পাতা:প্রাচীন ভারতে নারী - ক্ষিতিমোহন সেন (১৯৫০).pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বরদরাজ-কৃত ব্যবহারনির্ণয় ও নারীদের অধিকার
১০৭

নারদের মতও উদ্ধৃত করিয়া বিষয়টির গুরুত্ব বুঝাইয়াছেন। নারদ আরও বলেন, স্বীয় দৈহিক লক্ষণের পরীক্ষায় যদি পুরুষের পুংস্থ সিদ্ধ হয়, সকল সন্দেহ নিরসন হইয়া যদি তাহার পুরুষত্ব নিশ্চিত হয় তবেই সে কন্যা লাভ করিতে পারে—

পরীক্ষ্য পুরুষং পুংস্ত্বে নিজেরেবাঙ্গলক্ষণৈঃ।
পুমাংশ্চেদবিকল্পেন স কন্যাং লব্ধুমর্হতি॥[১]

 তাহার পর নারদ পুরুষলক্ষণ ও ক্লীবলক্ষণ সবিস্তারে বর্ণনা করিয়াছেন।

 ক্লীবত্ব বহুবিধ। অনেক ক্ষেত্রে তাহা দুঃসাধ্য। মানসিক বা ভাবনাগত ক্লীবত্বের প্রতীকার সম্ভব। তবে তাহার প্রতিকার একটু সময়সাধ্য। নানাবিধ ক্লীবত্বের আলোচনা বরদরাজ করিয়াছেন (পৃ ৩৭৯-৩৮১)। এই বিষয়ে যাঁহারা অনুসন্ধিৎসু তাঁহারা মূলগ্রন্থ পড়িয়া দেখিতে পারেন।

 ক্লীবত্ব নানাবিধ। কোনো ক্লীবত্ব স্থানবিশেষে, কোনোটা বা কালবিশেষে, কোনোটা বা পাত্রবিশেষে ধরা পড়ে। বিবাহের পরে স্ত্রীসঙ্গম হইবার পরেও যদি ক্লীবত্ব ধরা পড়ে, অর্থাৎ পতির পুরুষত্ব ঠিকমত নাই ইহা বুঝা যায়, তবে ভার্যা সঙ্গতা হইলেও পতিত পতির মত ভর্তাকে ত্যাগ করা চলে। নারদের এই মত ব্যবহারনির্ণয় উদ্ধৃত করিয়াছেন—

সংত্যক্তব্যাঃ পতিতবৎ ক্ষতযোন্যা অপি স্ত্রিয়া। পৃ ৩৮১

ক্ষতযোনিরই যদি পুনরায় বিবাহ দিবার ব্যবস্থা নারদ দিয়া থাকেন তবে যে কন্যার মাত্র বরণ ও পাণিগ্রহণ হইয়াছে তাহার বিষয়ে আর কথা কি। তাই বরদরাজ বলেন—

কিমুতাক্ষতযোন্যা বরণপাণিগ্রহণমাত্রায়াঃ। পৃ ৩৮১

ইহার পাদটীকাতে (নারদীয় মনুসংহিতা, ১২৮ পৃষ্ঠা) দেখা যায়— ক্ষতযোন্যা অপি, কিমুতাক্ষতযোন্যা বরণপাণিগ্রহণমাত্রেণ। পৃ ৩৮১ কোনো কোনো ক্লীবত্বে একপক্ষ বা একমাস পরীক্ষা করিলেই চলে, কোথাও কোথাও সংবৎসর দেখিতে হয়। নারদ বলেন, ইহাতেও প্রতিকার না হইলে তাহাকে ত্যাগই করিতে হইবে—

তত্রাদ্যাবপ্রতীকারৌ পক্ষাথ্যো মাসমাচরেৎ।
অনুক্রমাৎ ত্রয়স্যাস্য কালঃ সংবৎসরঃ স্মৃতঃ। পৃ ৩৮০


  1. নারদীয়-মনু, ১২,৮ পৃ ৩৭৮