পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৮
প্রাকৃতিকী

আবদ্ধ থাকে; কাজেই চম্মত্যাগ করার পর নূতন চর্ম্ম বাহির হওয়া পর্য্যন্ত ইহাদিগকে অকর্ম্মণ্য হইয়া পড়িয়া থাকিতে হয়। বৎসরে দুই তিনবার করিয়া যদি মানুষকে দেহের অস্থি ত্যাগ করিতে হইত, এবং নূতন অস্থিগুলিকে অঙ্কুরিত ও কার্য্যোপযোগী করিবার জন্য যদি দুই তিন মাস শয্যাশায়ী থাকিতে হইত, তাহা হইলে মানুষ কখনই এত উন্নতি লাভ করিতে পারিত না। অমেরুদণ্ড জীব দৈহিক উন্নতির জন্য চর্ম্মত্যাগে অভ্যস্ত হইয়া, ঠিক পূর্ব্বোক্ত কারণে উন্নতি লাভ করিতে পারে নাই। কিছুদিন জীবনসংগ্রামে প্রবৃত্ত থাকিয়া ইহারা যে একটু অভিজ্ঞতা লাভ করিত, লুপ্তচর্ম্ম হইয়া পড়িলে অনভ্যাসে তাহার প্রায় সকলি নষ্ট হইয়া যাইত।

 অমেরুদণ্ডজাতির মধ্যে কতকগুলি জীব চর্ম্মত্যাগের পূর্ব্বোক্ত অসুবিধাটা বুঝিয়া উন্নতির আশায় চুর্ম্মত্যাগ হইতে বিরত হইয়াছিল। কিন্তু এই সুবুদ্ধিও তাহাদের ভবিষ্যৎ পথ নিষ্কণ্টক করিতে পারে নাই। এক নূতন বিঘ্ন আসিয়া উন্নতির পথ রোধ করিয়া দাঁড়াইয়াছিল। চর্ম্মত্যাগ অভ্যাস পরিহার করায়, ইহাদের সকলকেই অল্পায়ু ও ক্ষুদ্রাবয়ববিশিষ্ট হইয়া জন্মিতে হইত, এবং যাহারা জোর করিয়া দেহের আয়তন বৃদ্ধির চেষ্টা করিত তাহাদের ক্ষুদ্র জীবনটা পুনঃপুনঃ দেহের পরিবর্ত্তন করিতেই কাটিয়া যাইত।

 আধুনিক রেসমকীট এবং নানা জাতীয় পতঙ্গগুলিই পূর্ব্বোক্ত জীবের বংশধর। ইহাদের পূর্ব্বপুরুষগণ উন্নতির পথ নির্ব্বাচনে যে ভ্রম করিয়াছিল, তাহারি ফলে অদ্যাপি ইহারা। ক্ষুদ্রাবয়ববিশিষ্ট ও অল্পায়ু হইয়া জন্মিতেছে, এবং জীবনের অধিকাংশ সময়ই দেহপরিবর্ত্তন করিয়া কাটাইতেছে। বলা বাহুল্য এই প্রকার ক্ষুদ্র জাতি কখনই বুদ্ধিমান্ হইয়া উঠিতে পারে না। বুদ্ধির জন্য বৃহৎ মস্তিষ্কের প্রয়োজন। ক্ষুদ্রদেহে সে প্রকার মস্তিষ্কের স্থান নাই। পিপীলিকার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কের