পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৩০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬৬
প্রাকৃতিকী

করিয়াছিলেন। কিন্তু এখন দেখা যাইতেছে, কেপ্‌লারের নিয়মে অনেক গলদ বর্ত্তমান। তাঁহার স্থূল-পর্য্যবেক্ষণ-লব্ধ নিয়মাবলী অনুসারে কয়েক বৎসর গ্রহ-নক্ষত্রের গতিবিধি ঠিকই দেখা গিয়াছিল, কিন্তু কালক্রমে তাঁহার প্রথম পর্য্যবেক্ষণের ভ্রম যখন বৎসরে বৎসরে পুঞ্জীভূত হইয়া বৃহৎ হইয়া দাঁড়াইয়াছিল, তখন আর গ্রহ-নক্ষত্র কেপ্‌লারের নিয়ম মানিয়া চলে নাই। কাজেই নিয়মের সংশোধনের প্রয়োজন হইয়াছিল। জগদ্বিখ্যাত মহাপণ্ডিত নিউটন্ সাহেব তাঁহার মহাকর্ষণের নিয়মাবলী দ্বারা কেপ্‌লারের নিয়মের সংশোধনে লাগিয়া গেলেন, খুব সূক্ষ্ম হিসাবপত্র চলিতে লাগিল এবং শেষে জানা গেল, কেপ্‌লার যে-সকল নিয়ম কেবল পর্য্যবেক্ষণের সাহায্যে আবিষ্কার করিয়াছিলেন, তাহাদের মূল মহাকর্ষণের নিয়মাবলীতেই প্রোথিত। পৃথিবী যে নিয়মের অনুগত হইয়া আতা-ফলকে মাটিতে ফেলে, সৌরজগতের প্রত্যেক জ্যোতিষ্কই যে, সেই নিয়মেরই অধীন হইয়া মহাকাশে পরিভ্রমণ করে; তাহাও সঙ্গে সঙ্গে জানা গেল। এই সকল ছাড়া, চন্দ্রের গতির উচ্ছৃঙ্খলতা এবং জোয়ারভাঁটা প্রভৃতি যে-সকল প্রাকৃতিক ঘটনা জ্যোতিষীদিগের নিকটে মহা প্রহেলিকা হইয়া দাঁড়াইয়াছিল, একে একে সেগুলিরও কারণ আবিষ্কৃত হইয়া পড়িল। ধূমকেতু যখন সৌরজগতে প্রবেশ করিয়া সূর্য্য প্রদক্ষিণ আরম্ভ করে, এবং অতি দুর প্রদেশে যুগ্মতারকাগণ যখন পরস্পরকে প্রদক্ষিণ করে, তখনও যে তলে তলে জ্যোতিষ্কগণ মহাকর্ষণেরই নিয়মাধীন থাকে, তাহাও সকলে জানিতে পারিলেন। সুতরাং দেখা যাইতেছে, নিউটন্ সাহেব খাতাপত্র লইয়া সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম হিসাবে নিযুক্ত থাকিয়া যে সময়টা ব্যয় করিয়াছিলেন, তাহার অপব্যবহার হয় নাই। তাঁহার সূক্ষ্ম হিসাবই এখন গ্রহ-নক্ষত্রের বর্ত্তমান ও ভবিষাৎ গতিবিধি আমাদিগকে সূক্ষ্মরূপে জানাইতেছে, এবং সৌরজগৎ ছাড়িয়া অতিদূর নক্ষত্রলোকের