যুক্ত হয় তখন তার সেই রূপ। এই পরিচয় তো বাহ্যমাত্র, আসলে সর্বত্রই আত্মা তো এক—
নৈব স্ত্রী ন পুমানেব ন চৈবায়ং নপুংসকঃ।
যদ্যচ্ছরীরম্যদত্তে তেন তেন স যুজ্যতে। শ্বেতাশ্বতর ৫, ১০
জৈন ও বৌদ্ধ সাধনাতেও বহু নারী তপস্যার উচ্চতম সিদ্ধিলাভ করিয়াছেন থেরীগাথা গ্রন্থে এইরূপ বহু বৌদ্ধ তপস্বিনীর পরিচয় আছে।
সংসারাশ্রমেও পত্নীর অধিকার কম ছিল না। যজ্ঞে ও সামাজিক ধর্মাচরণে পত্নীর পূর্ণ অধিকার ছিল।[১] ‘জায়া’ কথাতে ততটা অধিকার সূচিত হয় না।
জায়াশব্দে তিনি পুত্রের জননী মাত্র। ‘পত্নী’ কথাতে বুঝা যায়, নারীদেরও অধিকার ও নেতৃত্ব আছে। তবে অনেকস্থলে পত্নীকে জায়া বলিয়া প্রকরণবিশেষে উল্লেখ করা হইয়াছে। শতপথ-ব্রাহ্মণের (১. ১. ৪. ১৩) জায়াকে মৈত্রায়ণী-সংহিতা (৪.৮. ১) বলিলেন ‘পত্নী’, মনু বলিলেন, ‘স্ত্রী’। পূর্বে যেখানে জায়াই আহুতি দিতে পারিতেন সেখানে পরে সেই আহুতি দিতেন পুরোহিতেরা।[২] অর্থাৎ জায়ার এই অধিকারটুকু ক্রমশ সংকুচিত হইল।
তৈত্তিরীয় আরণ্যকে দেখা যায়, মন্ত্রপাঠে হোমে আহুতিতে স্ত্রী সমানভাবে যোগ দিতে পারিতেন, সামগানের সময়ে ধুয়াও ধরিতে পারিতেন। পরে এরূপ তর্কও উঠিল, যেহেতু স্ত্রীর নিজস্ব অর্থ নাই তাই তাঁহার যজ্ঞ অসম্ভব। জৈমিনি এইরূপ তর্ক তুলিয়া তাহার উত্তর দিয়াছেন যে, অর্থে স্বামীর ও স্ত্রীর অধিকার সমবেত, ‘অর্থেন চ সমবেতত্বাৎ’[৩]; কাজেই সেখানে ভাষ্যকার মাধবও বলেন, নারীদেরও ধর্মকর্মের অধিকার আছে, ‘অস্তি স্ত্রিয়াঃ কর্মাধিকারঃ’। এইরূপ ক্ষেত্রে স্বামীর ও স্ত্রীর একই অধিকার এবং একত্র অধিকার[৪] আশ্বলায়ন-শ্রৌতসূত্রে যজ্ঞপত্নীর কর্তব্যের কথা পাওয়া যায়। তাহার আদি— ‘বেদং পত্ন্যৈ প্রদায় বাচয়েদ্ হোতা অধ্যর্যুবা বেদোঽসি বিত্তিরসি’ ইত্যাদি