নির্জনে প্রসব করিয়া কোথাও ফেলিয়া দেওয়া হইত। ঋগ্বেদের ২.২৯.১ মন্ত্রে আদিত্যগণের স্তবে বুঝা যায়, দেবতা ‘রহসূঃ’কে ক্ষমা করিতেন। ‘রহসূঃ’ অর্থে সায়ণ বলেন, রহসি অন্যৈরজ্ঞাতপ্রদেশে সূয়তে, ইতি রহসূর্ব্যভিচারিণী— যে ব্যভিচারিণী গোপনস্থানে প্রসব করিয়া যায়।
নারীপুরুষদের মিলনস্থানে ‘সমন’ প্রভৃতিতে লোকে পতি খুঁজিত।[১] সমন প্রভৃতি মেলার মিলনস্থানে পুরুষ-নারীর অবাধ ও অবৈধ মিলনও ঘটিত। সেখানে অনেক দুর্নীতিও প্রশ্রয় পাইত। এইরূপ সমনে সুন্দর মধুর স্মিতহাস্যময়ী নারীদের উল্লেখ দেখা যায়—
সমনেব যোষাঃ কল্যাণ্যস্ময়মানাসঃ। ঋগ্বেদ ৪.৫৮.৮
ঋগ্বেদের ৬.৭৫.৪ মন্ত্রেও ‘সমনের ঘোষা’ পদ দেখা যায়। ঋগ্বেদের দশমমণ্ডলে আছে, “সমনং ন যোষা” (১০.১৬৮.২)।
এইসব স্খলন কখনও কখনও ঘটিত সাংসারিক অভাবে এবং রক্ষাকর্তার অভাবে। যে কন্যার পিতা বা ভ্রাতা থাকিত না তাহাদের অনেক সময় এইরূপ দুর্গতি ঘটিত (ঋগ্বেদ ১.১২৪.৭)। বিবাহবিনা এইরূপে পিতৃগৃহে যেসব কন্যার বয়স চলিয়া যাইত তাহাদিগকে ‘অমাজুর’ বলিত।[২] যোষা ছিলেন এইরূপ কন্যা (ঋগ্বেদ ১.১১৭.৭)।
ভ্রাতৃহীনা কন্যাকে ‘পুত্রিকা’ বলিত। আর-এক কারণেও পুত্রিকাকে কেহ বিবাহ করিতে চাহিত না। কারণ তাহার সন্তান তাহার মাতামহের বংশরক্ষা করিত।[৩]
ঋগ্বেদে দেখা যায়, ভ্রাতৃহীনা কন্যারা অনেক সময় পতিদ্বেষিণী দুরাচারা স্বৈরিণী পাপরতা মিথ্যা ও অসত্যপরায়ণা হইয়া গভীর নরকগামিনী হইত—
অভ্রাতরো ন যোষণো ব্যন্তঃ পতিরিপো ন জনয়ো দুরেবাঃ।
পাপাসঃ সংতো অনৃতা অসত্যা ইদম্পদমজনতা গভীরং। ৪.৭.৫
অথর্ব বেদে আছে, ভ্রাতৃহীনা যুবতী লোহিতবস্ত্রা কন্যা যেন চলিয়াছে—
যন্তি যোষিতে লোহিতবাসসঃ
অভ্রাতর ইব জাময়ঃ। ১.১৭.১