পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মনুষ্যসৃষ্টি
৯৭

ঠিক একস্থানে দাঁড়াইয়া কিপ্রকারে বহু অঙ্গারক বাষ্প দেহস্থ করিতে হইবে, তাহার উপায় উদ্ভাবনে ব্যস্ত ছিল।

 অক্সিজেন্‌ভুক জীব বহুকাল একই আকারে থাকিতে পারে নাই। বহিঃপ্রকৃতির সহিত সামঞ্জস্য রাখিতে গিয়া ইহারা সমেরুদণ্ড ও অমেরুদণ্ড (Vertebrate and Invertebrate) এই দুই জাতিতে বিভক্ত হইয়া পড়িয়াছিল। এক যুগে এই দুই জাতির মধ্যে অমেরুদণ্ড জীব পৃথিবীতে খুব প্রাধান্য লাভ করিয়াছিল। মাকড়সা মধুমক্ষিকা পিপীলিকা প্রভৃতি তাহাদেরি বংশধর। ইহারা বহিঃপ্রকৃতির সহিত নিজেদের মিলাইয়া যেমন অনায়াসে চলাফেরা করে, অপর কোন জীবই সেপ্রকার পারে না। সমাজবন্ধনের কৌশলে ইহারা সমগ্র ইতর জীবের শীর্ষ স্থানীয়। এই সকল আলোচনা করিলে বলিতে হয় যে, যে সমেরুদণ্ড জাতি হইতে মনুষ্যের উৎপত্তি হইয়াছে, তাহা এককালে উন্নতির পর্য্যায়ে অমেরুদণ্ডজাতির অনেক নীচে ছিল। ভূতত্ত্ববিদ্‌গণও আজকাল এই সিদ্ধান্তের অনুমোদন করিতেছেন।

 আনেরুদণ্ডজাতি প্রথমে দ্রুতগতিতে উন্নতির দিকে চলিয়া শেষে তাহাদের সমেরুদণ্ড ভ্রাতৃগণের সহিত প্রতিযোগিতায় জয়ী হইতে পারে নাই। মেরুদণ্ডের অভাবে দেহের চর্ম্মকে ইহারা ইন্দ্রিয়াদি রক্ষার প্রধান অবলম্বন করিয়া তুলিয়া একটা মহা ভুল করিয়াছিল, এবং এই ভুলই তাহাদের ভবিষ্যৎ উন্নতিপথের কণ্টক হইয়া দাড়াইয়াছিল। স্থূলচর্ম্ম দ্বারা সর্ব্বাঙ্গ আবৃত থাকায় আকারে বৃহত্তর হইবার চেষ্টা করিতে হইলে, ইহাদিগকে সেই আবরণকে বিদীর্ণ করিতে হইত। অদ্যাপি কাঁকড়া চিংড়ি মাছ প্রভৃতি অমেরুদণ্ড জীব এই প্রকারে চর্ম্মবিদীর্ণ করিয়াই বাড়িয়া থাকে। সমেরুদণ্ড জীবের দেহস্থ অস্থি যে কাজ করে, অমেরুদণ্ড প্রাণিগণ তাহাদের দেহের কঠিন আবরণ দ্বারা ঠিক সেই কাজ করাইয়া লয়। দেহের প্রধান প্রধান ইন্দ্রিয় ও পেশীগুলি ঐ আবরণে