পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৯৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

öち宮. নিবিধ প্রসঙ্গ-বিহারে স্বাঙালী সুমিতি మరి$ কারণেই তাহাদিগকে চাকরি না-দেওয়া, প্রোমোশ্যন ন-দেওয়া, কণ্ট ক্টিরি না-দেওয়া, ইস্কুল কলেজে, খুব ভাল * হইলেও, অবাধে ভর্তি হইতে না-দেওয়া, এইরূপ নান প্রকার জেদ করিতেছেন । সৰ্ব্বাপেক্ষ হাস্যকর এবং শোচনীয় ব্যাপার এই, যে, যে-মানভূম বরাবর বাঙালীর বাসভূমি এবং যাহার অধিকাংশ অধিবাসী বাংলা বলে ও বুঝে, সেই মানভূম বিহার প্রদেশের অন্তর্গত হওয়ায় মানভূমের লোকদেরও চাকরি প্রভৃতির দাবী বিহারীর দাবীর নিম্নস্থানীয় বলিয়া গণিত হয়। বাংলাভাষী সমূদয় অঞ্চলগুলিকেই বিহার হইতে বাহির করিয়া লইয়া বঙ্গের সহিত জুড়িয়া দেওয়া উচিত—যেমন আগে ছিল । কিন্তু তাহ! কুইলে বিহারের আয় ও প্রভুত্ব কমিয়া যায় ! টাকাটি লইব, কিন্তু ন্যায্য অধিকার দিব না, এ বড় অদ্ভূত ব্যবহার। গবন্মেটি বলেন, কংগ্রেসও বলেন, সংখ্যালঘুদের অধিকার সংরক্ষিত হওয়া উচিত। বিহারের বাঙালীর সংখ্যালঘু । তাহারা বিহারের মুসলমানদের চেয়েও সংখ্যায় বেশী, শতকরা ১২ জন। কিন্তু মুসলমানকে খুশি রাপিতে গবন্মেণ্ট ও বিহারী-কংগ্রেস উভয়েত ব্যস্ত। কিন্তু বিহারের বাঙালীকে উভয়েই দেখিতে পারে না । গৰুন্মে ট পারে না, যেহেতু তাতার বাঙালী ও হিন্দু বিহারীকংগ্রেস পারে না, যেহেতু তাহারা বাঙালী এবং শিক্ষার প্রতিযোগিতায় বিহারীকর্তৃক অপরাজিত । ইহা একটি শোচনীয় ও কৌতুকজনক ব্যাপার, যে, বিহারে পঞ্জাবী হিন্দুস্থানী প্রভৃতি সকলেই যোগ্য হইলে তাহাদের চাকরি কণ্ট ক্টি ইত্যাদি পাওয়ায় আপত্তি হয় না ; আপত্তি কেবল বাঙালীর বেলায় । বিহারে ও অন্য অনেক প্রদেশে বাঙালীদের বিরুদ্ধে অনেক বাজে কথা বলা হয়। তাহার দু-একটা নমুনা দিতেছি । 尊 “বাঙালীর বিহারের অর্থ শোষণ করে।" থাস বিহারে যত বাঙালী থাকে তাহাদের মোট আয়ের চেয়ে বঙ্গে যত বিহারী থাকে, তাহাদের মোট আয় অনেক বেশী। শুধু শারন জেলার বিহারীরাই বাংলা দেশ হইতে দুই কোটি টাকা বৎসরে বাড়ীতে মনি অর্ডার করে । শারনের সব বাঙালীর মোট বার্ষিক আয় দুই লক্ষের বেশী হইবে না । বাংলা দেশ হইতে খাস বিহার ও খাস উড়িষ্যায় বৎসরে আর্ট কোটি টক্লার মনি অর্ডার হয়। খাস বিহার ও খাস উড়িয্যার বাসিন্দা বাঙালীরা , প্রায় সকলেই সেখানে ঘরবাড়ী করিয়া রোজগারের টাকা •দেখানেই খরচ ও সঞ্চয় করে, বঙ্গে সামান্যই পাঠায় । " “বাঙালীর বিষ্কারের ভাষা গ্রহণ কুরে নাই।” খাস বিহারের বাসিন্দা বাঙালীরা.হিন্দী বলিতে পারে, হিন্দী পড়েও অনেকে । কিন্তু তাহারা নিজেদের উৎকৃষ্ট ভাষা ও সাহিত্য পরিত্যাগ করে নাই, করিবেও না । বঙ্গে অন্য প্রদেশের যত লোক আছে, তাহাদের মধ্যে, বাংলা সবাই বলে না, পড়ে না, বুঝে না ; কেহ কেহ বলিতে পারে । নিজেদের ভাষা কেহই পরিত্যাগ করে নাই । বিহারে বাঙালীরাও অসহযোগ আন্দোলনে জেলে গিয়াছে, জরিমানা দিয়াছে, লাঠি থাইয়াছে। বিহারের ভূমিকম্পে বাঙালীদেরও ক্ষতি হইয়াছে। এবং ভূমিকম্পে বিপন্ন বিহারীদের সাহায্যাৰ্থ বাংলা দেশ হইতে অনেক টাকা গিয়াছে । শিক্ষ-প্রতিষ্ঠান-স্থাপনাদিতে বাঙালী বিহারে পথ দেখাইয়াছে। অনেক ব্যবসাতেও তাহাই । বিহারে বাংলা ভাষা এইরূপ আশঙ্কা হইয়াছে, যে, বিহার প্রদেশের অন্তর্গত বাংলা-ভাষী জেলা ও অঞ্চলেও শিক্ষার ভাষা বাংলা ন-হইয়া হিন্দী বা হিন্দুস্তানী হইবে । এরূপ ব্যবস্থা হইবে, বিশ্বাস করা সায় না । কিন্তু হইলে তাহা অসহ্য অত্যাচার হইবে । শিক্ষিত বিহারীদের জমা থাকিতে পারে, পোল্যাণ্ড যখন পরাধীন ছিল, তখন রাশিয়া প্রভৃতি দেশ পোলিশ ভাষা আপিস আদালত ও শিক্ষাক্ষেত্র হইতে তাড়াইয়া দিয়াছিল ; কিন্তু তাহাতে ও পোলিশ ভাষা ও সাহিত্য লুপ্ত হয় নাই, পোলরা তাহ পরিত্যাগ করে নাই । বিচারীরা এখনও বাঙালীর প্রভু হন নাই, স্বাধীনও নহেন। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ভারতবর্ষের সব প্রধাৰু ভাষাকে উপযুক্ত মৰ্য্যাদা দিয়াছেন। কিন্তু উৎকৃষ্ট বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে ময্যাদা দিতে অনেক অবাঙালী কুষ্ঠিত। এরূপ ব্যবহারে কেমন করিয়৷ মহাজাতি গঠিত হইবে ? বিহারে বাঙালী সমিতি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ মহাশয়ের ভ্রাতা শ্ৰীযুক্ত প্রফুল্লরঞ্জন দাশকে সভাপতি করিয়া বিহারের বাঙালীর একটি সমিতি গঠন করিয়াছেন । বিহারের সব প্রাপ্তবয়স্ক বাঙালীর ইহার সভ্য হওয়া উচিত। এই সমিতি বাঙালীর অধিকার রক্ষার্থ ও কল্যাণসাধনের জন্য একটি খবরের কাগজ চলাইতে চান। উত্তম সংকল্প । এই কাগজটি দৈনিক হওয়া একান্ত আবশ্যক। নতুবা বিহারী দৈনিকগুলির সহিত যুক্তিতর্কে সমকক্ষত৷ করিবার সুবিধা হইবে না । বিহারে শিক্ষিত বাঙালী যত আছেন, সকলে এই সমিতির ও সংবাদপত্রের সমর্থক হইলে দৈনিক কাগজ চালান মোটেই কঠিন হইবে না।