বোধায়ন (১. ১৬. ২-৫) এবং বসিষ্ঠ (১. ২৪-২৫) তাঁহাদের ধর্মসূত্রে দিয়াছেন। পারস্কর-গৃহ্যসূত্রেও (১, ৪) সেই সম্মতি দেখা যায়। ব্যাস- সংহিতাও বলেন, ঊঢ়া অসবর্ণা পত্নীতে জাত সন্তান সবর্ণার গর্ভে জাত সন্তান হইতে হীন হয় না— ন স্বর্ণাৎ প্রহীয়তে (২.১০)।
সাধারণত লোকে একই পত্নী বিবাহ করিতেন। তবে একাধিক বিবাহও পুরুষের পক্ষে নিষিদ্ধ ছিল না। মৈত্রায়ণী-সংহিতা বলেন, ধর্ম শাস্ত্রব্যবস্থাপক মনুরই দশটি পত্নী ছিলেন। মনুপত্নীদের দশজনের মধ্যে একজন দশপুত্রা তার পর নবপুত্রা তার পর অষ্টপুত্রা সপ্তপুত্রা ষট্পুত্রা পঞ্চপুত্রা চতুষ্পুত্রা ত্রিপুত্রা দ্বিপুত্রা ও একপুত্রা ছিলেন—
‘মনের্বৈ দশজায়া আসন্ দশপুত্রা নবপুত্রা অষ্টপুত্রা সপ্তপুত্রা ষট্পুত্রা পঞ্চপুত্রা চতুষ্পুত্রা ত্রিপুত্রা দ্বিপুত্রা একপুত্রা’ (১. ৫. ৮)। তবেই মনুর দশপত্নীর পঞ্চান্নটি পুত্র ছিলেন। শতপথ ব্রাহ্মণেও (৯. ১. ৪. ৬) এই প্রথার বৈধতা বুঝাইবার চেষ্টা করা হইয়াছে। রাজাদের প্রায়ই চারিটি স্ত্রীর উল্লেখ দেখা যায়। প্রথমা হইলেন মহিষী। তার পর পরিবৃক্তী বা ‘দুয়ো’রানী, হয়তো সন্তান না হওয়ায় তিনি উপেক্ষিতা। তার পর বাবাতা বা ‘সুয়ো’। তার পর পালাগলী, ইনি রাজার কোনো অনুচরের কন্যা। এইসব কথা নানাস্থানের উল্লেখসহ Macdonell এবং Keith এর Vedic Index গ্রন্থে (vol. 1. p. 478) ভালো করিয়া লিখিত আছে। নারীর একসঙ্গে বহুপতির প্রথা বেদে দেখা যায় না। স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে পরস্পরকে লঙ্ঘন করা নিষিদ্ধ ছিল। তবে আইনে বিধান না থাকিলেও কোথাও কোথাও যে বিধির ব্যতিক্রম হইত, তাহা দেখাই যায়। আর তাহা কোন্ দেশে অথবা কোন্ কালেই বা না দেখা যায়?
প্রাচীন কালে যখন বরকন্যা পরস্পরকে পছন্দ করিয়া বিবাহ করিতেন তখন টাকা-পয়সার প্রশ্ন উঠিতই না। তার পর কোথাও কোথাও পণ দিয়া কন্যাসংগ্রহ করিতে হইত।[১]
মনুও (৩. ৫৩) ইহার উল্লেখ করেন, কিন্তু অনুমোদন করেন না। তবে বরপক্ষ যাহা দেন তাহা যদি পিতৃকুলে গৃহীত না হইয়া কন্যাকেই দেওয়া হয় তবে তাহাতে বিক্রয় হয় না (৩. ৫৪)। কন্যাবিক্রয়কে মনু নিন্দা করিয়াছেন।
- ↑ তৈত্তিরীয়-সংহিতা ২.৩.৪.১; কাঠক-সংহিতা ৩৬. ৫; মৈত্রায়ণী-সংহিতা ১, ১০, ১১ তৈত্তিরীয় ব্রাহ্মণ ১, ১, ২. ৪