পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ধাতুর কয়েকটি গুণ
২৯

সুতরাং কাঠিন্য ধাতুর প্রধান লক্ষণ। তা’ ছাড়া আলোক রোধ করিয়া তাহার কিয়দংশ প্রতিফলিত করা, তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবাহন করা, অল্প তাপে দ্রবীভূত না হওয়া, কঠিন আঘাত দিলে ভাঙ্গিয়া না গিয়া আকারান্তর পরিগ্রহ করা ইত্যাদি আরও অনেক লক্ষণের উল্লেখ দেখা যায়। বলা বাহুল্য, এই সকল লক্ষণ কেবল ধাতুরই বিশেষত্ব নয়; যেগুলি প্রত্যক্ষ অধাতু, সেগুলিতেও এই সকল লক্ষণ একাধিক পরিমাণে দেখা গিয়া থাকে। কাজেই কোন্ কোন্ বিশেষ ধর্ম্ম দেখিলে পদার্থকে ধাতু বলা যাইবে, তাহা নূতন করিয়া নির্ণয় করার প্রয়োজন উপস্থিত হইয়াছে।

 ইলেক্ট্রন বা অতি-পরমাণু নামক যে এক অতি সূক্ষ্ম জড়কণার উপরে আধুনিক বৈজ্ঞানিকগণ সৃষ্টিকে দাঁড় করাইতে চাহিতেছেন, তাহারই সাহায্যে ধাতুতত্ত্ব-সম্বন্ধে অনেক রহস্যের প্রকাশ হইবে বলিয়া আশা হইতেছে। ইহাতে ধাতুর প্রকৃত লক্ষণ কি এবং সেই লক্ষণগুলি কি প্রকারে প্রকাশ লাভ করে, তাহা নূতন করিয়া একে একে জানা যাইতেছে। ধাতু আধুনিক সভ্যতার একটি প্রধান উপাদান; কলকারখানা, ঘরবাড়ী এবং গৃহসজ্জার নানা উপকরণ প্রধানতঃ ধাতু দ্বারাই নির্ম্মিত; কাজেই ধাতুর প্রকৃতি জানিয়া তাহাকে যথোপযুক্তভাবে আমাদের সংসারের কার্য্যে লাগাইবার জন্য বৈজ্ঞানিকগণ বহু দিন হইতে চেষ্টা করিয়া আসিতেছেন। এই চেষ্টা যে কোন শুভ ফল প্রদান করে নাই, ইহা বলা যায় না। গণিতবিশারদগণ ধাতুর আণবিক অবস্থা ও অণুর গতিবিধি-সম্বন্ধে অনেক সন্ধান দিয়াছেন। রশ্মিনির্ব্বাচনযন্ত্র দ্বারা বৈজ্ঞানিকগণ জ্বলন্ত ধাতুর রশ্মিজালের অনেক নুতন তত্ত্ব আবিষ্কার করিয়াছেন। দুই বা ততোধিক ধাতু মিশাইয়া যে সঙ্কর ধাতুর (Alloy) উৎপত্তি হয়, তাহার ভিতরকার অণুগুলির বিন্যাস নানা পণ্ডিতের চেষ্টায় আমরা জানিতে পারিয়াছি। তরল বায়ুর (Liquid