অথচ আমাদের বাংলাদেশে শুধু বাগ্দানের পর বরের মৃত্যু ঘটিয়াছে বলিয়া আজীবন বহু কন্যা বৈধব্য বরণ করিয়াছেন এমন অনেক ঘটনা ছেলেবেলায় কাশীতে আমি দেখিয়াছি। তাঁহাদের বিবাহ-অনুষ্ঠানই হয় নাই, অথচ সামাজিক রীতি অনুসারে আজীবন তাঁহারা বৈধব্য পালন করিয়াছেন। এই বিষয়ে মনুর একটি বিধি ব্যবহারনির্ণয় উদ্ধৃত করিয়াছেন। মনু তো অতিশয় সাবধান ও কঠিন বিধি বিধানের পক্ষপাতী। তিনিও বলেন, পাণিগ্রহণঅনুষ্ঠানমন্ত্রের সপ্তপদীর সপ্তমপদ নিক্ষেপের পর বিবাহের মন্ত্রগুলির দ্বারা কন্যার পত্নীত্ব প্রতিষ্ঠিত হইবে, ইহাই বিদ্বজ্জনের মত—
পাণিগ্রহণিকা মন্ত্রা নিয়তং দারলক্ষণম্
তেষাং নিষ্ঠা তু বিজ্ঞেয়া বিদ্বদ্ভিঃ সপ্তমে পদে। পৃঃ ৩৮৬
উদ্ধৃত যম বচনেও এই মতেরই সমর্থন মেলে। উদকপূর্ব দানে বা বাগ্দানে কন্যার পতিত্ব লাভ করা যায় না। পাণিগ্রহণ সংস্কারের সপ্তপদীর সপ্তম পদে পতিত্ব সিদ্ধ হয়—
নোদকেন ন বাচা চ কন্যায়াঃ পতিবিয়তে।
পাণিগ্রহণসংস্কারাৎ পতিত্বং সপ্তমে পদে॥ পৃ ৩৮৭
এই বিষয়ে কাত্যায়নে ও মনুতে (৯.৯৭) ইহার চেয়েও একটু উদার বিধি আছে, তাহাও ব্যবহারনির্ণয় উদ্ধৃত করিয়াছেন। সেই কন্যার সঙ্গে যদি পতির দৈহিক সম্বন্ধ না হইয়া থাকে, কন্যা যদি পতির গৃহে গিয়াই ফিরিয়া আসিয়া থাকে তবে পৌনর্ভব ভর্তার সঙ্গে পুনরায় তাহার বিবাহসংস্কার হইতে পারে—
সা চেদক্ষতযোনিঃ স্যাদ্ গতপ্রত্যাগতাঽপি বা।
পৌনর্ভবেন ভর্ত্রা সা পুনঃ সংস্কারমর্হতি॥ ঐ
শাতাতপেরও এই মতটি উদ্ধৃত হইয়াছে, কন্যা উদ্বাহিত হইলেও যদি মৈথুন না ঘটিয়া থাকে তবে পুনরায় সে পত্যন্তরে বিবাহিত হইতে পারে। কারণ অন্যান্য কুমারীকন্যার সঙ্গে তাহার তো কোনো ভেদই নাই—
উদ্বাহিতা তু যা কন্যা সংপ্রাপ্তা ন চ মৈথুনম্।
ভর্তারং পুনরভ্যেতি যথা কন্যা তথৈব সা। ঐ
স্বামী যদি বিদেশে চলিয়া যায় বা নিরুদ্দেশ হইয়া যায় তবে নারীর পক্ষে