পাতা:প্রাচীন ভারতে নারী - ক্ষিতিমোহন সেন (১৯৫০).pdf/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৮
প্রাচীন ভারতে নারী

এবং সেইসব প্রতিকূল মত খণ্ডন করিয়া যুক্তিযুক্ত উত্তম মতটি স্থাপন করিয়াছেন। বরদরাজ বলেন, অনেকে মনে করেন পুত্রাভাবেই কন্যারা পিতার সম্পত্তি পাইতে পারেন—

যানি পুনর্দুহিতৄণাং ধনপ্রতিপাদকানি বাক্যানি তানি পুত্রিকাবিষয়াণি। ঐ পৃ ৪৫৬

আবার অনেকে মনে করেন, স্ত্রীগণের দায়সম্বন্ধ নাই—

অন্যে তু স্ত্রীণাং ন দায়সম্বন্ধঃ। ঐ

কারণ শ্রুতিতে আছে—

তস্মাৎ স্ত্রিয়ো নিরিন্দ্রিয়া অদায়াদীঃ। ঐ

 এই বাক্যটি আপস্তম্ব-ধর্মসূত্রের।

 এইখানে বরদরাজ স্মৃতি ও পুরাণ হইতে বিস্তর প্রতিকূল বচন একত্র করিয়া দেখাইয়াছেন যাহাতে নারীদের উত্তরাধিকার নাই। কোনো কোনো পুরাণবাক্যে আছে, স্বামীর মৃত্যুর পরে বিধবাকে খোরাক-পোশাক মাত্র দিতে হইবে, তাহাও দিবে, হিসাব করিয়া—

বসনাশনবাসাংসি বিগণয়্য ধবে মৃতে। ঐ

কোনো কোনো স্মৃতিতে আছে, সবদ্রব্যই যজ্ঞার্থ উৎপন্ন, সেখানে নারীর অধিকার নাই, তাই তাহাদের উত্তরাধিকার নাই। মাত্র গ্রাসাচ্ছাদন তাহারা পাইতে পারে—

যজ্ঞার্থং দ্রব্যমুৎপন্নং তত্র নাধিকৃতাঃ স্ত্রিয়ঃ।
অরিক্‌থভাজস্তাঃ সর্বাঃ গ্রাসাচ্ছাধনভাজনাঃ॥ ঐ

 বৃহস্পতি বলেন, যৌবনে বিধবা হইলে নারী কর্কশা হইয়া যায়। তাই জীবন যাপন করিবার মত তাহাকে সামান্য কিছু খোরপোশ দিলেই চলে—

বিধবা যৌবনস্থা চেন্ নারী ভবতি কর্কশা।
আয়ুষঃ ক্ষপণার্থং তু দাতব্যং জীবনং তদা॥ পৃ ৪৫৭

 মনুর মতে, অপুত্রা বিধবা সৎপথে থাকিলে ভরণপোষণমাত্র পাইতে পারে। প্রজাপতি বলেন, বিধবার খোরাকী বলিয়া আঢ়ক-প্রমাণ শস্য দিবে—

আঢ়কং ভর্তৃহীনায়া দাতব্যং বিধবাশনম্। ঐ

অপরাহ্ণে ইন্ধন ও একপ্রস্থ চাউল তাহাকে দিবে—

অন্নার্থং তণ্ডুলপ্রস্থমপরাহ্ণে তু সেদ্ধনম্। ঐ