পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৮
প্রাকৃতিকী

জন্য প্রতীক্ষা করে না, খাদ্মপানের সহিত উদরস্থ হইলেই ইহারা বিষের কার্য্য দেখাইতে শুরু করে। মাকড়সা প্রভৃতির বিষ বোধ হয় এই শ্রেণীভুক্ত। কেবল সাপ ও বিচ্ছুর বিষই যে দেহপ্রবিষ্ট হইলে অনিষ্ট করে তাহা নয়। ভেকের গাত্র হইতে যে ঘর্ম্মবৎ রস নির্গত হয়, তাহা মানুষের শরীরে প্রবেশ করাইয়া দেখা গিয়াছে, ইহাতে অল্পক্ষণের মধ্যে মানুষ অসুস্থ হইয়া পড়ে। ইল্ অর্থাৎ বাইন জাতীয় সামুদ্রিক মৎস্যের (Eel) রক্ত যে-কোন প্রাণিদেহে প্রবেশ লাভ করিলেই বিষের লক্ষণ প্রকাশ করে। কয়েক জাতীয় মৎস্য এবং গিরিগিটির মুখের লালাও রক্তের সহিত যুক্ত হইলে বিষের কার্য্য দেখাইতে আরম্ভ করে। শিশুর মুখের লালায় যে বিষ আছে, ফরাসী বৈজ্ঞানিক পাষ্টুর সাহেব তাহা দেখাইয়াছেন: এক মাস দেড় মাস বয়সের শিশুর লালা সংগ্রহ করিয়া খরগোস ইত্যাদি প্রাণীর শরীরে প্রবিষ্ট করাইলে, বিষের লক্ষণ প্রকাশ পাইতে থাকে। কিন্তু এই সকল বিষ খাওয়াইলেই কোন প্রাণীতে অসুস্থতার চিহ্ন দেখা যায় না।

 বিষদাঁতযুক্ত প্রাণীর দেহে কোথায় বিষের উৎপত্তি হয় তাহার অনুসন্ধান হইয়াছে। ইহার ফলে জানা গিয়াছে, যাহাদের বিষ-দাঁত আছে, তাহাদের দাঁতের মূলে এক একটি ক্ষুদ্র কোষ থাকে। এই কোষই বিষভাণ্ড। সাপের বিষদন্তে যেমন এক একটা খাঁজ কাটা থাকে, বিষদন্তযুক্ত অপর প্রাণীর দাঁতেও ঠিক তাহাই দেখা যায়। ইচ্ছা করিলেই দন্তমূলের কোষস্থ বিষ ইহারা দাতের খাঁজের ভিতর দিয়া আনিয়া শত্রুকে দংশন করিতে পারে। মাগুর বা শিঙ্গি মৎস্যের কাঁটায় বিষ আছে, ইহারা হাতে পায়ে কাঁটা ফুটাইলে বেশ যাতনা হয়। এই শ্রেণীর অনেক মাছের কাঁটার মূলে এই প্রকার বিষকোষ ধরা পড়িয়াছে, এবং ইহাদের কাঁটাগুলিতে সাপের বিষদন্তের মত খাঁজ কাটাও দেখিতে পাওয়া যায়।