পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বর্ণচ্ছত্র
৪১

কয়েকটি মৌলিক বর্ণের সমষ্টি তাহা নিউটনই সর্ব্বপ্রথম প্রচার করেন, এবং বর্ণচ্ছত্রের বর্ণগুলি একখানি স্থূলমধ্য কাচের (Double convex lens) সাহায্যে একত্র করিয়া পুনরায় শ্বেতালোক উৎপাদন দ্বারা তাহা প্রত্যক্ষ দেখাইয়াছিলেন। কিন্তু নিউটন অবলম্বিত উপায়ে অবিমিশ্র বর্ণচ্ছত্র রচনা অসম্ভব বলিয়া, সৌর বর্ণচ্ছত্রের প্রধান লক্ষণ প্রসিদ্ধ কৃষ্ণরেখাগুলি সে সময় আবিষ্কৃত হয় নাই।

 বর্ণচ্ছত্র দ্বারা আজ কাল যে-সকল অদ্ভুত কার্য্য সাধিত হইতেছে, তাহা বুঝিতে হইলে আলোক কি প্রকারে বিশ্লিষ্ট হয়, তাহা মোটামুটি জানা আবশ্যক। আধুনিক পণ্ডিতগণ বলেন, শুভ্রালোকের উপাদান মূল বর্ণগুলির প্রকৃতি সমান নয়। প্রত্যেক বর্ণ, বিশ্বব্যাপী ঈথর নামক পদার্থের কম্পনজাত এক একটি নির্দ্দিষ্ট তরঙ্গ দ্বারা উৎপন্ন হয়। এই তরঙ্গের দৈর্ঘ্য বর্ণচ্ছত্রের লোহিতাংশেই সর্ব্বাপেক্ষা অধিক এবং লোহিত হইতে বর্ণানুক্রমে কমিতে কমিতে ভায়লেটৃ অংশে ইহা অত্যন্ত অল্প হইতে দেখা যায়; গণনা করিলে লোহিতের তরঙ্গ-দৈর্ঘ্য ভায়লেট তরঙ্গের প্রায় দ্বিগুণ হইয়া পড়ে। যদিও মৌলিক বর্ণগুলির তরঙ্গদৈর্ঘ্যের এই প্রকার পার্থক্য লক্ষিত হয়, কিন্তু কোন নির্দ্দিষ্ট পদার্থ মধ্যে ইহাদের গতি একই থাকে না, এজন্য তরঙ্গের দৈর্ঘ্যহিসাবে ঈশ্বরকণার কম্পন-পরিমাণের হ্রাসবৃদ্ধি হইতে দেখা যায় এবং দীর্ঘ তরঙ্গযুক্ত বর্ণের কম্পন-সংখ্যা ক্ষুদ্র তরঙ্গযুক্ত বর্ণের কম্পন-পরিমাণ অপেক্ষা অল্প হইয়া থাকে। এই কারণে লোহিতাদি বর্ণ অপেক্ষা ভায়লেট দ্বারাই ঈথরকণা সকল অতি দ্রুত কম্পিত হয়। বিজ্ঞানানুরাগী পাঠকপাঠিকাগণ জানেন, আলোক রশ্মি কোন এক নির্দ্দিষ্ট স্বচ্ছ পদার্থ দিয়া গমনকালে, সকল সময়েই সরল পথ অবলম্বন করিয়া থাকে। একটি অন্ধকার গৃহের জানালার ছিদ্র দিয়া সূর্য্যকিরণ প্রবেশ করাইয়া, বায়ুতে ভাসমান ধূলিকণা দ্বারা রশ্মিপথ সহজেই পরীক্ষা করা যাইতে