পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৯২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*億の প্রবাসী SNరి83 হয়ে আছে। কিন্তু পরদিন এক মুহূর্ভের জন্তও টুকে লক্ষ্মীর কাছছাড়া হতে দেখি নি, লক্ষ্মীর পায়ে পায়ে ঘুরে বেড়িয়েছে। বার-কয়েক কাছে ডেকেছি, কিন্তু টুম্ব সাড়া দেওয়া আবশ্যক মনে করে নি। অথচ লক্ষ্মী চলে ধাওয়ার পর ও নিজে থেকেই আমার কাছে এসে দাড়াল। একটু হেসে বললে—দিদি চলে গেছে বড়দাদা। টুচুর মুখে হাসি থাকলেও চোখে জলের অভাব ছিল না। ও পুনরায় বললে--বিয়ে ভাল না—কিন্তু মুখে সে বিয়ের সম্বন্ধে বিরুদ্ধ রায় দিলেও নিজের বিষয়ে সে অস্বার্তাবিক সচেতন। টুম্ব আজকাল লুকিয়ে লুকিয়ে নিজের চেহারা আয়নায় দেখে। শাড়ীটা রকমারি ক’রে ঘুরিয়ে পরবার চেষ্টা করতেও মাঝে মাঝে লক্ষ্য করি। বাপের কাছে অত্যন্ত ভয়ে ভয়ে এক জোড়া হিল-তোলা জুতার জন্য আবেদন জানায়। সোজাস্বজি প্রত্যাখ্যাত হয়। টুকু হাসে কিন্তু পুনরায় তার আবেদন পেশ করে না ; হয়ত মনেও থাকে না । আমি টুম্বর হয়ে স্বপারিশ করতে গিয়ে বিফল হয়েছি। কাকা বলেন–মিথ্যে খরচ করবার মত পয়সা তার নেই। যার গতিবিধি ঘরের মধ্যে সীমাবদ্ধ, তার প্রয়োজনও সেই ভাবের হওয়া উচিত। প্রয়োজনের জন্যই ব্যয় করা, ব্যয় করার জন্য প্রয়োজন নয় । হয়ত তাই—আমি নীরব রইলাম এবং মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম যে, টুম্বর সম্বন্ধে আমি আর ভবিষ্যতে কোন কথাই বলব না । নিজে আমি অক্ষম । আমার কথাও তাই মূল্যহীন। কিন্তু আমার বক্তব্য আর বেশী দূর টেনে চলব না। আমার নিজের মধ্যেও একটা অবসাদ দেখা দিয়েছে । তাছাড়া এখানকার মেয়াদ আমার শেষ হয়ে গেছে। কাকা ঠিকই বলেছেন, প্রয়োজনের জন্যই আয়োজন, আমার প্রয়োজনও শেষ হয়ে গেছে। আমি বিদায় নিলাম । এখান থেকে একেবারে বিদায় নিতে পারলে বোধ করি ভাল ছিল, কিন্তু তা সম্ভব হয় নি। সম্ভব হয় নি বলেই আমার এই কাহিনীর অবতারণা। ৰাওয়া-আসাটা ক্রমশই ক’মে এসেছিল। মাঝে মাঝে যাই, লক্ষ্য করি। টুম্বর যেন একটু পরিবর্তন হয়েছে, ঠিক তেমনি ক’রে আর কাছে আসে না। কারণে অকুারণে হাসির মাত্রাটাও যেন হ্রাস পেয়েছে। - ওর হাসিটি আমার মুখস্থ হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু এখন মাঝে মাঝে থামতে হয়, পিছন ফিরে ভাবতে হয়। । কথাটা খুড়ীমাকে জানিয়েছিলাম। তিনি হেলে বলেন—তোরও দেখছি মাথা খারাপ হয়েছে । «no আবার পরিবর্তন। ওকি মানুষ। ওর চেয়ে একটা জন্তুজানোয়ারের পর্য্যন্ত বুদ্ধি আছে। তা হয়ত আছে তবুও খুড়ীমার কথায় বাধা দিতে গিয়েছিলাম, কিন্তু তিনি আমায় থামিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, তোর ভুল হয়েছে। তুই আর ওকে কদিন দেখছিল—আমি দেখছি টুমুকে নিত্য ত্রিশ দিন । . . ইচ্ছে হ’ল বলি, সেই জন্যই আপনার চোখে কিছু পড়ে না। কিন্তু শেষ পৰ্য্যস্ত আমি নীরবই থেকে গেলাম । অথচ টুচুকে বাদ দিয়ে যুইয়ের বিয়ের আয়োজনকে আমি কোন ক্রমেই সমর্থন করতে পারি নি, যদিও সংসারের ক্ষে এইটেই স্বাভাবিক। টুচুর অশিক্ষিত অপরিণত যৌবনের কোন মূল্যই সে পাবে না। কোন মুরুচিসম্পন্ন যুবকই তাকে গ্রহণ করতে চাইবে না। মানুষের অবজ্ঞার বহ্নিতে টুকু শুকিয়ে যাবে— ওর কোন স্কুল অস্তিত্ব পর্য্যস্ত থাকবে না । বাড়ীময় আবার একটা চাঞ্চল্যের সাড়া প’ড়ে গেছে । আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কটা ঘনিষ্ঠ হয়ে দেখা দিয়েছে। লোকের প্রয়োজন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্ৰ ক’রেই হয়ে থাকে। g টুম্ব ঘুরে ঘুরে বেড়ায়। চোখে মুখে ওর বিষাদের ঘন ছায়া, কথার ভাণ্ডার যেন ওর শেষ হয়ে গেছে । আমাকেও টুম্ এড়িয়ে চলে। কাছে ডাকি—পাশে এসে দাড়ায়, কিন্তু তেমনি ক’রে হাসির অনর্গলতায় সহজ হয়ে উঠতে পারে না। যুইয়ের বিবাহকে কেন্দ্ৰ ক’রেই টুমুর এই পরিবর্তন, হয়ত নিজের সম্বন্ধে টুম্ব আজকাল ভাবতে চেষ্টা করছে, কিংবা ওর কাচা অপরিণত মনের এ আর একটা দিক্ । আলো, বাদ্য ও সমারোহ সেবারের মত হ’ল না—বাহুল্যবর্জিত কিন্তু প্রয়োজন মত। টুচুর জন্য আমার দুশ্চিন্তা হয়েছিল ; মেয়েটার জন্য সত্যই মায়া হয় । কিন্তু টুচুর বর্তমান চালচলন দেখে আমি অবাক হয়ে গিয়েছি। সকলের সঙ্গে সেও রীতিমত মেতে উঠেছে । ওকে যে সকলেই এড়িয়ে চলে একথাটাও টুকু আজ আর বুঝতে চায় না। ও যেন সাবেক দিনকেও হার মানুয়েছে। কারণে অকারণে ছুটােছুটি করে বেড়ায়” ও যেন আরও দুৰ্ব্বার হয়ে উঠেছে। কাজের ফঁাকে ফাকে টুমুর, কাৰ্য্যকলাপ লক্ষ্য ক’রে যাচ্ছি। ও আজ আগাগোড়াই নূতন। ওর অতীতের সঙ্গে বর্তমানের কোন সামঞ্জস্ত নেই। তবুও কেউই