পুত্র-পৌত্রাদিই কাম্য ছিল। ধন জনবৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হইত। তবে বিবাহানুষ্ঠানের সর্বপ্রধান ও সর্বপ্রথম কথাই হইল বরণ (নারদীয়-মনুসংহিতা ১২.২)। তার পরই হইল একত্রে গমন-যজন-ভোজন। এই তিনটিই বিবাহানুষ্ঠানের মুখ্য অঙ্গ।
অথর্বে সূর্যার বিবাহের আদিতেই সত্যে ও বিশ্বে ও দেবতার মধ্যে বিবাহের প্রতিষ্ঠামন্ত্র দেখা যায়। পূর্বকৃত কোনো দুর্নীতি যদি থাকে তবে তাহা হইতে মুক্তির জন্য বরুণের কাছে নিষ্কৃতি প্রার্থিত হয় (১৪. ১. ১৯)। স্বামীর পক্ষে কন্যা যাহাতে বরের ‘স্যোনা’ বা আনন্দদায়িণী হয় তাহাই সকলে চাহিতেন। পতির গৃহে যাহাতে কন্যা গিয়া ‘পত্নী’ হইতে পারে (১৪.১.২০), গার্হপত্য ধর্মে সদা জাগ্রত থাকে (১৪. ১.২১), দীর্ঘজীবী হইয়া পুত্রপৌত্র সহ সুখী হইতে পারে (১৪.১. ২২) তাহাই প্রার্থনা করা হইত। নিত্য যেন উভয়ের কাছে উভয়ে নবীন হইতে থাকে (১৪. ১. ২৪)। বিচ্ছেদ বা মতান্তর না ঘটে (১৪.১.৩২), পত্নী যেন দীপ্ত গৌরবে শোভমানা হয় (১৪. ১. ৩৫-৬), সমস্ত প্রকৃতি যেন বধূর কল্যাণকারিণী হয় (১৪. ১.৪০), ইহাই আশীর্ব্বাদ করা হইত। দাক্ষিণ্যে ও উদারতায় পতিগৃহে গিয়া যেন কন্যা সম্রাজ্ঞীর ন্যায় গৌরবান্বিত হয়, ইহা কামনা করা হইত (১০.১. ৪৩-৪৪)। পতিও সৌভাগ্যকল্যাণ কামনা করিয়া পত্নীর হস্ত গ্রহণ করিতেন (১৪. ১. ৫০)। পতি বলিতেন, “আমি তোমাকে নীতির দেবতা বরুণের পাশ হইতে মুক্ত করিলাম (১৪. ১.৫৮)। হে সুন্দরি, পুষ্পশোভিত সুকিংশুক বিচিত্র সজ্জায় সজ্জিত, হিরণ্যবর্ণ, সুবৃত চক্ররথে আরোহণ করিয়া পতির পক্ষে এই রথকে আনন্দময় করিয়া অমৃতলোকে যাত্রারম্ভ কর (১.১৪. ৬১)। সর্বদিকে ব্রহ্মপরিবৃত হইয়া, হে কল্যাণি, আনন্দময়ি, তুমি দেবপুরে গিয়া পতিলোকে বিরাজমানা হও (১৪. ১. ৬৪)।”
দ্বিতীয় সূক্তে ৭৫টি মন্ত্র। তাহাতে প্রধানত অকল্যাণ দূর করিয়া নানা সৌভাগ্য কামনা করা হইয়াছে: “বিধাতা এই নারীকে এই সংসার দিয়াছেন, সে এখানে কল্যাণী হউক (১৪.২.১৩)। বিষ্ণুর সরস্বতীর মত এখানে তুমি প্রতিষ্ঠিত হও, তুমি বিরাট হও (১৪.২.১৫)। সকলের আনন্দ ও কল্যাণ বিধান কর, পতির কল্যাণকারিণী হও (১৪.২. ১৭-১৮)। গার্হপত্য অগ্নি, পিতৃগণ ও সরস্বতীকে (২৬-২৭) নমস্কার কর (১৪.২. ২০)। বিদায় লইবার