পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৬
প্রাকৃতিকী

 ইচ্ছাশক্তির সঞ্চার হওয়ার পর শত্রুকবল হইতে রক্ষা পাইবার জন্য জীবকে প্রকৃতির মুখাপেক্ষী হইয়া থাকিতে হয় নাই। এই স্বাভাবিক ইচ্ছাশক্তির ইঙ্গিতেই মনুষ্য প্রভৃতি উন্নত প্রাণী কৃত্রিম উপায় উদ্ভাবন করিয়া এখন সহস্র প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে দাঁড়াইয়া সংগ্রাম করিতেছে। প্রাচীন জীবের এই ইচ্ছাশক্তির লেশমাত্র ছিল না। বাহিরের উদ্দাম প্রকৃতির চালনায় শরতের মেঘের ন্যায় তাহাকে নানা আকার পরিগ্রহ করিতে করিতে লক্ষ্যহীন অবস্থায় চলিতে হইয়াছিল। ইহার মধ্যে যাহারা ঘটনাবৈচিত্র্যে কুপথ অবলম্বন করিয়াছিল, মৃত্যুর গ্রাস হইতে তাহারা রক্ষা পায় নাই। ভাগ্যক্রমে যাহারা সুপথের পথিক হইয়াছিল, কেবল তাহারাই ক্রমোন্নতি লাভ করিতে পারিয়াছিল। আধুনিক মানবজাতি সেই আদিম জীবের কোন এক সুপথগামী বংশধর হইতেই জন্মিয়াছে। যে পথ অবলম্বন করিয়া জড়বৎ অপকৃষ্ট জীব শেষে মানবের ন্যায় উন্নত প্রাণীতে পরিণত হইয়াছে, আমরা বর্ত্তমান প্রবন্ধে তাহারই কিঞ্চিৎ আভাস দিব মাত্র।

 আদিম জীবের উৎপত্তির পর তাহার বংশধরগণ দুইটি পৃথক জাতিতে বিভক্ত হইয়া পড়িয়াছিল। প্রাচীন যুগের আকাশ এখনকার মত পরিষ্কার ছিল না। তখন এখনকার তুলনায় আকাশে অঙ্গারক বাষ্প অধিক পরিমাণে মিশ্রিত থাকিত। এক জাতি কেবল অঙ্গারক বাষ্প দেহস্থ করিয়া শরীর পোষণ করিত, এবং অপরটি অক্সিজেন বায়ু গ্রহণ করিয়া জীবিত থাকিত। অঙ্গারক বাষ্পে অঙ্গার ও অক্সিজেন যুক্তাবস্থায় থাকে। উভয়ই জীবদেহ গঠনের খুব উপযোগী হইলেও, মুক্ত অক্সিজেন জীবকে যেমন কর্ম্ম কুশল করে, অঙ্গারক বাষ্প সে প্রকার করে না। অঙ্গারক বাষ্পগ্রাহী জীবের এইখানেই উন্নতির পথ রোধ হইয়া পড়িয়াছিল। অক্সিজেনগ্রাহী জীব যখন উন্নতির পথে চলিবার জন্য চঞ্চল হইয়া দাঁড়াইয়াছিল, তাহাদিগের অঙ্গারকবায়ুভোজী সহোদরগণ