক পুস্তক “বিশ্বপরিচয়” প্রথম প্রকাশিত হয় গত আশ্বিন মাসে । পৌষে ইহার দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হইয়াছে । চারি মাসের মধ্যে বৈজ্ঞানিক পুস্তকের দ্বিতীয় সংস্করণ বাংলা দেশে সাধারণতঃ হয় না। এই বহিখানির যে তাহা হইয়াছে, তাহা ইহার উৎকর্ষের পরিচায়ক । ইহার প্রথম সংস্করণের পরিচয় দিবার সময় ইহার বিষয়বস্তুর বিবরণ দিয়াছিলাম। এবারেও শ্রযুক্ত সত্যেন্দ্রনাথ বস্তুকে লিখিত পত্রের আকারে ভূমিকা আছে এবং তদ্ভিদ, পরমাণুলোক, নক্ষত্ৰলোক, সৌরজগৎ, গ্রহলোক, ভূলোক ও উপসংহার, এই ছয়টি অধ্যায় আছে। বৰ্ত্তমান সংস্করণে পুস্তকটি আড়াগোড়া সংশোধিত হইয়াছে । ইহা বালকবালিকাদের জঙ্ক লিখিত হক্টলেও আমরা ইহা হইতে জ্ঞান ও আনন্দ লাভ করিয়াছি।’ রবীন্দ্রনাথের ৭০ বৎসর বয়ঃক্রম পূর্ণ হওয়া উপলক্ষ্যে “গোল্ডেন বুক অব টাগোর" নামক ইংরেজী স্মারক গ্রন্থটির জন্য অনেক বিখ্যাত লোকের রচনা সংগ্ৰহ করিবার চেষ্টা হইয়াছিল এবং সংগৃহীতও হইয়াছিল। মনে পড়ে, অধ্যাপক মেঘনাদ সাহা তখন এই দুঃখ করিয়াছিলেন যে, রবীন্দ্রনাথ অন্য বহু বিষয়ে পুস্তকাদি লিখিয়াছেন কিন্তু বৈজ্ঞানিক কিছু লেখেন নাই। বৈজ্ঞানিক কিছুও এখন তিনি লিথিয়াছেন। বামরাউলীতে রেলওয়ে দুর্ঘটনা গত লক্ষয়ী মাসে এলাহাবাদের নিকটবর্তী বামরাউস ষ্টেশনে যে রেলওয়ে দুর্ঘটনা ঘটে, তাহ কয়েক মাস পূর্কেং বিহ টা দুর্ঘটনা অপেক্ষাও সাংঘাতিক ও ভীষণ বলিয়া বণিত হইয়াছে। তিনটা বোগি, যাহাতে সাধারণতঃ ২• ০৩° •