পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বর্ণচ্ছত্র
৩৯

ক্ষুদ্র নক্ষত্রের গঠনোপাদান ও গতিবৈচিত্র্য নির্দ্ধারণ করিয়া ও অতীন্দ্রিয় নক্ষত্রমালার নিখুঁৎ ছবি তুলিয়া দৃষ্টির অনন্ত প্রসারতায় বিমুগ্ধ হন। অল্পায়াসেই ত্রিকোণ কাচ সংগ্রহ করিয়া যথেষ্ট আলোক বিশ্লেষণ করিতে পারা যায়, এজন্য অপরাপর বৈজ্ঞানিক যন্ত্রের ন্যায়, বর্ণচ্ছত্র দেখিবার জন্য জটিল যন্ত্র নির্ম্মাণের কোনই আবশ্যক হয় না। কেবল এই ক্ষুদ্র কাচখণ্ডের সাহায্যে আজকাল যে-সকল অভাবনীয় আবিষ্কার হইতেছে, তাহার হিসাবে, আধুনিক বিজ্ঞানে এই সামান্য যন্ত্রটি অমুল্য বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। কেবলমাত্র আলোক-বিজ্ঞানে নয়, বর্ণচ্ছত্র দ্বারা বিজ্ঞানের সকল শাখাতেই নানা অভিনব তত্ত্ব আবিষ্কৃত হইতেছে। আধুনিক রসায়নবিৎ পণ্ডিতগণ বর্ণচ্ছত্রের পরীক্ষা দ্বারা পদার্থের প্রকৃতি নির্ণয় করিতেছেন এবং অল্পদিনের মধ্যে এই উপায়ে কয়েকটি সম্পূর্ণ অপরিজ্ঞাত মৌলিক পদার্থের অস্তিত্ব আবিষ্কার করিয়াছেন। এতদ্ব্যতীত পদার্থ-বিশ্লেষণের পরিজ্ঞাত উপায়গুলির মধ্যে, বর্ণচ্ছত্র পরীক্ষার প্রথাই (Spectrum Analysis), অতি সূক্ষ্ম ও সরল উপায় বলিয়া নির্দ্দিষ্ট হইয়াছে।

 জড়বিজ্ঞানের ইতিহাস পর্য্যালোচনা করিলে দেখিতে পাওয়া যায়, ইহার প্রত্যেক শাখাপ্রশাখার পূর্ণতার জন্য অনেক পণ্ডিতের বহুকালব্যাপী অনুসন্ধান ও গবেষণার আবশ্যক হইয়াছে। একজনের আজীবন পরিশ্রম দ্বারা কোন বিজ্ঞানই উন্নতির উর্দ্ধ সোপানে পৌঁছে নাই। আলোক বিজ্ঞান ও বর্ণচ্ছত্রের ইতিহাসে এ নিয়মের ব্যভিচার হয় নাই। অনেক খ্যাতনামা বিজ্ঞানাচার্য্যের অবিচ্ছিন্ন অধ্যবসায় ও পরিশ্রমের ফলে আলোক বিজ্ঞানের আজ এই উন্নতি হইয়াছে,—তবে তাড়িৎ-বিজ্ঞানাদির পরিণতি হইতে যেমন অধিক সময় লাগিয়াছে, সৌভাগ্যক্রমে বর্ণচ্ছত্রের উন্নতির জন্য তত সময়ের আবশ্যক হয় নাই। আলোক-বিশ্লেষণ দ্বারা জটিল যৌগিক পদার্থের প্রকৃতি নির্ণয়ের কথা