পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৮
প্রাকৃতিকী

শুনা যায় না। উচ্চপ্রাণীর দেহ ষ্টীম এঞ্জিনের মতই জটিল, ভাই তাহার দেহ-যন্ত্রের কোন অংশে একটু খুঁৎ হইলেই কল বন্ধ হইয়া যায়। সর্ব্বাঙ্গের রক্তসঞ্চালন জীবনরক্ষার একটা প্রধান অবলম্বন, কাজেই রক্তের চলাচল বন্ধ হইলেই প্রাণীর মৃত্যু ঘটে। রক্তে যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লোহিত কণিকাগুলি ভাসিয়া বেড়ায় তাহা অক্সিজেন বহন করিয়া সর্ব্বাঙ্গে ছড়াইয়া দেয়, সুতরাং রক্তে যদি অক্সিজেন না থাকে তবে মৃত্যু অনিবার্য্য হয়। অক্সিজেন শ্বাস-প্রশ্বাসের দ্বারাই দেহাভ্যন্তরে প্রবেশ করে, অতএব নিশ্বাসরোধ হইলেই প্রাণীর মৃত্যু সংঘটিত হয়। সুতরাং দেখা যাইতেছে, আত্মা দেহপঞ্জর ত্যাগ করিলেই মৃত্যু ঘটে এই প্রকার ব্যাখ্যান দিয়া দার্শনিকগণ যেপ্রকার নিশ্চিন্ত হন, শারীরবিদ‍্গণ -মৃত্যুর সেপ্রকার ব্যাখ্যান দিতে পারেন না। অনুসন্ধান করিতে গিয়া ইঁহারা প্রাণীর সকল ইন্দ্রিরে-ও সকল অঙ্গে প্রাণ দেখিতে পাইয়াছেন। সমগ্র প্রাণিশরীর ইঁহাদের মতে প্রাণময়।

 সম্প্রতি ফ্রান্সের এক বৈজ্ঞানিক-পরিষদে (French Academy of Medicine) ডাক্তার ক্যারেল্ (Dr. Alexis Carrel) মৃত্যুসম্বন্ধে যে কতকগুলি নূতন কথা বলিয়াছেন, তাহাই বড়ই বিস্ময়াবহ। আজকাল আজ‍্গবি বৈজ্ঞানিক সংবাদের অভাব নাই, সংবাদপত্রের পাতা উল‍্টাইলেই অনেক অদ্ভুত খবর জানা যায়। কিন্তু ডাক্তার ক্যারেল্ একজন নামজাদা শারীরবিৎ এবং ফ্রান্সের একাডেমি অব্ মেডিসিন্ নামক পরিষৎটিও সর্ব্বদেশে সুপরিচিত; এই সকল কারণে নূতন কথাগুলির উপর আস্থা-স্থাপন করিতে হইতেছে। কয়েক বৎসর পূর্ব্বে এই ক্যারেল্ সাহেবই সদ্যোমৃত প্রাণীর দেহ হইতে মাংস ছিন্ন করিয়া তাহা জীবিত রাখিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন। চেষ্টা সার্থক হইয়াছিল। নানা প্রকার আরকের মধ্যে নিমজ্জিত থাকিয়া মাংসখণ্ড জীবনের লক্ষণ দেখাইতে আরম্ভ করিয়াছিল, এবং শেষে তিনি এই