পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নূতন বিশ্লেষণ-প্রথা
৪৯

রেখাগুলির সংখ্যা ও স্থান প্রত্যক্ষ নির্দ্দেশ করিয়া দেখাইলে পর, সকল সন্দেহই অপনীত হইয়াছিল। ফ্রান্‌হোফার এই ক্ষুদ্র যন্ত্র দ্বারা প্রায় ছয়শত কৃষ্ণরেখা আবিষ্কার করিয়াছিলেন। এই বিখ্যাত পণ্ডিত কেবল কৃষ্ণরেখা আবিষ্কার করিয়াই ক্ষান্ত হন নাই, প্রায় তিন বৎসর অবিরাম পরিশ্রম দ্বারা সেগুলির পরস্পর ব্যবধান স্থির করিয়া, সৌর বর্ণচ্ছত্রের কয়েকটি প্রতিকৃতিও অঙ্কিত করিয়াছিলেন। এতদ্ব্যতীত ইনি বর্ণচ্ছত্র সম্বন্ধে আরও অনেক নূতন সত্য আবিষ্কার করিয়াছিলেন। কৃষ্ণরেখাগুলির সংখ্যা যে নির্দ্দিষ্ট, এবং সাধারণ সূর্য্যালোকে ও চন্দ্রাদি গ্রহ-উপগ্রহাগত প্রতিফলিত আলোকে, ঐ কৃষ্ণরেখাগুলির স্থানও যে নির্দ্দিষ্ট এবং অপরিবর্ত্তনীয়, তাহাও ফ্রান্‌হোফার সর্ব্ব প্রথম প্রচার করেন। এই প্রকারে নানা বিষয়ে কৃতকার্য্য হইলেও, নানা পরীক্ষা ও চেষ্টাতে, ফ্রান্‌হোফার কৃষ্ণরেখা উৎপাদনের মূল কারণ নির্দ্দেশ করিতে পারেন নাই।

 ফ্রান্‌হোফারের কথা ছাড়িয়া দিয়া, বর্ত্তমান শতাব্দীর গবেষণাপরায়ণ পণ্ডিতদের কথা স্মরণ করিলে, বর্ত্তমান প্রসঙ্গে সার্ জন হার্সেল ও ফক্স ট্যালবটের কথা স্বতঃই মনে হয়। এই বৈজ্ঞানিকদ্বয়ের মৌলিক গবেষণা দ্বারা, বর্ণচ্ছত্রের প্রকৃতি সম্বন্ধে অনেক অপরিজ্ঞাত বিষয় প্রকাশিত হইয়াছিল, এবং বর্ণচ্ছত্র দ্বারা পদার্থের প্রকৃতি নির্ণয়ের কথা, এই পণ্ডিতযুগলই সর্ব্বপ্রথম জগতে প্রচার করিয়াছিলেন। ১৮২২ খৃষ্টাব্দে হার্সেল সাহেব, বিবিধ জ্বলন্ত পদার্থের বর্ণচ্ছত্র পরীক্ষায় নিযুক্ত হন এবং প্রত্যেক পদার্থের বর্ণচ্ছত্রের নির্দ্দিষ্টাংশে এক একটি স্থূল বর্ণরেখা দেখিয়া, এই নির্দ্দিষ্ট বর্ণরেখাগুলিকেই, দাহ্য পদার্থের প্রকৃতিজ্ঞাপক বলিয়া স্থির করেন। হার্সেলের পরীক্ষাকালে, তাৎকালিক অন্যতম প্রধান বিজ্ঞানবিৎ সার্ ডেভিড ব্রুষ্টার ইহাতে যোগ দিয়াছিলেন, এবং নানা প্রকার উদ্ভিজ্জরসে বর্ণচ্ছত্র পাতিত করিলে ইহার বর্ণ পরিবর্ত্তন