পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৯২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

も*8*。 পরে তোর বিয়ে। মা হয়ে মেয়ের সঙ্গে এই মিথ্যা প্রবঞ্চনা করতে কি কম ব্যথা পেয়েছি মনে করি, নইলে বিয়ে যে ওর হবে না তা না বোঝে কে ? নিজের মেয়ে হলেও সমাজে ওর দাম যে কতটুকু তাত বুঝি। তাছাড়া কাণ খোড়া একটা যার তার হাতেও যখন দিতে পারব না । খুড়ীমা থামলেন। আমি চুপ ক’রে বসে রইলাম । খুড়ীমা পুনরায় কি বলতে যাচ্ছিলেন কিন্তু সহসা টুমুর উচ্চকণ্ঠে তার বক্তব্য চাপা পড়ে গেল। টুচু প্রশ্নের পর প্রশ্ন ক'রে চলেছে—কাকে চাই-বাবাকে { আপিসে। দাদা ? কলেজে। বড়দাদা ? আমি ডেকে ८दि न । খুড়ীমার মুখের প্রতি দৃষ্টি ফেরাতেই তিনি মুখে একটু হাসির ভাব দেখিয়ে বললেন—একবার দেখে আয় ত বাপু, আবার কার সঙ্গে বিভ্রাট বাধিয়ে তুলেছে। কিন্তু বাইরে গিয়ে টুচুর সাক্ষাৎ পাওয়া গেল না, এরই মধ্যে সে অদৃপ্ত হয়ে গিয়েছে। খুড়ীমাকে সংবাদটা জানালাম । খাওয়া-দাওয়ার পরে দিবানিদ্রার আয়োজন করছিলাম, হঠাৎ টুচুর আবির্ভাব হ’ল, মুখে তার অনর্গল কথা—নেবুপাতা করমচা যা বিষ্টি দূরে যা—দূরে যা আ আ...বিষ্ট নেমেছে বড়দাদা। চেয়ে দেখি টুম্ন ব্যথিত দৃষ্টিতে আকাশের দিকে চেয়ে আছে । আমার সাড়া পেতেই টুথ একটু যেন ব্যথিত কণ্ঠে বললে—বিকেলবেলা বেড়াতে নিয়ে যাবে কি ক’রে ? বৃষ্টিকে দূর ক’রে দেবার আয়োজন ওর এই জন্য, কথাটা এতক্ষণে আমার কাছে পরিষ্কার হ’ল । ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, লক্ষ্মীর মৃদ্ধ আহানে উঠে বসলাম --বেলা গড়িয়ে গিয়েছে, বড়দা বেড়াতে যাবেন চলুন। সৰ্ব্বপ্রথমে আমার টুমুর কথা মনে হ’ল অথচ এদের কাছে তার বিষয় উত্থাপন করতে আমার মন সরছিল না । এরা কেউই টুচুকে চায় না । তার সম্বন্ধে এদের এই অমুদার ভাব পীড়াদায়ক । বিকেল বেলার এই নির্শ্বেঘ স্বচ্ছ আকাশ আমাকে. বারে বারে টুচুর ব্যথিত মুখখান স্মরণ করিয়ে দিচ্ছিল। তাকে বঞ্চিত ক’রে এদের নিয়ে আমার এই অভিধানকে মন কিছুতেই মেনে নিতে চাইছিল না। আজকের এই ঝরঝরে তাবটি ছয়ত ঐ অবহেলিত মেয়েটারই ঐকাস্তিক প্রার্থনার ফল। অথচ শেষ পৰ্যন্ত ভূকেই পড়তে হবে ফাকিতে। । লক্ষ্মী পুনরায় বললে—উঠে পড়ুন বড়দ, এর পরে টুঙ্ক প্রবাসী SNご88 এসে গোল বাবাবে ।" রবিদার বাড়ী লুডো নিয়ে মেতে রয়েছে, এই বেলা চলুন। • - টুম্বর হয়ে খানিক ওকালতি করবার লোভ সম্বরণ করতে পারলাম না। কথাটা যখন লক্ষ্মীই তুলেছে। একটু হেসেই বললাম—এসেই যদি পড়ে না-হয় সঙ্গে নেওয়া যাবে । * লক্ষ্মী একটু উষ্ণ হয়ে উঠল, ওকে নিয়ে কোথাও যেতে আমাদের লজ্জা করে। না-আছে কথার ছিরি, না-আছে চলবার ছিরি, একেবারে অজবোকা । মিথ্যে ওকে নিয়ে ঝঞ্চাট বাড়াবেন না। ভাবছিলাম, এ কি লক্ষ্মীর হিংসা না অন্ত কিছু। ছোট বোন ত, সে হোক না বুদ্ধিহীন, হোক না ওদের চেয়ে আলাদা, তাই ব’লে প্রতি পদে পদে ওর অধিকার এমন নিষ্ঠুর ভাবে লাস্থিত হবে কেন ? অামার মনোভাব তিক্ত হয়ে উঠল কিন্তু মুখে যথাসম্ভব কোমলতা এনে প্রশাস্ত সংযত কণ্ঠে বললাম—টুমুকে আমি কথা দিয়েছি, তাকে আজ কোনমতেই বাদ দেওয়া চলবে না । , লক্ষ্মী হয়ত প্রতিবাদ করবার জন্তই মুখ তুলেছিল কিন্তু তাৰে থামিয়ে দিয়ে আমি বললাম—তুমি রাগ ক’রো ন অথবা না ভেবে প্রতিবাদও ক’রো না । আমি জিজ্ঞেস করি টুকু সব দিক দিয়েই তোমাদের দয়ার পাত্রী নয় কি ? সব চেয়ে বেশী দাবি যে ওর আমাদের কাছে এ-কথাটা ভুলে যাও কেন ? 饑 লক্ষ্মীর মুখের ভাব আষাঢ়ের মেঘের মত ভারী হয়ে উঠল। লক্ষ্য করলাম কিন্তু-কথা বললাম না । বলবার হয়ত অনেক ছিল, কিন্তু নিজের বক্তব্য নিজেরই কানে হিতোপদেশের লম্বা বক্তৃতার মত শোনাচ্ছিল, তা ছাড়া ওরা যখন আমাকে সহজ ভাবে গ্রহণ করতে পারছে না তখন মিথ্যা ওদের অসন্তুষ্টির কারণ হই কেন ? লক্ষ্মী গুম হয়ে ব’সে রইল এবং খানিক পরে মন্থর পদে সারা দেহে ও মনে এক অসন্তুষ্টির ভাব নিয়ে স’রে পড়ল । আমি কিন্তু আমার কথার খেলাপ করি নি। সেদিনের সন্ধ্যাটা আমার টুকুর সঙ্গেই মুখর হয়ে উঠেছিল। একটা সরল সহজ সজীবতায় প্রাণ পেয়ে ছিল , যে আনন্দ টুচুর সঙ্গে হাল্কা হাসি গল্পে পেয়েছিলাম তা হয়ত" লক্ষ্মী কিংবা অপরাপর ভাইবোনদের কাছ থেকে পেতাম না। টুচু মৌলিক, ওরা সব অনুকরণ। 籌 দিন কেটে যাচ্ছে। বর্তমানের স্থায়ী আস্তান আমার