পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চৈত্র ব্রহ্ম ত নিত্যমুক্ত, অমর, আছেনই। জীব বন্ধন থেকে, মৃত্যু থেকে, মুক্ত হয়ে, অমর হবে, এই হচ্ছে ব্রহ্মসাধনের লক্ষ্য। জীবের মুক্তি, অমরত্বপ্রাপ্তি, এখানে কোথায় ? এখানে জীবের জীবত্ব গেল। জীবের জীবত্ব যাওয়াতে কাৰ্য্যতঃ তার বিনাশই হ’ল । র্যারা এরূপ অমরত্ব লাভের আশায় সন্তুষ্ট তাদের আত্মপ্রতারিত ছাড়া আর কি বলব ? যা হোক, এখন প্রকৃত অমরত্বের আলোচনা করি । ব্রহ্মর্ষিগণ জীবের সুষুপ্তিতে লয়ের আভাস পান। তেমনি জাগরণে স্বষ্টির আভাস এবং জাগ্রৎ জীবনে স্থিতির আভাস পান। তথাস্তু। কিন্তু যে লয় থেকে স্বষ্টি হয়, সে স্বযুপ্তি থেকে জাগরণ হয়, তা ত একীভাব, একত্বের অবস্থা, নয়। আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ ব্যক্তিত্ব নিয়ে, নিজ নিজ ভাব ও অভাব নিয়ে, নিজ নিজ বিশেষত্ব নিয়ে, সসীমত্ব নিয়ে, জাগ্রত হই। কারও সঙ্গে কারও মিশ্রণ হয় না ; অসীমের সঙ্গেও আমাদের ভেদ বা ভেদাভেদ অব্যাহত থাকে। এই বিশিষ্টতা ও ভেদাভেদ ব্রহ্মের নিত্য জ্ঞানে বর্তমান না থাকলে জাগ্রতে, স্বষ্টিতে, তা ব্যক্ত হ’তে পারত না । সুতরাং এখান থেকেই নির্বিশেষ অদ্বৈতবাদের ভ্রম দেখা যাচ্ছে। ব্রহ্ম অনন্ত বটেন ; র্তার বাইরে, তার অতিরিক্ত, কিছু নেই বটে, আর এই অর্থে তিনি অদ্বৈত বটেন ; কিন্তু তার অনন্ত, फाटेक्षङ স্বরূপের ভিতরে সাস্তের, দ্বৈতের, স্থান আছে। এই সাস্ত, এই দ্বৈত, তাথেকে অচ্ছেদ্য, অবিভাজ্য, অথচ তীথেকে fèR ( distinct, distinguishable ) I Trg-szszegg মধ্যে এই আপাত-বিরুদ্ধ কিন্তু প্রকৃত পক্ষে অবিরুদ্ধ ভেদাভেদ সম্বন্ধ রয়েছে। পরস্পরের মধ্যে এই ভেদাভেদ সম্বন্ধ না থাকলে স্বাক্ট, স্থিতি, লয়, কিছুই হ’তে পারত না। বিশ্ব ত ব্রহ্মের নিত্য জ্ঞানে নিত্যই রয়েছে। এ’কে স্বষ্টি করার অর্থ একে ছাড়া। ‘স্বজ ধাতু ছাড়া বুঝায়। বিশ্বকে ব্যক্ত করা, নিজ থেকে ভিন্ন কোন সসীম জ্ঞানের কাছে এ'কে প্রকাশিত করাই এ’র স্বষ্টি । স্রষ্টার সঙ্গে ভেদাভেদযুক্ত সসীম জ্ঞানবস্তু না থাকলে হৃষ্টি হ’তে পারে না । তার বা তাদের জ্ঞানেই স্রষ্টা বিশ্ব ব্যক্ত করেন, অর্থাৎ নিজ রূপ, স্বরূপ প্রকাশিত করেন, আর নিজের সঙ্গে তাদিগকে সজ্ঞান যোগের দিকে অাকর্ষণ করেন । বিজ্ঞান, দর্শন ও ধৰ্ম্ম odeسيt কার্ধ্যের কারণ খুজতে গিয়ে, নিজ নিজ কৰ্ম্মপ্রবৃত্তি পরীক্ষা করতে গিয়ে, আমরা এই অতি যুক্তিযুক্ত কারণ-তত্ত্বে উপনীত হই। এ-বিষয়ে আধুনিক দার্শনিক-প্রবর GRO*I*E Philosophy of Religionaa èrati, অনুবাদ থেকে কিঞ্চিৎ উদ্ধার করছি। তিনি বলছেন,— “The Holy Spirit is eternal love. When we say. God is love, we are expressing a very great and true thought..... For love implies a distinguishing between two, and these two are, as a matter of fact, not distinguished ( that is, not separated ) afrom one another. Ilove, this sense of being outside of myself, is the feeling and consciousness of this. identity. My self-consciousness is not in myself, but in another ; but this other, in whom alone I find satisfaction and am at peace with myself....This. other, just because it is outside of me, has its selfconsciousness in me” (Vol. iii, pp. 10, 1] ). হেগেলের কথাগুলির মৰ্ম্ম এই— পবিত্ৰাত্ম। নিত্য প্রেম । “ঈশ্বর প্রেমময়" এই তত্ত্ব অতি মহৎ ও সত্য । কিন্তু প্রেম বস্তুটা বোঝা চাই । প্রেমে অন্ততঃ দু-জন বুঝায়, এমন দু-জন যারা ভিন্ন হয়েও অভিন্ন, অবিভাজ্য। আমি ষাকে ভালবাসি তাকে আমার বাইরে ভাবি অথচ তার সঙ্গে নিজেকে এক ব'লে বোধ করি । সে আমার বাইরে বলেই, আম! থেকে ভিন্ন বলেই, তার আত্মবোধ আমাতে। যার প্রকৃত প্রেম আস্বাদন করেছেন, পরকে আপন ব’লে অনুভব করেছেন, কেবল র্তারাই এসব কথার সত্যতা উপলব্ধি করবেন । যারা একান্ত বহির্মুখী, ভাবসাধন যাদের নেই, কেবল গুস্ক বুদ্ধি নিয়েই যারা ব্যস্ত, তাদের পক্ষে এসব কথার মৰ্ম্মগ্রহণ অসম্ভব । ষাহোক, আমরা এ-পর্য্যন্ত যেখানে এসেছি সেখানে অমরত্বের কোনও আভাস পাচ্ছি কি না দেখা যাকৃ। যারা কেবল একটা বাহাজগৎ,—দেশে বিস্তৃত, কালে প্রবাহিত, একটা জগৎ— মানে, আর যে এই জগৎকে জানছে তার সঙ্গে এ’র কোন অচ্ছেদ্য সম্বন্ধ দেখে না, তারা স্বভাবতঃ বিশ্বাস করে ষে জগৎ অসংখ্য পরিবর্তনের মধ্যেও স্থায়ী, কিন্তু জগতের জ্ঞাতা দেহপাতের সঙ্গে সঙ্গেই মরে যাবে। কিন্তু আপনারা শুনেছেন যে ঔপনিষদ ঋষিরা সকলেই বলেন, “সৰ্ব্বং খৰিদং ব্ৰহ্ম”—নিশ্চয় এই সমস্ত জগৎ ব্রহ্ম, “অয়মাত্মা ব্ৰহ্ম"--এই আত্মা ব্রন্থ। অয়মাত্মা অর্থাৎ জীবাত্মা ব্রহ্মের