পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] ....ഹാ.................... বাড়ীতে কিছু হয়নি ত? মেয়েটাকে রেখে গিয়েছি।” হীরেন বলিল, “এখানে লোক জমা করার জন্তে আমার মেয়ের ডাক পড়বে না। আমাদের গুণবতী প্রতিবেশিনীই রয়েছেন।” প্রভা বলিল, “কিন্তু আয়াকে বারানায় দেখছি না যে ? সে ত রাস্তায় একটা কিছু শব্দ শুনলেই তখনি ছুটে এসে হাজির হয় ।” বাড়ীর সামনে গাড়ী দাড়াইতেই তাহাদের মিথ্য আশঙ্কাটা দূর হইয়া গেল। প্রভার ঘরের নীচেই যে দোকান, তাহারই সাম্নে দাড়াইয়া দুই হাত কোমরে দিয়া মেমসাহেব এক বিচিত্র নাচ নাচিতেছেন, এবং তাহার মুখ হইতে হিন্দী, ইংরেজী এবং বৰ্ম্মায় অনর্গল গালাগালি বাহির হইতেছে। তাহার সাহেব স্বামীটি সিড়ির মুখে দাড়াইয় আছেন। তিনি বীরাঙ্গনা স্ত্রীর সাহায্যে অগ্রসর হইবেন, না, সোজাসুজি উপরে চম্পট দিবেন, তাহাই ভাবিতেছেন। আশে-পাশের যত দোকানদার, কুলী, মজুর, রিকৃশওয়ালা, সব ভিড় করিয়া দাড়াইয়া গিয়াছে। * প্রভা এবং হীরেন গাড়ী হইতে নামিয়া তাড়াতাড়ি উপরে উঠিয়া গেল। বারান্দায় আসিয়া তাহার নীচের বীররসাত্মক অভিনয়টির কারণ অনুসন্ধান করিতে দাড়াইল । শোনা গেল মেমসাহেবের একটি ভাগ্নে প্রায়ই এ বাড়ীতে আসে যায়। সে নীচের দোকান হইতে চার আনার সোডাওয়াটার কিনিয়া খাইয়াছে এবং পয়সা দেয় নাই । দোকানওয়ালা পয়সা চাওয়াতে বলিয়াছে যে, তাহার মাসী দিবে। মাসীমার কাছে পয়সা চাওয়ায় তিনি স্বভাবোচিত মধুর ভাবে জানাইয়াছেন যে,জিনিষ যখন তিনি লন নাই, তখন পয়সা দিবার বিশেষ কোনো প্রয়োজন অনুভব করিতেছেন না। দোকানওয়ালা দুই চারি দিন ভ্যাবাচ্যাক খাইয়া চুপ করিয়াছিল। আজ বিকালের দিকে মস্তবড় এক ট্রাঙ্ক লইয়া উগ্ৰচণ্ড সম্ভবতঃ কাপড় কিনিতে বাজার যাইতেছিলেন। দোকানদারের হঠাৎ মনে হইল মেম বুঝি প্রস্থান করিতেছেন, তাহার চার আনা পয়সা উগ্ৰচণ্ড প্রভা আতঙ্কিত হইয়া বলিল, "ওম, भाशत्र b®ዓ জলেই গেল। কোকের মাথায় সে বলিয়া বসিল, “এই গাড়োয়ান, গাড়ী রোকে । মেমসাহেব, হামর পয়সা দে কে যাও ।” ইহাতেই কুরুক্ষেত্র বাধিয়া গেল। মেম বাজার যাওয়া সেদিনকার মত স্থগিত রাখিলেন। ট্রাঙ্ক নামাইলেন এবং নিজেও নামিয়া আপিলেন। র্তাহার রকম দেখিয়া দোকানদার ফুটপাথ ছাড়িয়া তাড়াতাড়ি ঘরের মধ্যে ঢুকিয়া পড়িল, এবং সেইখানে থাকিয়াই আত্মরক্ষার বিফল প্রয়াস করিতে লাগিল। প্রভার যখন আসিয়া পৌছিল, তখন প্রায় নাটকের পঞ্চমাঙ্ক। মেম হাকিতেছেন, “এ কুলিকা বাচ্চ, হাম্ লিয়া তুমার মাল ? নিকল কে আও, তুমকো জুতাসে মারেগা। আচ্ছাওয়ালা ঘর হোনে সে হাম্ ভিতর যাতা, মগু কুলীকে ঘরমে হম্‌ নেহি যানে শেকৃতা।” দোকানদার ভিতর হইতে বলিল, “বেটা বোলতা মা পয়সা দেগা, মা বোল্‌তা বেটা পয়সা দেগ, এ ক্যায়লা ? ঔর কোন শাল তুম্লোগুকে মাল বিক্রী করেগ৷ ” সাহেবের আত্মাভিমানে আঘাত লাগিল, তিনি গর্জন করিয়া বলিলেন, “দেখে, শালা শাল মং বোলে।” দোকানদার তাহার দ্যায়সঙ্গত অনুরোধ রক্ষা করিল না। আরো দু-চারবার তাহার মুখ হইতে উক্ত বাক্যটি শোনা গেল। সাহেব কোট খুলিয়। সিড়িতে রাখিলেন, . গলাবন্ধটাও ত্যাগ করিলেন। শাটের আস্তিন গুটাইয়া অগ্রসর হইয়া আসিয়া বলিলেন, “আচ্ছ, আও ম্যান, বাহরু আও ” দোকানদার ত তাহার নিমন্ত্রণ রক্ষা করিলই না, তাহার পত্নীও স্বামীর এই আকস্মিক প্রতির পরিচয়ে মোটেই খুলি হইলেন না। একলাই আত্মরক্ষায় সমর্থ নন এমন ইঙ্গিতেই তিনি চটিয়া গেলেন। স্বামীকে এক ঠেলা দিয়া বলিলেন, “You need n't butt in. I have got uny shoe for him. Get away!” TTSK LIST Pfos fsFT আবার কোট পরিতে এবং গলাবন্ধ বাবিতে প্রবৃত্ত হইল। মেমসাহেবের পুনঃ পুনঃ নিমন্ত্রণেও হিন্দুস্থানী-নন্দন যখন বাহিরে আসিল না, তখন তিনি তাহার উদ্ধতন চতুর্দশ পুরুষকে অকথ্য গালি দিতে দিতে উপরে উঠয় গেলেন এবং বারান্দায় দাড়াইয়া রাস্তার লোককেও অভিনন্দন করিতে