পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

శ్రీఫిసి প্রবাসী-ভাদে, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড বলিল, ”আচ্ছ, দেখা যাক। এখন একটু ঘুমনো যাক, কাল ট্রেনে একেবারে ঘুম হয় নি।” অতুল নিজের মনেই বক্‌বক্ করিয়া চলিল, “বুড়ে বাপটারও আক্কেল দেথনা। তার এই বুড়ে বয়সে সাধ হ’ল বিয়ে করতে। মেয়েকে সব টাকাকড়িগুলো দিলে তার একটা উদ্রলোকের সঙ্গে বিয়ে হতে পাবৃত।” গিরীশের মেজাজ গরম ছিল, সে বলিল, “ভদ্রলোক নয়, চামার বল। টাকার লোভে যারা বিয়ে করে, তারাই তোর মতে ভদ্রলোক না কি ?” অতুল উত্তর দিল না। গিরীশ খানিক পরে দিব্য নাক ডাকাইতে আরম্ভ করিল। বিকাল বেল অতুলের নিমন্ত্রণ ছিল, তাহারই এক কাকার বাড়ীতে। সে গিরীশকে জিজ্ঞাসা করিল, “একলাই ঘরে বসে থাকৃবি না কি রে?” গিরীশ বলিল, “ঘরে বসে থাকৃব কি দুঃখে ? আমি খানিকটা ঘুরে আসি। তোদের গ্রামটা বেশ ছবির মত দেখতে, একটু ভাল ক’রে ঘুরে আসা যাক।” দুই বন্ধুতে এক সঙ্গেই বাহির হইল। অতুলকে তাহার কাকার বাড়ী ঢুকাইয়া দিয়া গিরীশ সোজা চলিতে লাগিল। বিকাল বেলাটা আর তত গরম ছিল না । গ্রামের পথে চলিতে চলিতে তাহার মনটা বেশ কবিত্বরসে ভরিয়া উঠিতে লাগিল। পল্লী-লক্ষ্মীর সৌন্দৰ্য্য তাহার হৃদয়-লক্ষ্মীকে বড় বেশী মনে পড়াইয়া দিল । সে তাহার চিস্তায়ই তন্ময় হইয়া চলিতে লাগিল। হঠাৎ নারীকণ্ঠের উচ্চ হাস্যধ্বনি তাহার চিন্তাজাল ছিন্ন করিয়া দিল। গিরীশ চারিধারে ভাল করিয়৷ তাকাইয়া দেথিল যে, সে চলিতে চলিতে গ্রামের একটি বড় পুকুরের পাড়ে আসিয়া পড়িয়াছে। এইটিই বোধ হয় গ্রামের মেয়েদের বৈকালিক সভার স্থান। ভাগ্যে অনেক গুলি ঝোপঝাড় ঘাটটিকে আড়াল করিয়া রাখিয়াছিল, তাহা না হইলে গিরীশকে অত্যন্তই অগ্রস্তুতে পড়িতে হইত। তাঙ্গর তখনই চলিয়৷ যাওয়া উচিত ছিল, কিন্তু তাহার পা দুটা বিদ্রোহ করিয়া কিছুতেই নড়িতে চাহিল न । ' , - “༩ཀ་“.༣༢, লীগগীর চলে জায় বলছি, তা না হ’লে

  • @ ,

পিসীমা গাল দিয়ে ভূত ছাড়িয়ে দেবেন। সন্ধ্যে যে হ’য়ে এল * উত্তরে শোনা গেল, “বাবারে বাধা ! পাচ মিনিট আর সবুর করতে পার না । আঁধার হবার আগে বাড়ী ফিরলেই হ’ল, পিসীমা তাহলে কিছু বলবেন না।” গলার স্বপ্নটা বড় বেশী-পরিচিত যে ! গিরীশের সারা শরীরে পুলকের শিহরণ খেলিয়া গেল। সে এখানে আসিল কি করিয়া ? কোথায় দেৰতাত্মা নগাধিরাজের অভ্ৰভেদী শিখর আর কোথায় বাংলা দেশের ক্ষুদ্র পাড়ী গা । কিন্তু গলার স্বর যে একেবারে হুবহু এক ! এরকম হওয়া কি সম্ভব ? নামটি রমা, ললিতা নয় । কিন্তু রম নামটিও বেশ মিষ্ট। ঝোপঝাড়ের ভিতর দিয়া উকি মারিয়া দেখিবার কৌতুহল তাহাকে প্রবলবেগে সেইদিকে টানিতে লাগিল । নিতান্ত ভদ্রলোকের ছেলে, তাই সে কোনো প্রকারে সাম্‌লাইয়া গেল । কিন্তু সেখান হইতে নড়িলও না । কণ্ঠস্বরের অধিকারিণীটিকে না দেখিয় সে যাইবে না, ংকল্পই করিয়া লইল । সৌভাগ্যক্রমে তাহাঁকে বড় বেশী দেরি করিতে হইল না । মেয়ের দল গল্প এবং স্নান শেষ করিয়া, কলসে জল ভরিয়া যে যার গৃহের উদ্বেতে যাত্রা করিল। গিরীশের উচিত ছিল পথ ছাড়িয়া সরিয়া যাওয়া, সে তাহা না করিয়া ই করিয়৷ যেমন দাড়াইয়া ছিল, তেমনই দাড়াইয়া রহিল। ফলে মেয়েগুলি পথের উপর আসিয়াই তাহাকে দেখিতে পাইল এবং তাঁহাতে বিশেষ খুসিও হইল না। “দেখ, একবার লোকটার রকম, মেয়েদের পুকুরের কাছে কি রকম ই ক'রে দাড়িয়ে আছে।” রম নামধারিণীটি অসভ্য মাকুষটাকে দেখিবার উদ্দেশ্যে ফিরিয়৷ তাকাইল। গিরীশ দেখিল সে ললিতা । মেয়েটিও তাহার কলিকাতার প্রতিবেশীটিকে এখানে দেখিয়া চমূকাইয় গেল । তাহার সঙ্গিনী জিজ্ঞাসা করিল, “ছেলেটাকে চিনিস নাকি ? দেখে আমন চমকে গেলি ষে ?” রম বলিল, “চিনূব আবার কোথা থেকে ? কলকাতায় আমাদের পাশের বাড়ীতে একটা ছেলে থাকে,