পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

をち畜 তাহাকে এক জন না রিলে রাবারী কিছুই করা হয় না। টিনি, চিনি কাজে বাগড়া দিতে দিব্য পারে, মায়ের কাজে সাহায্য করিবার যোগ্যতা এখনও তাহাজের হয় नाझे । কাজেই টিনি, চিনি এখন রাধীর সঙ্গে পুকুরে স্নান করিতে যায়। স্নান তাহারা নিজেরাই করে, রাধী তাহাদের গা হাত রগড়াইয়া দেয়, চুল মুছিয়া দেয়, কাপড় গামছা কাচিয়া আনে। মল্লিক-গৃহিণী ততক্ষণ থোকাকে কোলে কাখে করিয়াই কোনমতে রান্না সারিয়া ফেলেন । বড় ছেলে ইহার মধ্যে খাইয়া স্কুলেও চলিয়া যায়। তাহার পর টিনি, চিনি ফিরিয়া আসিলে তাহাদের ভাত বাড়িয়া থাইতে বসাইয়া দিয়া, খোকাকে রাধীর কোলে দিয়া তিনি স্নান করিতে যান । টিনি, চিনি ডাল-ভাত ছড়াইয়া, ঝগড়া মারামারি করিতে করিতে থাইতে থাকে, রাধী দাওয়ার নীচে ছায়ায় বসিয়া থোকাকে ঘুম পাড়াইতে থাকে। গৃহিণী ফিরিয়া আসিলে ঘুমন্ত খোকাকে তাহার .হাতে সমর্পণ করিয়া সে বাড়ী চলিয়া যায়। আবার বেলা গড়াইলে বাসন মাজিতে আসে । 象 আজও টিনি, চিনি বেলা এগারোটা নাগাদ স্নান করিতে চলিয়াছে। এতক্ষণে রোদটা বেশ খটখটে হইয়া উঠিয়াছে, নীলাকাশের উপর স্বচ্ছ কুয়াসার আবরণটা আর দেখা যায় না। মেয়ের এতক্ষণ দোলাই মুড়ি দিয়া উঠানে বসিয়াছিল, এখন সেগুলি খুলিয়া ফেলিয়া স্বান করিতে চলিয়াছে। চুল খোলা, তেলে জবজব করিতেছে, নাক, কপাল, ঘাড় বহিয়া তেল গড়াইয়া পড়িতেছে। মল্পিক-গৃহিণী সেকেলে মানুষ, নারিকেল তেল, সরিষার তেল দুইয়েরই খরচ তাহার ঘরে খুব বেশী । শীত-গ্রীষ্মনির্বিশেষে মাথায় গায়ে বেশ করিয়া তেল মাখা বাড়ীর সকলেরই অভ্যাস । মৃণাল বাড়ী আসিলে মামীমা তাহাকে অনুযোগ দেন, “কি সব বিবিয়ানাই শিখেছিল বাছ, আমন যে কাগের ডানার মত কালো একরাশ চুল, তাও তেল না মেখে মেখে কটা ক’রে ফেলেছিল।” টিনি, চিনির পিছন পিছন রাধী চলিয়াছে, হাতে তাহার দুখানা ডুরে শাড়ী, লাল• চৌখুপি একখানা গামছা, আর ছোট ছোট দুটি র্যাপার। স্বানের পর মাটির বাস। ማUግ বড় শীত করে, তখন র্যাপার গায়ে না জড়াইলে চলে ঘাটে তখন সবে মহিলা-সমাগম আরম্ভ হইয়াছে । এত সকাল সকাল স্নান করিতে আসিবার অবসর বড় কাহারও হয় না, তবে ছোট ছেলেমেয়েরা এই সময় হইতে ভিড় করে, সঙ্গে এক জন করিয়া বয়স্ক কেহ আসেন । টিনি, চিনি মল বাজাইয়া নাচিতে নাচিতে ঘাটের সিড়ি দিয়া নামিতে লাগিল । রাধী পৈঠার উপর এক ধারে বসিয়া আকাশ পানে তাকাইয়া তাহাদের খবরদারি করিতে লাগিল । সব চেয়ে নীচের ধাপে বসিয়া একটি বউ একটা ছোট মেয়ের পিঠে কষিয়া গামছা ঘষিতেছিল। টিনিকে দেখিয়া ঘোমটাটা একটু ঠেলিয়া খাটাে করিয়া দিয়া ফিক করিয়া হাসিয়া ফেলিল । বয়স বেশী নয়, ষোল-সতের বছরের হইবে। চোখ দুইটা ছোট, নাকটাও বিশেষ উচু নয়, তবে রংটা ফরসা বলা চলে । বউ বলিল, “আমাদের টিনিরাণী ষে গো ? মা কখন আসবে চান করতে ?” চিনি বলিয়া উঠিল, “মা আসবে সে-ই বারোটার সময় ।” টিনি বলিল, “আমরা গিয়ে ভাত খাব খোকন ঘুমৰে তবে ত ?” বউ বলিল, “আজ একটু তাড়াতাড়ি আসতে বলিস্, বলবি যে চক্কোক্তিদের বউ সকাল সকাল আসতে বলেছে, একটা কথা আছে।” “বলব গো” বলিয়া ঝপাং করিয়া দুই বোনে জলে কাপ দিয়া পড়িল । ইহারা সাতার কাটে মাছের মত, জল পাইলে তাহাদের আর শীত গ্রীষ্ম জ্ঞান থাকে না। খানিক বাদে রাধীর চীৎকারে তাহাদের আবার ঘাটে আসিয়া ভিড়িতে হইল। তখন রাধী বেশ করিয়া গামছা দিয়া তাহদের গা হাত পা রগড়াইয়া দিল । অতঃপর . গোটাছুই ডুব দিয়া গা মুছিয়া, কাপড় ছাড়িয়া তাহার ফিরিয়া চলিল। রাধী তাড়াতাড়ি তাহদের গায়ে র্যাপার জড়াইয়া দিল । o টিনি, চিনি গিয়াই, মাকে সংবাদ দিল, “মাগো,