পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ԳeԵ প্রবাসী—ভাদে, ১৪e৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড সঞ্জয় বলিল, “চঞ্চল, ক্ষমা করবার অধিকার আর অহঙ্কার কি আমার সাজে ? ক্ষমা তুমি কোরে, অামার অপরাধী পিতাকে ক্ষমা কোরে, আর না জেনেও তোমার নিকট যে অপরাধী সেই তোমার হতভাগ্য ভাইকেও ক্ষম কোরে । যা তোমার ও আমার দুজনের ত যে আমি তোমাকে বঞ্চিত ক’রে এতকাল ভোগ করেছি এবং পরেও করব এ অপরাধ আমায় ক্ষমা কোরে । পিতামাতার সম্পত্তির কথা বলছি মনে কোরো না ; সেট ত্যাগ করা অত্যন্ত সহজ ; আমি বলছি আমার সন্তানত্বের দাবীর কথা। তোমাকেও আমার সঙ্গে সমানে যতদিন আমি তা না দিতে পারব ততদিন আমার লজ্জা রাখবার ঠাই থাকৃবে না। অথচ নিজে তা পরিত্যাগ করবার উপায় আমার নেই, হরত বা সে মহাশক্তিও আমার নেই ।” চঞ্চল বিস্মিত হইয়া সম্বন্ধের মুখের দিকে তাকাইল । সেই পিতার পুত্র হইয়া সঞ্জয় এতবড় ! চঞ্চল৷ বলিল, *আর কেউ কোনো অধিকার না দিকৃ, তাতে আমার দুঃখ নেই। বারা সন্তানের চেয়ে যশকে বড় করে, তাদের কাছে জোর ক’রে পাওয়া অধিকারই কি মস্ত জিনিব ? তার চেয়ে তুমি স্বেচ্ছায় এসে আমার হাত ধ’রে আজ আমায় যে অধিকারটি দিলে সেইটে আমার কাছে অনেক বেশী মূল্যবান ।” সঞ্জয় ক্ষীণ হাসি হাসিয়া বলিল, "আপনি’ ছেড়েছ বচিলাম, চঞ্চল। কিন্তু সত্যি কি আমি তোমায় কোনো অধিকার দিতে পেরেছি ? এত সমস্তই লুকোচুরির অধিকার, কেবল আড়ালে-অর্ণবডালে চলচে । সত্য অধিকার দিতে হ'লে সবার আগে তোমার হৃত অধিকারই আমাকে উদ্ধার ক’রে আনতে হবে, কারণ সেইটাই যে আমাদের সকল অধিকারের মূল ভিত্তি। ভাই হ’বার আমার ক্ষমতা কোথায়, যদি না তোমাকে আমাদের ঘরের মেয়ে করতে পারি ? তুমি বাইরে থেকে গেলে তোমায় শুধু নিজের ইচ্ছায় ত বোন ব'লে স্বীকার করতে পারব না।” চঞ্চলার মুখ মান হইয়া গেল । সে বলিল, “সত্যি, তোমার কাছে একটুখানি করুণা ছাড়া আর ত কিছু পাবার অধিকার আমার নেই। ও কথা আমি ভুলেই 3, গিয়েছিলাম। তুমি ষে সেই বড় ঘরের ছেগে। আমি তোমার কেউ হব কোন স্পৰ্দ্ধায় ?” সঞ্জয় ব্যথিত হইয়া বলিল, “চঞ্চল, অমল ক’রে কথা বোলে না। তুমি ত দেখছভাগ্য আমার দুই হাত বেঁধে রেখেছে। অামার কোন শক্তি এখানে কিছু করতে পারে ন, যদি না আমি বাবার মন ফেয়াতে পারি।” চঞ্চল। বলিল, “এতদিনের অাক্রোশ কি একদিনে যায় ? স্থযোগ পেলেই তাই রাগটা ফোস ক'রে ওঠে । তুমিও কি বোঝ না যে, সেটা আসলে তোমাকে বল নয় ? বলবার আর কাউকে ত পাব না জানি ; তাই যেটা তোমাকে বলা সকলের চেয়ে অন্যায় সেটাও তোমাকেই বলছি। তুমিই যে কেবল একৃগ ধরা দিয়েছ।” সঞ্জয় চুপ করিয়া রহিল। চঞ্চল। আবার বলিল, "তা বলে মনে করে না যে, আর কারুর সঙ্গে সম্পর্ক পাতাবার জন্যে আমি সাধ ছি।” সঞ্জয় বলিল, “তুমি যে সাধতে পার না ত! আমি জানি। যদি ভাগ্য আমার প্রতি স্ন প্রসন্ন হন তাহ’লে আমিই একদিন তোমাকে সাধব আমার সঙ্গে সম্পর্ক স্বীকার করুবার জন্তে ” চঞ্চল একটু উত্তেজিত হইয়া উঠিয়া বলিল, “কিন্তু যার সাহায্যে তুমি আমাদের ভাগ্য স্বপ্রসন্ন করতে চাইছ তার সাহায্য নেবার আমার বিন্দুমাত্রও ইচ্ছা নেই। তার চেয়ে আমি এতকাল যেমন একলা ছিলাম চিরকালই তেমনি থাকুব ।” .# সঞ্জয় একটুখানি স্থিতহাস্তে চঞ্চলার রাগটা ঠাণ্ড করিয়া দিয়া বলিল, “তোমার কোনো ভর নেই চঞ্চল ; আমি আমার মা ছাড়া আর কারুর শরণ নেব না। তুমি চিরকাল একলা থাকৃতে চাইতে পার ; তোমার অভিমানের যে অতখানি শক্তি আছে তাও স্বীকার করি। কিন্তু আমি যে তোমাকে সমাজে প্রতিষ্ঠা দিতে চাই। তোমার জন্যে সোনার ঘর-সংসার পেতে দেওর যে আমার কাজ ! সে কাজে মা ন সহায় হ’লে কি চলে ?” চঞ্চলা লঙ্গ পাইয়া খলিল, “যার ত্রিকুলে কেউ নেই