পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৯৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চৈত্র মন্ত্রী মিঃ নেভিল"চেম্বারলেনের মতের অনৈক্য ঘটিয়াছে ইঙ্গ-ইতালীয় সম্পর্ক লইয়া। কিছুকাল পূৰ্ব্বে ইতালীয় রাজদূত সিনর গ্র্যাত্তি জানান যে, যদি ইতালীর সঙ্গে ব্রিটেন একটা বুঝাপড়ার জন্য কথাবৰ্ত্ত চালাইতে চায় তবে এই তাহার সময়। অবশু, ইতালীর আবিসিনিয়াবিজয় ব্রিটেন স্বীকার করিয়া লইবে, এবং ইতালীকে নিজ বজেট স্বস্থির ও আর্থিক বনিয়াদ মুদৃঢ় করিবার জন্য ব্রিটেন একটা বড় রকমের ধার দিবে, আর তদবিনিময়ে ইতালীও স্পেন হইতে তাহার ‘স্বেচ্ছা-সৈনিক ও অপরাপর সাহায্য তুলিয়া লইবার কথা বিবেচনা করিবে, এইরূপ একটা আভাস এই প্রস্তাবের পিছনে আছে। ইডেন মনে করেন, ব্রিটেনের পক্ষে এই নিমন্ত্রণ গ্রহণ করা অনুচিত । কারণ, জাতিসঙ্ঘের সমর্থক হিসাবে তাহার বাহিরে বিচ্ছিন্নভাবে এই সব চুক্তির কথাবার্তা ব্রিটেন চালাইতে পারে না ; বিশেষ করিয়া আবিসিনিয়া-বিজয় মানিয়া লওয়া ত সেই জাতিসঙ্ঘের ও ব্রিটেনের সমস্ত নীতির একেবারে প্রতিকুলাচরণ, আর মুসোলিনির কথায় বিশ্বাস কি ? তাহার ইঙ্গিতে নিকট-প্রাচ্যের আরব জাতিদের মধ্যে আরবী ভাষায় ব্রিটেনের বিরুদ্ধে ইতালী বেতার প্রচার চালাইতেছে, স্পেনের অন্তবিপ্লবে নিরপেক্ষ থাকার কথা মুখে স্বীকার করিয়াও কাৰ্য্যতঃ তাহা পদদলিত করিয়া ইতালীয় কাহিনী আগুন জালাইতেছে, ভূমধ্যসাগরে ব্রিটেনের বাণিজ্যপথ বিপন্ন ও ব্রিটিশ নৌবাহিনীকে বিড়ম্বিত করিতে মুসোলিনি ও র্তাহার বেনামদার ফ্রস্কে প্রভৃতি কেহই কন্থর করিতেছেন না । কিন্তু প্রধান মন্ত্রী চেম্বারলেন মিঃ ইডেনের মত গ্রহণ করিলেন না—তিনি শাস্তি চান, যুদ্ধকে তিনি ঠেকাইয়া রাখিতে চাহেন, ইতালীর সহিত সম্ভাব স্থাপনের যে-কোন সুযোগ পাইলে তাহা গ্রহণ করিতে আগ্রযুতি । এই শবদেহঙ্কেশপ থাকিয়া তিনি,পৃথিবীর শাস্তি বিপন্ন করবেন ? আর নীতি ? সর্বে একটা আলাপআলোচনার নিমন্ত্রণ আসিয়াছে—নীতুি বিসর্জনের কং ইহাতে কোথায় ? সেই নিমন্ত্রণও গ্রহণ করিবেন না, শান্তি-প্রতিষ্ঠার স্থযোগটুকুকেও, উপেক্ষা করিবেন—এ কি ৰহির্জগৎ• Cr واسسوا কথা। অতএব, ইডেন বিদায় লইলেন, লর্ড হালিফ্যাকুস তাহার স্থলাভিষিক্ত হইলেন। এই ইডেন-বিদায়ে জগতের ফাসিস্তপন্থীরা উৎফুল্ল হইয়াছেন—ইংলও এত দিনে জাতিসঙ্ঘ ও তাহার চুক্তি, প্রভৃতি নানাবিধ অসার জিনিষের মোহ কাটাইয়া ফাসিস্ত শক্তিদের বাস্তব শক্তি ও প্রয়োজনকে মানিয়া লইবার দিকে অগ্রসর হইতেছে ;– ইতালী উল্লসিত হইয়াছে, জাৰ্ম্মেনী হালিফ্যাক্স-প্রতিষ্ঠায় আশান্বিত হইয়াছে, এমন কি স্বদূর জাপান পৰ্য্যস্ত ইডেনের বিদায়ে আনন্দিত। বাহির হইতে দেখিলে মনে হয় ব্রিটিশ বৈদেশিক নীতি একটা মোড় ঘুরিতেছে। ইডেন ও তৎমতাবলম্বী বহু ইংরেজ রাজনীতিক এত দিন পৰ্য্যন্ত ব্রিটিশ বৈদেশিক নীতিকে যে-আদর্শে বাধিয়া রাখিতে চাহিয়াছেন জাতিসঙ্ঘ, ঐকত্রিক নিৰ্ব্বিল্পতা ( কলেক্‌টিভ সিকুরিটি ) ও সাধারণ ভাবে পররাজ্যগ্রাসী জাতিদের বিরুদ্ধে শান্তিপ্রয়াসী ও গণতান্ত্রিক জাতিদের সৌহার্দ্য ছিল তাহার মূলস্বত্র। বলা বাহুল্য, নিজেদের স্বার্থকে বিপন্ন করিয়া কোন রাজনীতিকই এই সব নীতিকে প্রাধান্ত দেন নাই । তথাপি প্রকাশ্যতঃ এত দিন পৰ্য্যন্ত সেই পররাষ্ট্র নীতির মুখ ছিল গণতান্ত্রিক জাতিদের দিকে—ফ্রান্সের দিকে, রুশিয়ার " দিকে, চেকোস্লোভাকিয়ার দিকে, এমন কি, আমেরিকারও দিকে ; প্রকাশ্যতঃ ফাসিস্ত শক্তির প্রতি ছিল তাহা বিরূপ । আজ কিন্তু তাহা বলা চলে না। আজ গণতান্ত্রিক ব্রিটেন ফাসিস্ত শক্তিদের সহিত হাত মিলাইতে চলিয়াছে—তাহার পূৰ্ব্বতন বন্ধুগণ ইহাতে কি মনে করে ? ফ্রান্স বরাবর ইঙ্গ-ইতালীয় মিত্রতার পক্ষপাতী—তাহাতে দুই জনকেই সে বন্ধুরূপে পাইবে, জাৰ্ম্মেনীর বিরুদ্ধে তাহার ভরসা তাহা হইলে আরও বাড়ে। এই কারণেই আবিসিনিয়ার যুদ্ধে সে ? তাহার কি আছে যে শুধু মুসোলিনিকে অসন্তুষ্ট করিতে চাহে নাই ; হোর লেবাল সৰ্ত্ত খাড়া করিয়া একটা সহজ রফাও করিতে চাহিয়াছিল । অতএব ফ্রান্স ব্রিটেনের এই কাজে আনন্দিত—যদি জাষ্ট্রের সঙ্গে ব্রিটেনের মিত্রত না হয়। আমেরিকা ব্রিটিশ মতে এত দিন সম্পূর্ণ সায় দিতে পারিতেছিল না, এখন "বুঝিতেছে তাহার এই সংশয়