তবে বৈদিক যুগে স্বামী মারা গেলে বা স্বামী বাঁচিয়া থাকিতেও যদি পতিপত্নীর মধ্যে কোনো কারণে বিদ্বেষ ও বিচ্ছেদ ঘটিত, তবে সেই স্ত্রী যদি পুনরায় অন্য কাহাকেও বিবাহ করিত, তবে অজ-পঞ্চৌদন অনুষ্ঠান করা হইলে সকলে মনে করিতেন যে সেই স্ত্রীর এবং তাহার এই দ্বিতীয় পতির মধ্যে আর কখনও বিচ্ছেদ ঘটিবে না। অথর্ব বেদে ঋষি ভৃগু বলিতেছেন—
যা পূর্বং পতিং বিত্ত্বা অথান্যং বিন্দতে পরম্।
পঞ্চৌদনং চ তাবজং দদাতো ন বি ঘোষতঃ॥ ৯.৫.২৭
পূর্বে এক পতিকে বিবাহ করিয়া যদি নারী পরে আর-এক পতিকে বিবাহ করেন তবে অজ এবং পঞ্চোদন দান করিলে আর তাঁহাদের (এই নূতন বিবাহে) বিচ্ছেদ ঘটিবে না।
এই দানের ফলে তাঁহারা, অর্থাৎ সেই স্ত্রী এবং পুনর্ভূ-পতি, মৃত্যুর পর সমান লোকবাস লাভ করিবেন (ঐ ৯. ৫. ২৮)।
ময়োভূ ঋষি বলেন, কোনো নারীর যদি অব্রাহ্মণ দশ জন পতিও থাকেন, তবু যদি কোনো ব্রাহ্মণ তাহার পাণি গ্রহণ করেন তবে ব্রাহ্মণই সেই নারীর একমাত্র পতি হইবেন—
উত যৎ পতয়ো দশ স্ত্রিয়াঃ পূর্বে অব্রাহ্মণাঃ।
ব্রহ্মা চেদ হস্তমগ্রহীৎ স এব পতিরেকধা। অথর্ব ৫. ১৭, ৮
তখন ব্রাহ্মণই একমাত্র পতি হইবেন, ক্ষত্রিয় নহে, বৈশ্যও নহে।
ব্রাহ্মণ এব পতির্ন রাজন্যো বৈশ্যঃ। ঐ ৫, ১৭, ৯
কেবল যে বিধবারই পত্যন্তর গ্রহণ করিতে হয় তাহা তো নয়। পতি জীবিত থাকিলেও যদি কোনো কারণে পত্নী বিধবারই সমান হইয়া পড়েন তবে পত্যন্তর-গ্রহণ-ব্যবস্থার প্রয়োজন হয়। সেইরূপ ব্যবস্থা পুরাতন ধর্মশাস্ত্রাদিতে বারবারই দেখা যায়।
এই কারণেই নল যখন দময়ন্তীকে ছাড়িয়া চলিয়া গেলেন তখন দীর্ঘকাল নলের কোনো সন্ধান না পাইয়া দময়ন্তী নলকেই পাইবার উদ্দেশ্যে যে দ্বিতীয়বার স্বয়ম্বরের আয়োজন করিলেন সে কথা মহাভারতেই বলা হইয়াছে। এই বার্তাই সুদেব-ব্রাহ্মণমুখে দময়ন্তী প্রচার করিলেন, বীর নল আছে কি নাই বুঝা যাইতেছে না, তাই কাল দময়ন্তী দ্বিতীয় পতি বরণ করিবেন (মহাভারত, বন,