পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৯৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

هسrb) معاو প্রবাসী SNつB3 গিয়া পৌছিয়াছে। অবশেষে বিস্ময়ের সঙ্গে মনে মনে বুলিল—“কিন্তু , আমি যে তাকে ভালবাসি—আঞ্জ পৰ্য্যন্ত এ সত্য আমার নিজেরই জানা ছিল না !” এই অপূৰ্ব্ব অনুভূতি আজ তাহার হৃদয়ে নদীর জোয়ারের মত আসিয়াছে, সমস্ত বাধাই বুঝি আজ ভাঙিয়া গিয়াছে। হেল্গাকে যখন হইতে সে জানিয়াছে, তখন হইতে যেন কোন শক্তি তাহাকে হেল্গার দিকে সৰ্ব্বদাই টানিয়াছে, কিন্তু সেই আকর্ষণ হইতে সে সৰ্ব্বদাই নিজেকে সংযত রাখিয়াছে। এখন তাহার হেল্গাকে ভালবাসিবার অধিকার হইয়াছে—অন্য কোন মেয়েকে বিবাহ করিবার কথা এখন সে বিষ্কৃত হইলে কোন ক্ষতি নাই । “হেল্গা","হেল্গা" চীৎকার করিয়া ডাকিতে ডাকিতে প্রস্তরময় পথ বাহিয়া নীচে নামিতে লাগিল। হেল্গা হঠাং নিজের নাম শুনিয়া ভয়ে ভয়ে ফিরিয়া চাহিল, “ভয় নাই, ভয় নাই, এই ষে আমি”— —“কিন্তু তোমার না এখন গীর্জায় থাকিবার কথা ?” - “না, না, আজ কোন বিবাহ হইবে না । হিলছর আমাকে বিবাহ করিতে চায় না।” হেল্গা উঠিয়া দাড়াইল, দুই হাত বুকের উপর রাখিয়া সে চোখ বুজিল । সে একবার মনে করিল যে, গুডমুণ্ড এখানে আসে নাই ; অরণ্যের কোন অদৃশু শক্তির মায়ামস্ত্রে তাহার শ্রবণ ও দৃষ্টি বশীভূত হইয়াছে। হউক ইহা স্বপ্ন, তবু তাহার আগমন সত্য, মধুর। , চোখ বুজিয়া স্তব্ধ হইয়া সে দাড়াইয়া রহিল—আরও কিছুক্ষণ যেন সে এই স্বপ্ন উপভোগ করিতে পারে। ভালবাসার আবেগে গুডমুণ্ড প্রায় মত্ত হইয়। পড়িয়াছিল, তাহার হৃদয়ে যেন আগুন জলিতেছে । হেল্গার নিকটে পৌছিয়াই সে দু-হাতে তাহাকে জড়াইয়া ধরিয়া চুম্বন করিতে লাগিল। বিস্ময়ের আতিশয্যে হেল্গা একেবারে আত্মহারা হইয়া পড়িয়াছে, তাই সে তাহাকে চুম্বন করিতে বাধা দেয় নাই। এ-কথা বিশ্বাস করা কঠিন যে, এই সময়ে যাহার গীর্জায় পুরোহিতের সম্মুখে সহগামিনীর পাশ্বে দাড়াইয়া থাকিবার কথা সে সত্যই এখানে এই বনের মধ্যে আসিয়াছে। কিন্তু সে যদি তাহার ছায়াও হয় তবু তাহার হেল্গাকে চুম্বন দিবার অধিকার আছে । হঠাৎ হেলগা যেন .জাগিয়া উঠিয়া গুডমুণ্ডকে দুই হাত দিয়া সরাইয়া দিল"। হেগ্গার মুখে অনবরত প্রশ্নের ধারা বুহিয়া চলিয়াছে—"এ কি তুমি ? এখানে বনের মধ্যে কেন আলিয়াছ ? কোন দুর্ঘটনা ঘটে নাই ত ? হিলছুর কি তবে অমুস্থ ? ' পুরোহিত কি রোগাক্রাস্ত ?” গুডমুণ্ড নিজের বিবাহের কথা ছাড়া অন্য প্রসঙ্গ তুলিতে চায়, কিন্তু হেল্গা তাহার নিকট হইতে সমস্ত ইতিহাস জানিয়া লইল । গুডমুণ্ড, বলিয়া যাইতেছিল, আর হেল্গা নিশ্চল হইয়া বসিয়া মনোযোগের সহিত শুনিতেছিল । গুডমুণ্ড ছুরির ইতিহাসে না-পৌছানো পৰ্য্যন্ত হেল্গা তাহার কথায় কোন বাধা দেয় নাই। ছুরির কথা শুনিয়াই সে লাফ দিয়া দাড়াইয় প্রশ্ন করিল যে, সে তাহাদের বাড়ীতে কাজ করিবার সময় তাহার মে ছুরি ছিল, এ সেই ছুরি কি না ? গুডমুণ্ড উত্তর করিল—“হ। ঠিক ঐটাই।” সে আবার প্রশ্ন করিল—“কয়টা ফলা ভাঙিয়াছে ?” “শুধু একটা ফলার অভাব।” হেল্গার মাথায় নানা চিন্তা খেলিতে লাগিল । কপাল কুঞ্চিত করিয়া সে বসিয়া পড়িল, যেন বিশেষ কিছু মনে করিতে চেষ্টা করিতেছে । হা, এইবার, তাহার স্পষ্ট মনে পড়িয়াছে, সে নেরলুদা হইতে চলিয়া আসিবার পূর্ব দিন গুড়মুণ্ডের নিকট হইতে কাঠ, কাটিবার - জন্য তাহার ছুরিট চাহিয়া লইয়াছিল। তখন ইহার একটা ফলা ভাঙিয়া যায় কিন্তু তাহ জানাইবার সুযোগ তাহার হয় নাই। গুডমুণ্ড সে-সময় সৰ্ব্বক্ষণই তাহাকে এড়াইয়া চলিত, তাহার সঙ্গে কথা কহিতে পৰ্য্যন্ত চাহিত না। গুডমুণ্ড ছুরিটাকে তার পর আর কখনও ব্যবহার করে নাই । কাজেই সে জানিতেও পারে নাই যে ছুরিটাতে একটা ফলা নাই। সে মাথা তুলিয়া গুডমুণ্ডকে এই কথা বলিতে যাইতেছিল ; কিন্তু গুডমুণ্ড তখন বিবাহবাড়ীতে যাওয়ার কথা বর্ণনা করিতেছে বলিয়া হেল্গা কিছু বলিবার অবসর পাইল না—গুডমুণ্ড আগে তাহার কথা শেষ করুক। কি ভাবে সে হিল্‌ছরের সঙ্গে সম্বন্ধ বিচ্ছিন্ন করিয়াছে তাহ শুনিয়া রাগে হেলগার গা জালা করিতে লাগিল। হেল্গা বলিয়া উঠিল—“তোমারই দোষ । তুমি ও তোমার বাবা বিবাহ-আসরে গিয়া এমন সাংস্কৃতিক সংবাদ দিলে মে তাহারা ভয়ে একেবারে ব্যাকুল হইয়া পড়িল । হিলছুর আত্মস্থ থাকিলে হয়ত তোমার কথার উত্তরই দিত না । আমার মনে হয় হিলছর এখন অনুশোচনা করিয়া'দুঃখ পাইতেছে।” গুডমুণ্ড বলিল—“তাহার স্থখছুঃখ সব আমার কাছে