পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৯২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Съв কাকার বাড়ীতেই। লক্ষ্মীর বিয়ে পৰ্য্যন্ত এই ব্যবস্থাই পাকা। লক্ষ্মীর আজকাল রীতিমত পরিবর্তন ঘটেছে, পোষাকে-পরিচ্ছদে চলায়-বলায় । যখন-তখন কণ্ঠে ওর স্বর খেলে যায়। ওর সব কাজেই একটা নবীন উৎসাহের মত্ততা। সম্মুখে ওর নূতন জগৎ, জীবনে ওর পরিবর্তনের . মুর ঝঙ্কত হয়ে উঠেছে । মন ওর বেগবান উদার। টুমুর প্রতিও ঔদার্ষ্যে কৃপণতা নেই। তাই আজকাল প্রায়ই টুমুকে দিদির শাড়ী পরে উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠতে দেখা যায়। এই অপ্রত্যাশিত প্রাপ্তিতে টুকু একেবারে দিশেহারা হয়ে গিয়েছে। ধুই এবং নীলাকে সে জানিয়ে দিয়েছে তার বিয়ের সময় সে তার সবচেয়ে মূল্যবান শাড়ীগুলো ওদের দিয়ে দেবে, আর ফেরত নেবে না। ধুই এবং নীলা মুখ টিপে টিপে হেসেছিল। টুম্ব অতটা তলিয়ে কোন দিনই বোঝে না। সে তীব্র বেগে মাথা নেড়ে বলে—মিথ্যে নয়, সত্যি তোদের আমি দিয়ে দেব । পরে পুনরায় অপেক্ষাকৃত মৃদু স্বরে বললে—কাউকে বলব না—চুপি চুপি দিয়ে দেব। টুচু হি হি ক’রে হাসতে লাগল । এ তার আত্মপ্রসাদের হাসি । so 據 جية আমি নিঃশব্দে ওদের কথোপকথন শুনছিলাম। টুচু আমাকে এতক্ষণ লক্ষ্য করে নি, কিন্তু সহসা আমার দিকে চোখ পড়তেই হেসে গড়িয়ে পড়ল এবং পরমুহূর্তেই মাটি কঁাপিয়ে দ্রুত প্রস্থান করলে। ধুই এবং নীলা এতক্ষণ যদিই বা চুপ ক’রে ছিল কিন্তু টুচু চলে যেতে একযোগে হাসতে লাগল। নীলা বলে, টুকুট কি বোকা... মাগো— টুক্ষর পক্ষে বেশীক্ষণ গা ঢাকা দিয়ে থাকা সম্ভব হ’ল না। বিশেষ ক’রে দিদির শাড়ী প’রে তাকে কি চমৎকার মানিয়েছে তা ওর বড়দাদাকে না দেখালে কখনও চলে ! তার ওপর খোপায় আজ আবার গাদাফুল গু জেছে—পায়ে একটা স্যাগুলিও উঠেছে। টুমু খানিক আমার পাশে দাড়িয়ে থেকে হঠাৎ হেসে উঠল—হাসিটা ওর কারণ-অকারণের ধার ধারে না, তবুও মুখ তুলে চেয়ে দেখি–4সম্মুখের বড় আয়নায় নিজের প্রতিবিম্ব দেখে সে উচ্ছসিত হয়ে উঠেছে। টুম্ব আঙুল দিয়ে আয়নায় নিজের প্রতিবিম্ব দেখিয়ে দিয়ে বললে—সুন্দর । পুনরায় এক পশলা নিলঙ্কোচ হালি। টুম্বকে সতুই আজ স্থার দেখাচ্ছে । টুকু বললে—দিদি আমাকে ভালবাসে জান বড়দাদা ? টুম্ব যেন কথাটা বলে অত্যন্ত লঙ্গ পেয়েছে এমনি ভাবে ঘাড় কাৎ ক’রে যুদ্ধ মৃদ্ধ হাসতে লাগল। ਬਾਵੂਬੱਝ Ե-Յծ . আমি অন্তমনস্ক হয়ে পড়েছিলাম—কত সামান্তে এই মেয়েটাকে খুশী করে তোলা যায় অগ্নচ কি কুপণ, কি অমুদার আমাদের সংসারের রীতিনীতি । টুচু পুনরায় কথা ক’য়ে উঠল—তুমি এমনি একটি কাপড় আমায় কিনে দেবে বড়দাদা ? ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানালাম । এমন কত কথায় সম্মতিস্থচক মাথা নেড়েছি, কিন্তু আমার হাত দিয়ে আজ পৰ্য্যন্ত কোন কিছুই টুমুর কাছে পৌছয় নি অথচ সে-কথা ওর মনেও নেই, নইলে এমনি ক’রে ওর বহু প্রার্থনা আমার দরবারে এসে মিথ্যা মাথা কুটত না। "নিত্য নূতন ওর আকাঙ্ক্ষা, কিন্তু না-পাওয়ার জন্য ক্ষোভ নেই— কোন দুঃখ নেই। মুখ ফুটে ‘দেব বলাতেই ও চরিতার্থ হয়ে যায়। টুচুকে সামান্ত কয়টা মাসেই আমি আয়ত্তে এনেছি। ওকে বুঝতে আমার কষ্ট হয় না। লক্ষ্মীর বিবাহ-দিন আগতপ্রায়। আত্মীয়-পরিজনে বাড়ী ভ’রে গিয়েছে। রকমারি মনোবৃত্তির এক-একটি জীবস্ত প্রতীক। নানাবিধ আলোচনায় বাড়ীময় একটা আবেগময় প্রতিধ্বনি, শব্দের পর শব্দের তরঙ্গ, রংবেরঙের শাড়ীর ঝলকানি। বড় বড় আয়োজনে প্রয়োজনের মাত্রাও বহু রূপে দেখা দেয় এ-অভিজ্ঞতা টুমুর নেই। যে অবস্থার ভিতর ওর জীবনের এতগুলি বছর কেটে গিয়েছে তার সঙ্গে বর্তমানের কোন যোগ নেই। টুমুর বোবা মন হতভম্ব হয়ে গিয়েছে—এরই নাম বিবাহ। টুকু যেন মনে মনে খুশী হয়ে উঠেছে। তার মুখ দেখে এবং প্রশ্ন শুনে আমার তাই মনে হ’ল। তার দিদিকে ঘিরে মেয়েরা কত রকমের হাসিঠাট্টা করছে—তাকে নিয়েই যে সকলের বর্তমান উৎসব তা বোধ করি টুকু কতকটা আন্দাজ করেছে। তার বিয়েতেও এমনি আলো জলবে কিনা... এমনি বাজন.এমনি জনসমাগম হবে কিনা এ-প্রশ্ন টুকু আমায় বহুবার করে গিয়েছে। এর পরে যে টুক্ষর বিয়ে এ-কথাটা সে ভোলে নি বরং একটা অনাগত আনন্দ ও পুলকে সে চঞ্চল হয়ে উঠেছে। ক্ষণে ক্ষণে অন্যমনস্কের মত কি ভাবে, ডেকে জিজ্ঞেস করলে টুকু তার স্বভাবসুলভ উচ্চ হাসিতে প্রাণবস্ত হয়ে ওঠে, কিন্তু মনের কথা প্রকাশ করতে পারে না। টুচুর ভাষা নেই। ওর ভাবভঙ্গী ভাষার চেয়ে স্পষ্ট ; • চোখ মেলে তাকালেই উপলব্ধি করা যায় । to -- লক্ষ্মীর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। কাজের ভিড়ে টুচুকে আজ একবারও চোখে দেখি নি, " নিজের মনে হয়ত কোথাও চুপ করে বসে আছে কিংবা বিয়ের স্বপ্নে তন্ময়