পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩৮
প্রাকৃতিকী

ইহারি গন্ধে ঘরটি বহু বৎসর পরিপূর্ণ থাকিবে। অথচ এই সুদীর্ঘকাল ধরিয়া মৃগনাভিটুকু স্বদেহের অণুগুলিকে গন্ধাকারে ছাড়িয়া, ওজনে অধিক কমিবে না। গন্ধপ্রদ জিনিষের কণাগুলি এতই সূক্ষ্মাকারে বিভক্ত হইয়া ছড়াইয়া পড়ে!

 অধিকাংশ পদার্থে প্রচুর উত্তাপ দিলে, তাহারা খুব সূক্ষ্ম অংশে বিভক্ত হইয়া যায়। এই প্রকারে বিভক্ত জিনিষকে আমরা বাষ্প বলি। ইহা পদার্থের একটা বিশেষ রূপ। তরল বা কঠিনাকার ত্যাগ করিয়া পদার্থ ঐ রূপ গ্রহণ করে। কিন্তু নিজের রূপ অক্ষুণ্ণ রাখিয়া মৃগনাভি ইত্যাদি গন্ধপ্রদ দ্রব্য যে, পূর্ব্বোক্ত প্রকার অতি সূক্ষ্ম অংশে বিভক্ত হইতে পারে তাহা জানা ছিল না। বৈজ্ঞানিকগণ অণু-পরমাণু প্রভৃতি আরো সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম জিনিষ লইয়া নাড়াচাড়া করিয়া থাকেন। সুতরাং তাঁহারা যখন ঘ্রাণোৎপত্তির মূলে ঘ্রাণপ্রদ জিনিষের অতিক্ষুদ্র কঠিন কণার কার্য্য দেখিতে পাইয়াছেন বলিয়া প্রচার করিলেন, তখন এ সম্বন্ধে আর সন্দেহ করিবার কারণ রহিল না। বৈজ্ঞানিক অবৈজ্ঞানিক সকলেই স্বীকার করিলেন, দ্রব্যের অতি সূক্ষ অংশ কঠিনাকারে থাকিয়া নাসিকায় প্রবেশ করিলে গন্ধ-জ্ঞান জন্মায়।

 এই সিদ্ধান্তের পোষক নানা উদাহরণ সংগ্রহ হইতে লাগিল। স্থির হইল, শিকারের দেহনিঃসৃত মলাদি অতি সূক্ষ্ম কণার আকারে চারিদিকে ছড়াইয়া পড়ে। শিকারী কুকুর নাসিকার সাহায্যে সেই কণাপ্রবাহের দিক্ নির্ণয় করিয়া, শিকারকে আক্রমণ করে। পরীক্ষা করিয়া দেখা গিয়াছে, একজাতীয় প্রজাপতিকে ধরিয়া কোন দূরস্থানে লুক্কায়িত রাখিলে, সহচর প্রজাপতিগুলি অতি অল্পকাল মধ্যে ধৃত সঙ্গীকে খুঁজিয়া বাহির করে। ইহার ব্যাখ্যানে সকলে বলিতে লাগিলেন,—প্রজাপতির দেহনিঃসৃত কোন দ্রব্যের ক্ষুদ্রকণা ছড়াইয়া পড়িয়া পরস্পরের ঘ্রাণেন্দ্রিয়ের উপর কার্য্য করে। এইজন্য কোন্ পথ ধরিয়া