পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রাণী ও উদ্ভিদের বিষ
১৪৭

বিচিত্র গঠনের মূলে এক একটা শুভ উদ্দেশ্য লুক্কায়িত থাকে। যে সুগন্ধ লইয়া পুষ্প জন্মগ্রহণ করে, তাহা কখনই মানুষের প্রীতি উৎপাদনের জন্য নয়। উদ্ভিদ্‌তত্ত্ববিদ্‌গণ ইহার স্বতন্ত্র কার্য্য নির্দ্দেশ করিয়া থাকেন। ফল প্রসব করিয়া নিজের বংশ অক্ষুণ্ণ রাখাই উদ্ভিদ্-জীবনের সার্থকতা। উদ্ভিদ্‌বিদ্‌গণ বলেন, ফুলের গন্ধ এই কার্য্যেরই সহায়তা করে। উদ্ভিদ্ পুষ্প-পুটে মধুভাণ্ড সজ্জিত রাখিয়া গন্ধের দ্বারা দূরের প্রজাপতি প্রভৃতি পতঙ্গকে আমন্ত্রণ করে। প্রজাপতি পুষ্পের মধুপান করিতে বসিয়া যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে ফুলের পরাগ গর্ভকেশরে সংযুক্ত করিয়া ফলের গঠন শুরু করিয়া দেয়। কিন্তু আমরা উদ্ভিদের যে তীব্র দুর্গন্ধের কথা বলিতেছি, তাহা পতঙ্গের আমন্ত্রণের জন্য নহে। যাহাতে অনিষ্টকর প্রাণী কাছে আসিতে না পারে তাহারি জন্য এই ব্যবস্থা। লিলি জাতীয় কতকগুলি ফুলের গন্ধ যে মানুষ সহ্য করিতে পারে না, এবং এই গন্ধে যে নানা প্রকার পীড়া দেখা দেয়, তাহার অনেক প্রমাণ পাওয়া গিয়াছে। আমাদের চাঁপা ফুলের গন্ধে মাথা ধরার কথাটাও এই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য।

 উদ্ভিদ ছাড়িয়া এখন প্রাণীর কথা আলোচনা করা যাউক। আত্ম-রক্ষার জন্য এবং কখনো কখনো আহার্য্য সংগ্রহের জন্য যে কত প্রাণীর দেহে কত রকম বিষ আছে, তাহার সংখ্যা করাই কঠিন। ইহারা সাধারণ উদ্ভিদের মত দেহকে বিস্বাদ করিয়া আত্মরক্ষা করে না, কাজেই জীবন-সংগ্রামে জয়ী করাইবার জন্য প্রকৃতি ইহাদের দেহেই নানা বিষদিগ্ধ অস্ত্র রাখিয়া দিয়াছেন। যাহা হউক প্রাণীর বিষগুলি পরীক্ষা করিলে, দেহে উহাদের দুই প্রকার কার্য্য দেখিতে পাওয়া যায়। কতকগুলি বিষ রক্তের সহিত যুক্ত না হইলে দেহের কোন অনিষ্ট করিতে পারে না। সাপের বিষ, বিচ্ছুর বিষ এই শ্রেণীর অন্তর্গত। অপর কতকগুলি, রক্তের সহিত মিশিবার