পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশ্বিন তল্পী বধিতেছিল। চিঠিখানা তপনের বাড়ী পেীfছবার অনেক আগেই নিশ্চয় সে কলিকাতার বাহিরে চলিয়া গিয়াছে। তার পর তাহা কাহার হাতে পড়িয়াছে কে জানে ? মানুষের কৌতুহলের সীমা নাই । কেহ যদি তপন বাড়ী নাই দেখিয়া চিঠিখানা খুলিয়া থাকে ? লজ্জায় হৈমন্তীর মাথা হেঁট হইয়। আসিতেছিল। যাহারা হৈমন্তীকে ভাল করিয়া চেনে না, তাহদের হাতে এ-চিঠি পড়িলে তাহারা কি-না ভাবিতে পারে । তাহার জীবনে যাহা পূজার ফুলের মত পবিত্র, মামুষের মক্ষিকাবৃত্তি তাহাকে কালিমাময় করিতে এতটুকুও ইতস্তত করিবে না । মিলি আবার বলিল, “হিমু, আমরা এত ব’কে মরছি তুই ত কই কথা বলছিস্ না। নিশ্চয় তোর কিছু হয়েছে । দাড়, চ! ক’রে আলি, গরম গরম চ খেলে চাঙ্গা হ’য়ে "ীঠ বি ।” পিছন হইতে নিখিল ডাকিয়া বলিল, “আমার জন্তেও ঐক পেয়ালা চা করবেন । অনেক জায়গায় নিরাশ হ’য়ে আজ প্রথম আপনার এখানে একটু আশার আলো দেখছি ” হৈমন্তা এতক্ষণ চুপ করিয়াছিল, এইবার হাসিয়া বলিল, “কিসের সন্ধানে আপনি এত ব্যস্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ?” নিখিল বলিল, “মাতুষের সন্ধানে। যার বাড়ী যাহ সব দেখি ডেসার্টেড। পরশু তপনের বাড়ী গিয়ে দেখলাম সে পালিয়েছে। কাল আপনার বন্ধুর বাড়ী সাহস ক'রে গিয়ে দেখলাম, তিনিও নেই। আজ মরিয়া হ’য়ে একটু আগে আপনার ওখানে গিয়েছিলাম, আপনাকেও নপেয়ে শেষে এইখানে শেষ চেষ্টায় এসেছি।” হৈমন্তী বলিল, “সবাই কলকাতা ছেড়ে পালাচ্ছে, চলুন আমরাও পালাই ।” নিখিল বলিল, “বাস্তবিক, কলকাতাটা একেবারে fময়োনো মুড়ির মত বিশ্ৰী হ’য়ে গিয়েছে।” স্বরেশ বলিল, "হিমু, ওর সঙ্গে আর কথা বলে না। আমরা এতগুলো মানুষ কলকাতায় রয়েছি আমাদের কি কোন দাম নেই ? মধাই কেবল এখানে স্বধা সঞ্চার করতে পারে ?” নিখিল লাল হইয়। বলিল, “না, না, তেমন কোন কথা ত আমি বলি নি । আমার এত স্পদ্ধ নেই এবং a t - 8 অলখ-ঝেণরণ چہوSسb এমন অৰ্ব্বাচীনও আমি নই ৷ বলছিলাম।” নিখিল ও স্বরেশ চেষ্টা করিল, কিন্তু চায়ের মজলিস আজ জমিল না। হৈমন্তীর মনে কেবল একই কথা খুরিতেছিল। তাহ ঠিক কি, না বুঝিলেও, নিখিল এটুকু বুঝিল যে মহেন্দ্রর বিদায়-উৎসবে সে হৈমন্তীকে যাহা বলিয়াছিল তাহারই ক্রিয়া হৈমন্তীর মনে চলিয়াছে। কিন্তু তপনের আচরণে নিখিলের কথা মিথ্যা হইয়। যাইবার জোগাড় হইয়াছে দেখিয়া নিখিল হৈমন্তীর নিকট নিজেকে কতকটা যেন মিথ্যাচার বলিয়াই বোধ করিতেuি হহাদের কথায় হৈমন্তী বুঝিল তপন দীর্ঘকালও বাড়ী না ফিরিতে পারে । যাক, যদি `$ ন পাইয়ু থাকে ভালই হইয়াছে ; হৈমন্তী যাহা ম করিয়াছিল তাহা সত্য হইলে এমন নিরাসক্তভাবে তপন কি চলিয়া যাইতে পারিত ? নিকটে থাকিয়া নীরবতার প্রতিজ্ঞ রক্ষা করা না-হয় বুঝা যায় কিন্তু এমন করিয়া সকল বঁiধন fছড়িয়া নিরুদেশ ধাত্রার অর্থ সে ত কিছুই বুঝিতেছেحملات লোকে কেন পালাচ্ছে তাই s: মিলির বিবাহের পর বাড়ী ফিরিয়াহ মৃধা ঠিক করিয়াছিল মাকে লইয়া সে একবার নয়ানজোড়ে যাইবে । যে আবেষ্টনের ভিতর জন্ম হইতে শৈশবের সকল আনন্দ সে সংগ্রহ কfরয়াছিল, যাহার উপর ভিত্তি করিয়াই তাহার জীবন গঠিত, বেদনার দিনে সেইখানেই সে জুড়াইতে যাহতে চায়। মানুষের সকল ব্যথার ক্রননই যেমন ‘মা'কে ডাকিয় আশ্রয় চাওয়া, এই জন্মভূমির প্রতি আকর্ষণও তেমনই তাহার আশ্রয়fভক্ষী । নূতন জীবনে মুখদুঃখ যাহা তাহার অদৃষ্টে ঘটিয়াছে তাহা এই শৈশবের নীড়ে আসিলে কিছুকালের মত অন্তত হাসের পালকের জলের মত তাহার চিত্ত হইতে ঝরিয়া পড়িবে। অতি দুঃখের দিনে আজকাল সে ধখন রাত্রির স্বপ্নের ক্রোড়ে আপনার ব্যথাহত চিত্তটি লইয়া পলাইয়া যায়, তখন বহুবার দেখিয়াছে নিদ্রাদেবী তাহাকে পথ ভুলাইয়ু লইয়া ধান সেই স্বপ্নলোকে যেখানে তাহার দিদিমা ভুবনেশ্বর সকালে উঠিয়া নাতি নাতনীর দুধ মাপিতে বসেন, মা পক্ষাঘাতগ্রস্ত দেহ তুলির