পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

あち否 সভ্যতার অভিব্যক্তি ՊՆ6 এদের কাছেতে ধরা দিবে বলে আসে লোক কত শত। আর ইহারাও সকলকে ডাকিয়া বলেন,— আমার জীবনে লভিয়া জীবন জাগোরে সকল দেশ । এইরূপে তাহারা সৰ্ব্বসাধারণের জীবনে নিজ-জীবনের আস্বাদনে তৎপর। - সৰ্ব্বহীরা সৰ্ব্বত্যাগী হইয়াও ইহার সকলকে পান ; প্রতি জীবে শিব দর্শন করিয়া ব্যক্তিত্বের ও একত্বের চরমভাবে উপনীত হন ; “নমস্তুভ্যম নমোমহ্যম” করিয়া থাকেন। এইরূপ আপনভোল পুরুষসিংহ বাধাবন্ধের উদ্ধে থাকিয়াও স্বেচ্ছায় সমস্ত বিধিনিয়মের প্রতি শ্রদ্ধাবান হইয়া সমস্ত বিধি-নিয়মকে পূর্ণত প্রদান করেন । উপসংহার এইরূপে দেখা যায় যে মানব-জীবনের ক্রমবিকাশ at Porto-àfs (Law of Self-preservation) wiłł প্রণোদিত ও প্রথমাবস্থায় পরিচালিত হইলেও ক্রমে আত্মার সংজ্ঞা বিস্তার লাভ করিতে থাকে ; ও কোন কোন ক্ষণজন্ম পুরুষ দেশকালপাত্রের আবেষ্টনী অতিক্রম করিয়া বিশ্বমানবের সহিত একত্বাতুভূতির দিকে অগ্রসর হন। ক্ষুদ্র অহঙ্কারবুদ্ধি বিরহিত হইয়৷ ইহারা “ভূমৈব মুখম্নাল্পে মুখমস্তি" ইহা উপলব্ধি ও ভূমানন্দ আস্বাদন করেন। ত্যাগ ও সেবাই জীবনের পূর্ণতা লাভের মূলস্বত্র, এই সমস্ত ক্ষণজন্ম মহাপুরুষের জীবনই তাহার প্রমাণ । এই বর্ণগন্ধগীতময়, হাসি-ক্রন্দন-ভরা স্বষ্টির অন্তরালে যে মরণহরা মহান বিশ্বগীতি নিরস্তর ধ্বনিত হইতেছে তাহার এক বা একাধিক ছন্দ বা মূল স্বর এই সাধক প্রবরদের জীবন বীণায় ঝঙ্কত হয়। ধ্যানলব্ধ ঐশী বাণীর প্রেরণায় ও ঐশী শক্তির সাহায্যে ইহাদের মধ্যে কেহ ভাবরাজ্যে কেহ বা চিন্তারাজ্যে, কেহ কৰ্ম্মজগতে কেহ বা জ্ঞান ও ধৰ্ম্মজগতে স্বজাতির বা সমগ্র মানবজাতির উত্তোলন দও ( lever)স্বরূপ হন । এইরূপ মহাপুরুষগণ নিরত আনন্দময় কোষে বিচরণ করেন এবং স্থাতীয় সভ্যতার আদর্শকে অধিকতর পরিস্ফুট, উন্নত, উজ্জল ও প্রসার-যুক্ত করিয়া জাতি ও সমাজকে সভ্যতা-সোপানের এক বা একাধিক উচ্চতর স্তরে উন্নীত করেন। মানব-প্রকৃতিতে দেব ও পশু একাধারে সম্মিলিত । প্রকৃত সভ্যতার লক্ষণ কেবল বহিঃপ্রকৃতির উপর গুড়, স্থাপন নহে ; ব্যক্তিগত ও সমাজের পশুপ্রকৃতিকে বশীভূত করিয়া অন্তর্নিহিত দেবপ্রকৃতির স্ফুরণ ও আধিপত্য স্থাপন, এবং জীবাত্মার সহিত পরমায়ার, ও সমস্ত বিশ্বমানবের একত্ব স্থাপন,—ইহাই প্রকৃত স্বরাটু বা স্বরাজ্য লাভ । ইহাই ছিল প্রাচীন তারতের সভ্যতার আদর্শ। প্রাণের যে পরিপূর্ণতা লাভের জন্য মানব মুদিম অবস্থা হইতে অজ্ঞাতে বা জ্ঞাতসারে নিয়ত সচেষ্ট, এই একত্ববোধেই সেই পরিপূর্ণতার উপলব্ধি হয়। সেই একত্ব সম্পূর্ণ উপলব্ধি করিতে পারিলে ভাগ্যবান সাধক সমস্ত ‘বাধাবন্ধ’ ‘প্রথা-নিয়মে’র উদ্ধে উপনীত হন। তখন তাহার— দিকে দিকে টুটিয়া সকল বন্ধ ; মুরুতি ধরিয়া জাগিয়া উঠে আনন্দ, জীবন উঠে নিবিড় সুধায়ু ভaিযু । তখন জ্ঞানযোগের সাধক যোগযাগ, ভজনপূজন, সাধন-আরাধনা সমস্ত ফেলিয়। রাপিয়া জগং-হিত-ব্রতে জীবন উৎসর্গ করেন। তখন তিনি কৰ্ম্মযোগে ভগবানের সহিত যুক্ত হন। আর "যুক্ত হন সবার সঙ্গে, মুক্ত হয় সকল বন্ধ”। তখন, “এ জীবনে যা কিছু সুন্দর সকলি বাজিয়া উঠে সুরে,—তাহার পানে, তাহার পানে, তাহার পানে ৷” তাহার বাণী দেয় সে আনি সকল বাণী বহিয়া। হৃদয়ে এসে, মধুর হেসে প্রাণের গান গাহিয়৷ ৷ এই সব ভাগ্যবান সাধকের কথা ছাড়িয়া সাধারণ মানবের দিকে ফিরিলে দেখিতে পাই, অসভ্য ও আর্দ্ধসভ্য মানব নানা দেবতাতে যে বিভিন্ন রূপ ও সত্তা আরোপ করে, জ্ঞানালোকে আলোকিত সভ্য মানব সে সমস্ত দেব-দেবীকে একই অখণ্ড পরী-শক্তির বিভিন্ন প্রতীক বলিয়া উপলব্ধি" করেন । যে পাশ্চাত্য সভ্য জাতির এখনও তাহাদের সাধু বা সেন্টদের যুদ্ধ নিৰ্মাণ করিয়৷ ধূপ-দীপ প্রদান করেন ও হাটু গাড়িয়া আরাধনা করেন, তাহার। হিনীকে পৌত্তলিক বলিয়া অবজ্ঞা করিলেও সাধারণ হিন্দু দেখেন-- জলে হরি স্থলে হরি চন্দ্রে হরি সুয্যে হরি অনলে অনিলে হরি, হরিময় ভূমণ্ডল । শ্বেতাশ্বতর উপনিষদের ঋষির সঙ্গে আমরা বলি– মো দেবোইয়েী, ষে অঙ্গ, যে বিশ্বং ভুবনমাৰিবেশ ষ ওষধিযুষে বনস্পতিমুর্তস্মৈ দেবায় নমোনমঃ