পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՊՆՅ সংঘর্ষ উপস্থিত হইল। ইহার ফলে পাশ্চাত্য প্রদেশে রাজতন্ত্র অধুনা প্রায় লুপ্ত হইয়াছে। যে দুই-চারিটি এখনও বর্তমান সেগুলি প্রকৃতপক্ষে রাজতন্ত্রের ছদ্মবেশী *Hoofto orato (Hereditary republics) করপ্রদান ও গ্রহণ এবং প্রজার হিতকর কার্ষ্য দ্বারা তাহার প্রতিদান এখন কোনওরূপে যন্ত্রচালিতের ন্যায় ( mechanically ) সম্পন্ন হয়। যদিও ইউরোপে মধ্যযুগ হইতে কোনও কোনও সভ্য-সমাজে ধৰ্ম্মসম্বন্ধীয় পার্থিব #Tofo ( Church 9 State ) owia fifth হইয়াছে, এবং কোন কোন আদিম-সমাজেও গ্রামপুরোহিত ও গ্রাম-মুণ্ড বা মণ্ডলের পদ পরস্পর বিচ্ছিন্ন হইয়াছে তবুও ইহাদের স্থায়ী ও প্রকৃত বিচ্ছেদ সম্ভাব্য নহে, কারণ উভয়ের উদ্দেশ্য সমাজের সমষ্টিগত ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ন্ত্রিত করিয়া সমাজের রক্ষণ ও কল্যাণ সাধন । এতদৰ্থে দুই রকমের নিয়মাবলী টিকিতে পারে না । এখনও সকল সমাজেই মন্দিরকে কেন্দ্র করিয়া প্রাণশক্তির অন্বেষণ বহুল পরিমাণে অকুস্থত श्ध्र । সভ্যতার ধৰ্ম্মভিত্তি অসত্য জাতির মৃগয়া ও কৃষিকাৰ্য্য, গৃহনিৰ্ম্মাণ ও গৃহপ্রবেশ হইতে আরম্ভ করিয়া সভ্য জাতির বিদ্যারম্ভ, ব্যবসায় আরম্ভ, গৃহারম্ভ, যুদ্ধারম্ভ প্রভৃতি সমস্ত কাৰ্য্যে, এবং সভ্য অসভ্য সকল জাতিরই জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ, নামকরণ, অন্নপ্রাশন, দীক্ষা, নবান্নভোজন প্রভৃতি ব্যক্তিগত ও সামাজিক সকল বিশেষ কাৰ্য্যই ধৰ্ম্মাহুষ্ঠানমূলক। ধৰ্ম্মকে কেন্দ্র করিয়া আদিম-সমাজে কলাবিদ্যা, শিল্প, ও সাহিত্যের উদ্ভব হয় এবং বহুকাল যাবৎ সভ্য সমাজেও ধৰ্ম্মই কলাবিষ্ঠা ও সাহিত্যের প্রেরণা প্রদান করিয়াছে। 4. এই প্রবন্ধে সময়াভাবে সংক্ষেপে ইঙ্গিত মাত্র করিবার,চেষ্টা করিয়াছি যে সভ্য সমাজের পরিণত সমাজ-নীতি, শাসন-তন্ত্র ও ধৰ্ম্মকৰ্ম্মের বিশিষ্ট মূলগুলির উন্মেষ আদিম-সমাজেই দেখা যায়। আর ধৰ্ম্মামৃষ্ঠানই ঐসব সমাজের ভিত্তি বলিয়া গণ্য হইতে পারে। প্রবাসী ఫి"983 আদিম অসভ্য সমাজের প্রাণশক্তি সঞ্চয়ের আদর্শ ছিল ধনধান্ত, স্বাস্থ্য, ঋদ্ধি ও সৌভাগ্য অর্জন ; তাহাদের ধৰ্ম্মাহুষ্ঠানের কাম্য ছিল শারীরিক মুখস্বাচ্ছন্দ্য । সমাজের প্রতিনিধি বা পুরোহিতের নির্দিষ্ট কৰ্ম্ম ছিল, প্রকৃতিনিয়ামক আস্তাশক্তির সহিত সমাজের যোগ স্থাপন দ্বার প্রাণশক্তির পোষণ ও বর্দ্ধন । ক্রমে সভ্যতার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে মুখের আদর্শ মার্জিত ও উন্নত হইল। ধৰ্ম্মানুষ্ঠানের প্রগাঢ় সামাজিকতার ও জড় উপকরণবহুলতার আংশিক পরিবর্তন ঘটিল ; ও ব্যক্তিগত আধ্যাত্মিকতা প্রকট হইল। ভোগমুখের পরিবর্তে বিশ্বপ্রাণের সহিত মানবাত্মার আধ্যাত্মিক যোগস্থাপন দ্বারা এক দিকে প্রকৃতির গূঢ়তত্বাবলীর আবিষ্কার ও অপর দিকে আত্মসত্ত উপলব্ধি ও ভগবৎ-সত্তা জীবনে মূৰ্ত্ত করিবার প্রচেষ্টা হইল। ষে সব ভাগ্যবান সাধক এই উভয়বিধ যোগসাধনার কোনও সাধনায় সাফল্য লাভ করিতে পারেন, র্তাহাদের দ্বারাই তাহাদের জাতির প্রতিষ্ঠা ও জাতীয় সভ্যতার পরিমাপ সুচিত হয় । হিন্দুসভ্যতার আদর্শ আমরা দেখিলাম যে, মানব আত্মপ্রসারের প্রচেষ্টায় জীবনের পরিপূর্ণতা লাভের জন্য পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের আবেষ্টনীর মধ্যে আবদ্ধ হয় ও ইহাদের শৃঙ্খলার জন্য বিধিনিয়মের উদ্ভাবন করে। এইরূপে আদিম উচ্ছ,স্থলত উত্তরোত্তর সঙ্কুচিত হইয়া আসে। সাধারণতঃ সভ্য সমাজে দেখা যায় যে মধ্যে মধ্যে দুই-চারিটি স্বাধীনচেতা, আদর্শবাদী ব্যক্তি পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে স্বাতন্ত্র্যের চরম আদর্শ কল্পনা করেন। র্তাহাদের মধ্যে দুই-এক জন হয়ত অরাজকতারও (anarchism-এর ) পোষকতা করেন। কিন্তু অধিকাংশ আদর্শবাদী, রাজশক্তির পরিবর্তে নৈতিক শক্তিদ্বারা নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রের কল্পনা করেন। হিংসাদ্বেষ-বিবর্জিত, সহযোগিত-বলে প্রেমের স্বৰ্গরাজ্য প্রতিষ্ঠা তাহীদের কাম্য। প্রাচীন ভারতে এই শ্রেণীর ব্যক্তিরা সন্ন্যাসীসমাজ গঠন করিতেন। এখনও এইরূপ আদর্শ সন্ন্যাসী একেবারে বিরল নহে। গুরু গোবিন্দের স্তায়—